বঙ্গভঙ্গ-বিরােধী আন্দোলন পর্বে শ্রমিক আন্দোলন সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখাে। 4 Marks/Class 10
উত্তর:-
ভূমিকা : বঙ্গভঙ্গ-বিরােধী বা স্বদেশি আন্দোলন (১৯০৫-১৯১১ খ্রি.) ছিল ভারতে পেশাদারি শ্রমিক আন্দোলনের সময়পর্ব।
নেতৃবৃন্দ : বিশ শতকের গােড়া থেকেই লালা লাজপত রায়, বিপিনচন্দ্র পাল প্রমুখ জাতীয়তাবাদী নেতা শ্রমিকদের সমর্থনে এগিয়ে আসেন। স্বদেশি যুগে শ্রমিক সংগঠন গড়ে তােলার জন্য—কুসুম রায় চৌধুরী, অপূর্ব কুমার ঘােষ, অশ্বিনী কুমার ব্যানার্জি, প্রেমতােষ বসু আত্মনিয়ােগ করেন।
শ্রমিক আন্দোলন : স্বদেশি আন্দোলনকে উপলক্ষ করে জাতীয়তাবাদী নেতাদের নেতৃত্বে সংগঠিত শ্রমিক আন্দোলন ও ধর্মঘট শুরু হয় এবং জাতীয়তাবাদী নেতারা শ্রমিকদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক দাবির প্রতি সমর্থন জানায়।
১) বাংলা : বঙ্গভঙ্গের দিন (১৬ অক্টোবর, ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দ) হাওড়ার বার্ন কোম্পানির ১২ হাজার শ্রমিক বঙ্গভঙ্গের প্রতিবাদে ধর্মঘট শুরু করে। এ ছাড়া কলকাতায় প্রিন্টার্স অ্যান্ড কম্পােপ্রিন্টার্স লিগ গঠিত হয়, ইস্ট ইন্ডিয়া রেলপথের কর্মীরা চিত্তরঞ্জন দাশের নেতৃত্বে আন্দোলনে শামিল হয়, বাংলায় পাটকলগুলিতেও ধর্মঘট চলে।
২) তামিলনাড়ু : তামিলনাড়ুর তুতিকোরিনে বাড়তি মজুরির দাবিতে চিদাম্বরম পিল্লাই-এর নেতৃত্বে ধর্মঘট চলাকালীন চিদাম্বরম পিল্লাই গ্রেপ্তার হলে শ্রমিকরা দাঙ্গা বাধায়।
৩) বােম্বাই : বােম্বাইয়ে কংগ্রেস নেতা বালগঙ্গাধর তিলকের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বস্ত্রকলগুলিতে ধর্মঘট শুরু হয়, পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের খণ্ডযুদ্ধ হয়। ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দে বােম্বাই-এ ৮ হাজার শ্রমিক ধর্মঘটে শামিল হয়।
৪) অন্যান্য স্থানে : কানপুর, আমেদাবাদ, জামালপুরে রেলওয়ে ওয়ার্কশপে ধর্মঘটের দ্বারা শ্রমিকরা আন্দোলনকে সমর্থন জানায়।
উপসংহার : ঐতিহাসিক বিপান চন্দ্রের মতে, শ্রমিক আন্দোলনের ইতিহাসে স্বদেশি আন্দোলন ছিল একটি দিকচিহ্ন।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।