ভারতের ব্যাহত দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন শিশুদের বর্তমান অবস্থা উল্লেখ করাে। 

ব্যাহত দৃষ্টিসম্পন্নদের শিক্ষার উদ্দেশ্যগুলি লেখাে।     Class 12 | Education (শিক্ষাবিজ্ঞান) | 4 Marks

উত্তর:-

ভারতের ব্যাহত দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন শিশুদের বর্তমান অবস্থা : আমাদের দেশে দৃষ্টিহীন ছেলেমেয়েদের শিক্ষার সূত্রপাত করেন সেবাধর্মে ব্রতী মিশনারিরা।তারা সর্বপ্রথম 1883 খ্রিস্টাব্দে অমৃতসর শহরে দৃষ্টিহীনদের জন্য একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন। 

[1] দেরাদুনের ব্লাইন্ড স্কুল : 1897 খ্রিস্টাব্দে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিকে দেরাদুনের রায়পুরে স্থানান্তরিত করা হয়। বর্তমানে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি আমাদের দেশের দৃষ্টিহীন ছেলেমেয়েদের জন্য প্রতিষ্ঠিত সবচেয়ে বড়াে বিদ্যালয়। বর্তমানে এটি কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন। এই বিদ্যালয়টি হাড়াও দক্ষিণ ভারতে একই সময়ে আরও দু-একটি ব্লাইন্ড স্কুল গড়ে ওঠে। 

[2] পশ্চিমবঙ্গের ব্লাইন্ড স্কল: পশ্চিমবঙ্গে কলকাতার বেহালায় 1899 খ্রিস্টাব্দে ব্লাইন্ড স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়। 

[3] দাদার-এর ব্লাইন্ড স্কুল : অ্যানা মিলার্ডের প্রচেষ্টায় 1907 খ্রিস্টাব্দে আদর-এর ব্লাইন্ড স্কুলটি স্থাপিত হয়। পরবর্তী কালে এগুলিতে সরকারি সাহায্যের ব্যবস্থা করা হয়।

[4] স্বাধীনতার আগের ব্লাইন্ডস্কুলের সংখ্যা : 1883 খ্রিস্টাব্দ থেকে শুরু করে 1947 খ্রিস্টাব্দে স্বাধীনতার আগে পর্যন্ত ভারতে 34টি ব্লাইন্ড স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়। 

[5] স্বাধীনতার পরে প্রতিষ্ঠিত ব্লাইন্ডস্কুল: স্বাধীনতার ঠিক পরে 1960 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে আরও 26টি ব্লাইন্ড স্কুল গড়ে তােলা হয়। সব মিলিয়ে 1960 খ্রিস্টাব্দে ভারতে ব্লাইন্ড স্কুলের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় 60-এ। 2004 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ভারতে ব্লাইন্ড স্কুল এবং ওই ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা দাঁড়ায় 135 থেকে 140-এর মধ্যে। 

[6] ভারতে দৃষ্টিহীনদের পড়াশুনার সুযােগ : ভারতে দৃষ্টিহীন মানুষের সংখ্যা চল্লিশ লক্ষের বেশি। এদের মধ্যে বিদ্যালয়ে যাওয়ার উপযােগী বয়সের ছেলেমেয়ে কমপক্ষে চার লক্ষ বর্তমানে দেশে যে কটি ব্লাইন্ড স্কুল আছে, তাতে মােট পাঁচ হাজার ছেলেমেয়ের পড়াশােনার সুযােগ রয়েছে। 

[7] ভারতে দৃষ্টিহীনদের জন্য পাঠক্রম: যে বিদ্যালয়গুলি রয়েছে তার বেশিরভাগের পাঠক্রম প্রাথমিক স্তরেই শেষ। তারপর কিছু বৃত্তিশিক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। রয়েছে সংগীতশিক্ষার ব্যবস্থাও | কিন্তু উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থা সব বিদ্যালয়ে নেই। 

[8] পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা : পশ্চিমবঙ্গে অবশ্য কিছু ব্যতিক্রম লক্ষ করা যায়। দৃষ্টিহীন বিদ্যালয়গুলির অধিকাংশই স্বেচ্ছাব্রতী প্রতিষ্ঠানের অন্তর্গত। রাজ্য সরকার এক্ষেত্রে কিছু আর্থিক সাহায্য দিয়ে থাকে। তবে, এই সাহায্য পরিচালন ব্যয়ের এক-তৃতীয়াংশ | এখানে শিক্ষক- শিক্ষণের ব্যবস্থাও ঠিকমতাে নেই। বছরে মাত্র 50 জন শিক্ষক প্রশিক্ষণ নিতে পারেন। আমাদের রাজ্যে নরেন্দ্রপুরে শিক্ষক-শিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে নরেন্দ্রপুরে ব্রেইল প্রেসও রয়েছে। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে মফস্সল শহরেও দৃষ্টিহীনদের জন্য কয়েকটি বিদ্যালয় গড়ে তােলা হয়েছে এবং সেখানে ব্রেইলের কাজও হচ্ছে।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment