প্রিয় ছাত্রছাত্রীরা এই আর্টিকেলে আমরা Class 7 এর বঙ্গভূমির প্রতি কবিতার প্রশ্ন উত্তর নিয়ে এসেছি। তোমাদের সপ্তম শ্রেনীর পাঠ্যবইতে মাইকেল মধুসূদন দত্ত এর লেখা বঙ্গভূমির প্রতি কবিতা রয়েছে। কবিতার শেষে যে সব প্রশ্নপত্র গুলি রয়েছে তার সমাধান আমরা এখানে করে দিলাম। আশা করি সবার ভালো লাগবে।
বঙ্গভূমির প্রতি
মাইকেল মধুসূদন দত্ত
১ . ঠিক উত্তরটি খুঁজে নিয়ে লেখো :
১.১ ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতায় যে শীর্ষ উল্লেখটি আছে, সেটি কবি বায়রন- এর রচনা । তাঁর রচিত একটি বিখ্যাত গ্রন্থ হলো ___________ l
উত্তর :- ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতায় যে শীর্ষ উল্লেখটি আছে, সেটি কবি বায়রন -এর রচনা। তাঁর রচিত একটি বিখ্যাত গ্রন্থ হলো Don Juan
১.২ লালবর্ণের পদ্ম ‘কোকনদ’। সেরকম নীল রঙের পদ্মকে ___________ ও সাদা রঙের পদ্মকে ___________ বলা হয়।
উত্তর :- লালবর্ণের পদ্ম ‘কোকনদ’। সেরকম নীল রঙের পদ্মকে ইন্দিবর ও সাদা রঙের পদ্মকে পুণ্ডরীক বলা হয়।
২. সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও :
২.১ ‘এ মিনতি করি পদে’– কবি কার কাছে কী প্রার্থনা জানিয়েছেন?
উত্তর :- মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘বঙ্গভূমির প্রতি কবিতায় কবি জন্মভূমিকে ‘মা’ বলে সম্বোধন করে তাঁর কাছে প্রার্থনা জানিয়েছেন, তিনি যেন দাস হিসেবে কবিকে সবসময় মনে রাখেন। জীবনে যদি কবির কখনও ভুলভ্রান্তি হয় তবুও দেশমাতৃকার “মনঃকোকনদ’ যেন মধু শূন্য না হয়ে যায়। অর্থাৎ বঙ্গজননীর হৃদয় থেকে কবি মধুসূদন দত্ত যেন মুছে না যান, সেই প্রার্থনাই কবি বঙ্গজননীকে জানিয়েছেন।
২.২ ‘সেই ধন্য নরকুলে’– কোন মানুষ নরকুলে ধন্য হন?
উত্তর :- মাইকেল মধুসুদন দত্ত রচিত ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতায় কবির মতে যে মানুষকে লোকে কখনও ভুলে যায় না, মনের মন্দিরে শ্রদ্ধার আসনে বসিয়ে রাখে – নরকুলে সেই মানুষ ধন্য ।
৩. গদ্যরূপ লেখো :
পরমাদ, যাচিব, কহ, যথা, জন্মিলে, দেহ, হেন, সাধিতে
উত্তর :-
পরমাদ – প্রমাদ,
যাচিব – চাইব,
কহ – বলো,
যথা – যেমন,
জন্মিলে – জন্মগ্রহণ করলে,
দেহ – দাও,
হেন – এরকম,
সাধিতে – সাধন করতে।
শব্দার্থ : মিনতি— অনুনয়, বিনীত অনুরোধ, আবেদন। পরমাদ –‘প্রমাদ’-এর পরিবর্তিত (কোমল রূপ। ভুল—বিস্মৃতি, অনবধানতা। কোকনদ—লাল পদ্ম। প্রবাস— বিদেশ। দৈব –অদৃষ্ট, ভাগ্য । নীর —জল। শমন— মৃত্যুর দেবতা যম। মক্ষিকা—মাছি। অমৃত—যা পান করলে মৃত্যু হয় না, সুধা। অমৃত হ্রদ— সুধায় পূর্ণ হ্রদ। জন্মদে—‘জন্মদা’-র সম্বোধন রূপ, জন্ম দেয় যে,জননী। সুবরদে—‘সুবরদা’-র সম্বোধন রূপ, সু (শুভ) বর দেন যিনি, বরদাত্রী। মধুময়—মধুতে ভরা, মধুমাখা । তামরস— পদ্ম।
৪. শূন্যস্থানে উপযুক্ত বিশেষণ বসাও :
__________ মন্দির, __________ হ্রদ, __________ তামরস।
উত্তর :- মনের মন্দির, অমৃত হ্রদ, মধুময় তামরস।
৫. স্থূলাক্ষর অংশগুলির কারক বিভক্তি নির্ণয় করো :
৫.১ রেখো, মা, দাসেরে মনে।
উত্তর :- সম্বোধন পদ, শূন্য বিভক্তি l
৫.২ এ দেহ-আকাশ হতে।
উত্তর :- অপাদান কারক, ‘হতে’ অনুসর্গ l
৫.৩ মধুহীন কোরো না গো তব মনঃকোকনদে l
উত্তর :- কর্মকারকে ‘শূন্য’ বিভক্তি l
৫.৪ মনের মন্দিরে সদা সেবে সর্বজন।
উত্তর :- অধিকারন কারকে ‘এ’ বিভক্তি
৫.৫ মক্ষিকাও গলে না গো, পড়িলে অমৃত-হ্রদে !
উত্তর :- অধিকারন কারকে ‘এ’ বিভক্তি
মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৮২৪-১৮৭৩) : জন্ম অধুনা বাংলাদেশের যশোহরে, সাগরদাঁড়ি গ্রামে। পিতা প্রখ্যাত আইনজীবী রাজনারায়ণ দত্ত, মাতা জাহ্নবী দেবী। বাংলা কাব্যে নতুন যুগ আসে তাঁর কলমে, নাটকেও জাগে নতুন ধারা। হিন্দু কলেজের উজ্জ্বলতম এই ছাত্রটি বিলেতে গিয়ে বড়ো কবি হওয়ার স্বপ্ন সফল করতে ধর্মান্তরিত হন ১৮৪৩ সালে। তখন থেকে তাঁর নামের সঙ্গে যুক্ত হয় ‘মাইকেল’শব্দটি। ইংরেজি ভাষায় ‘The Captive Ladie’ এবং ‘Visions of the Past’ নামে দুটি গ্রন্থ রচনা করলেও তিনি স্মরণীয় ‘মেঘনাদবধ কাব্য’,‘বীরাঙ্গনা কাব্য’, ‘ব্রজাঙ্গনা কাব্য’, ‘তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য’, ‘চতুর্দশপদী কবিতা”-র রচয়িতা হিসেবে। ‘শর্মিষ্ঠা’, ‘পদ্মাবতী’, ‘কৃষ্ণকুমারী’ প্রভৃতি নাটক ও ‘একেই কি বলে সভ্যতা?’ আর ‘বুড়ো সালিকের ঘাড়ে রোঁ’ প্রহসনের স্রষ্টা তিনিই। বাংলা সাহিত্যে অমিত্রাক্ষর ছন্দের ব্যবহারও তাঁরই দান।
৬. পদ পরিবর্তন করে বাক্য রচনা করো :
মধু, প্রকাশ, দেহ, অমর, দোষ, বসন্ত, দৈব।
উত্তর :-
মধু (মধুময়) – মধুময় এই পৃথিবীতে আমরা কিছুদিনের অতিথি।
প্রবাস (প্রবাসী) – প্রবাসীদের জন্মভূমির প্রতি তীব্র টান অনুভূত হয়।
দেহ (দৈহিক) – দৈহিক শক্তি সকলের সমান হয় না।
অমর (অমরত্ব) – সব মানুষই অমরত্ব চায়।
দোষ (দুষ্ট) – অনিকের মতো শুভম ও একই দোষে দুষ্ট।
বসন্ত (বাসন্তী) – আমাদের বাড়ির পাশে বাসন্তী পুজো হয়।
দৈব (দেব) – দেবাসুরের মধ্যে দেবতারা শুভ শক্তির পরিচায়ক।
৭. বিপরীতার্থক শব্দ লেখো :
প্রবাস, অমর, স্থির, জীবন, অমৃত।
উত্তর :-
প্রবাস – স্বদেশ,
অমর – নশ্বর,
স্থির – চঞ্চল,
জীবন – মরণ,
অমৃত – গরল।
৮. ‘পরমাদ’ শব্দটি কোন মূল শব্দ থেকে এসেছে?
উত্তর :- ‘পরমাদ’ শব্দটি ‘প্রমাদ’ শব্দ থেকে এসেছে।
৯. কবির নিজেকে বঙ্গভূমির দাস বলার মধ্যে দিয়ে তাঁর কোন মনোভাবের পরিচয় মেলে?
উত্তর :- মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতায় দেখা যায় কবি বঙ্গভূমিকে ‘মা’ বলে সম্বোধন করেছেন এবং নিজেকে বঙ্গভূমির দাস বলেছেন। দাস বা ভৃত্য যেমন সর্বদা প্রভুর প্রতি অনুগত থাকে প্রভুর সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করে, কবিও তেমনি দেশমাতৃকার সেবা করার জন্য অত্যন্ত আগ্রহী এবং নিবেদিত প্রাণ। ‘বঙ্গভূমির দাস’ বলার মধ্য দিয়ে কবির এই মনোভাবের প্রকাশ ঘটেছে।
১০. ‘মধুহীন কোরো না গো’–‘মধু’ শব্দটি কোন দুটি অর্থে প্রযুক্ত হয়েছে?
উত্তর :- মাইকেল মধুসুদন দত্ত রচিত ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতা থেকে নেওয়া প্রশ্নোদ্ধৃত ‘মধু’ শব্দটি যে দুটি অর্থে প্রযুক্ত হয়েছে তা হল, –
১. কবি মধুসুদন দত্ত,
ও
২. পরের মধু।
১১. কবিতা থেকে পাঁচটি উপমা বা তুলনাবাচক শব্দ খুঁজে নিয়ে লেখো ।
উত্তর :- মনঃকোকনদ, জীব-তারা, জীবন-নদে, মনের-মন্দিরে, স্মৃতি-জলে।
১২. ‘মন্দির’ শব্দটির আদি ও প্রচলিত অর্থ দুটি লেখো।
উত্তর :- আদি অর্থ – গৃহ বা আবাস
প্রচলিত অর্থ – দেবগৃহ বা দেবালয়।
১৩. কবিতাটিতে কোন কোন ঋতুর উল্লেখ রয়েছে?
উত্তর :- কবিতাটিতে ‘বসন্ত’ ও ‘শরৎ’ ঋতুর উল্লেখ আছে।
১৪. ‘মানস’ শব্দটি কবিতায় কোন কোন অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে?
উত্তর :- ‘মানস’ শব্দটি কবিতায় মন এবং মানস-সরোবর এই দুটি অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।
আরো পড়ুন
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।