দশম শ্রেনী (মাধ্যমিক) Class 10 Geography ভারতের জলবায়ুতে মৌসুমি বায়ুর প্রভাব আলােচনা করাে।

ভারতের জলবায়ুতে মৌসুমি বায়ুর প্রভাব আলােচনা করাে।

ভারতের জলবায়ুতে মৌসুমি বায়ুর প্রভাব আলােচনা করাে।  Class 10 | Geography | 5 Marks

উত্তর:-

ভারতের জলবায়ুতে মৌসুমি বায়ুর প্রভাব : মৌসুমি শব্দটির অর্থ ‘ঋতু’। তাই ঋতু অনুসারে প্রবাহিত বায়ুকে বলে মৌসুমি বায়ু। ভারতের জলবায়ু প্রায় সম্পূর্ণরূপেই মৌসুমি বায়ুর প্রভাবাধীন। ভারতে আর্দ্র দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু প্রবাহিত হয় বর্ষাকালে এবং শুষ্ক ও শীতল উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ু প্রবাহিত হয় শীতকালে।

1. দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাব : (i) গ্রীষ্মকালে ভারত মহাসাগরের উচ্চচাপ এলাকা থেকে এই জলীয় বাষ্পপূর্ণ আর্দ্র বায়ু উত্তর-পশ্চিম ভারতের উত্তপ্ত স্থলভাগ বা নিম্নচাপ এলাকার দিকে ছুটে যায়। (ii) তাই এই বায়ুর প্রভাবে ভারতে বর্ষাকালের আবির্ভাব হয়। (ii) ভারতে বার্ষিক বৃষ্টিপাতের শতকরা প্রায় 67-75 ভাগ মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে হয়ে থাকে। বর্ষাকালে এই বায়ুর প্রভাবে অসম, অরুণাচল প্রদেশ সহ সমগ্র উত্তর-পূর্ব ভারতের পার্বত্য অঞ্চল, পূর্ব হিমালয়ের পাদদেশ অঞ্চল, পশ্চিমঘাট পর্বতের পশ্চিমটাল তথা পশ্চিম উপকূল এবং আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে প্রবল বৃষ্টিপাত হয়। 

2. উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ুর প্রভাব : (i) শীতকালে মধ্য এশিয়ার শীতল স্থলভাগ বা উচ্চচাপ অঞ্চল থেকে এই বায়ুপ্রবাহ দক্ষিণের। উষ্ণ ভারত মহাসাগরের নিম্নচাপ এলাকার দিকে প্রবাহিত হয়। (ii) বরফাবৃত স্থলভাগের ওপর থেকে ছুটে আসে বলে উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ু শীতল ও শুষ্ক হয়। (iii) এই বায়ুর প্রভাবে সারা দেশেই তাপমাত্রা যথেষ্ট কমে যায়। জম্মু ও কাশ্মীর, হিমাচল প্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ প্রভৃতি রাজ্যের পার্বত্য এলাকায় তাপমাত্রা হয় –10° থেকে –40 °সে। (iv) খুব শীতল বলে এই বায়ুর জলীয় বাষ্প ধারণ ক্ষমতা প্রায় থাকে না বললেই চলে। এর ফলে তাপমাত্রা যথেষ্ট হ্রাস পেলেও বৃষ্টিপাত হয় না। (v) তবে ওই শুষ্ক বায়ু বঙ্গোপসাগরের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সময় কিছু পরিমাণে জলীয় বাষ্প গ্রহণ করে। ফলে ওই বায়ু যখন করমণ্ডল উপকুলে পৌঁছােয় তখন সেখানে সামান্য বৃষ্টিপাত হয়। 

3. দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর আগমন-প্রত্যাগমনে অনিয়ম : যদি নির্দিষ্ট সময়ের আগে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর আগমন ঘটে এবং তার প্রত্যাগমনেও বিলম্ব হয়, তাহলে বর্ষাকাল দীর্ঘায়িত হয়ে বন্যার সৃষ্টি করে। কিন্তু কোনাে বছর দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর আগমনে বিলম্ব ঘটে, আবার কোনাে বছর তা দ্রুত ফিরে যায়। উভয় ক্ষেত্রেই বৃষ্টিপাত কম হওয়ার কারণে মাটি শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যে-কোনাে ধরনের ফসল উৎপাদনে অক্ষম হয়ে পড়ে, যা খরার সৃষ্টি করে।

চিত্র : ভারতে গ্রীষ্মকালীন ও শীতকালীন মৌসুমি বায়ুপ্রবাহ 

4. মৌসুমি বায়ু অনুসারে ঋতু বিভাগ : দুটি মৌসুমি বায়ুর আগমন-প্রত্যাগমন অনুসারেই ভারতের জলবায়ুকে চারটি ঋতুতে ভাগ করা হয়— (i) দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর আগমন-পূর্ব সময়কাল গ্রীষ্মকাল, (i) দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর আগমনকাল বা বর্ষাকাল, (iii) দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রত্যাগমনকাল বা শরকাল এবং (iv) উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ুর আগমনকাল বা শীতকাল।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

2 thoughts on “ভারতের জলবায়ুতে মৌসুমি বায়ুর প্রভাব আলােচনা করাে।”

Leave a Comment

error: Content is protected !!