দশম শ্রেনী (মাধ্যমিক) Class 10 Geography ভারতের পশ্চিমাঞ্চলে কার্পাস বয়ন শিল্পের কেন্দ্রীভবনের কারণগুলি কী

ভারতের পশ্চিমাঞ্চলে কার্পাস বয়ন শিল্পের কেন্দ্রীভবনের কারণগুলি কী

ভারতের পশ্চিমাঞ্চলে কার্পাস বয়ন শিল্পের কেন্দ্রীভবনের কারণগুলি কী?
অথবা, মুম্বাই ও আমেদাবাদ অঞ্চলে কার্পাস বয়ন শিল্পের একদেশীভবনের কারণগুলি ব্যাখ্যা করাে।
অথবা, পশ্চিম ভারতের কৃষ্ণ মৃত্তিকা অঞ্চলে কার্পাস বয়ন শিল্পের একদেশীভবনের কারণ কী?
অথবা, পশ্চিম ভারতে কাপাস বয়ন শিল্প গড়ে ওঠার অনুকূল পরিবেশ আলােচনা করাে। Class 10 | Geography (ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ) | 5 Marks

উত্তর:-

ভারতের পশ্চিমাঞ্চলে বা পশ্চিম ভারতের কৃষ্ণ মৃত্তিকা অঞ্চলে কার্পাস বয়ন শিল্পের কেন্দ্রীভবনের কারণ

ভারতের পশ্চিমাঞ্চলে বা পশ্চিম ভারতের কৃষ্ণ মৃত্তিকা অঞ্চলে, বিশেষত মহারাষ্ট্রের মুম্বাই, পুণে, নাগপুর, সােলাপুর, আকোলা ও জলগাঁও এবং গুজরাতের আমেদাবাদ, সুরাত, ভারুচ, ভাদোদরা, রাজকোট প্রভৃতি স্থানে অসংখ্য কার্পাস বয়ন শিল্পকেন্দ্র গড়ে উঠেছে। দেশের পশ্চিমাঞ্চলে এই কার্পাস বয়ন শিল্পের কেন্দ্রীভবনের কারণগুলি হল—

1. শ্রেষ্ঠ তুলাে উৎপাদক অঞ্চল: মহারাষ্ট্র গুজরাতের (ঔরঙ্গাবাদ, জলগাঁও, বুলধানা) কৃষ্ণ মৃত্তিকা অঞ্চল হল দেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ তুলাে উৎপাদক অঞ্চল। ফলে এখানে এই শিল্পের প্রয়ােজনীয় কাঁচা তুলাে সুলভে পাওয়া যায়। 

2. আর্দ্র জলবায়ু: আরব সাগরসংলগ্ন মহারাষ্ট্র ও গুজরাতের জলবায়ু আদ্র, যা সুতাে কাটার পক্ষে বিশেষ উপযােগী।

3. সুলভ বিদ্যুৎশক্তি: উকাই ও কাদানা (গুজরাত); ভিবপুরী, খােপােলি ও কয়না (মহারাষ্ট্র) জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং ট্রম্বে, নাসিক (মহারাষ্ট্র) তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে সুলভে বিদ্যুৎশক্তি এই শিল্প স্থাপনে সহায়ক হয়েছে।

4. বন্দরের সান্নিধ্য: ভারতের তিনটি প্রধান বন্দর—মুম্বাই, কান্ডালা, জওহরলাল নেহরু বন্দর এবং অন্যান্য অপ্রধান বন্দর-সুরাত, পােরবন্দর প্রভৃতি এই অঞ্চলে অবস্থিত। এর ফলে এই শিল্পের প্রয়ােজনীয় যন্ত্রপাতি ও উন্নতমানের তুলাে আমদানি এবং কার্পাস বস্ত্র রপ্তানির ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা হয়। 

5. উন্নত পরিবহণ ব্যবস্থা: পশ্চিম, মধ্য ও কোঙ্কণ রেলপথ এবং 47, 48, 64, 160 নং জাতীয় রাজপথ এই অঞ্চলের ওপর দিয়ে প্রসারিত হওয়ায় এখানকার পরিবহণ ব্যবস্থাও উন্নত। 

অন্যান্য কারণ

1. পর্যাপ্ত মূলধন বিনিয়ােগ : বৃহৎ শিল্প পরিচালনায় অভিজ্ঞ পারসি, ভাটিয়া ও গুজরাতি ব্যবসায়ীরা এই অঞ্চলে কার্পাস বয়ন শিল্পের উন্নতিতে বিশেষ উদ্যোগী হয় এবং এজন্য পর্যাপ্ত মূলধনও বিনিয়ােগ করে। এ ছাড়া, মুম্বাই ভারতের মূলধনের রাজধানী হওয়ায় শিল্পের মূলধন পেতে অসুবিধা হয় না। 

2. সুলভ শ্রমিক: মুম্বাই ও আমেদাবাদ অঞ্চল ঘন জনবসতিপূর্ণ হওয়ায় এই অঞ্চলে শিল্পের জন্য প্রয়ােজনীয় সুলভ শ্রমিক সহজেই পাওয়া যায়।

3. শিল্প বিকাশের উপযুক্ত পরিকাঠামাে : মহারাষ্ট্র ও গুজরাত রাজ্যের শিল্প বিকাশের প্রয়ােজনীয় পরিকাঠামাে এই অঞ্চলে কার্পাস শিল্পের উন্নতির সহায়ক হয়েছে। 

4. বিপুল চাহিদা: মুম্বাই ভারতের প্রবেশদ্বার। তাই পশ্চিমের দেশগুলির নিত্যনতুন ‘ফ্যাশন’-এর ঢেউ এসে এখানেই প্রথম পৌঁছায় এবং তারই প্রভাব পড়ে এই অঞ্চলে উৎপাদিত বস্ত্র সামগ্রীর ওপর। এজন্য অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক উভয় ক্ষেত্রেই পশ্চিমাঞ্চলে উৎপাদিত বস্ত্রের বিপুল চাহিদা লক্ষ করা যায়।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment