চিত্রসহ বায়ুমণ্ডল উত্তপ্ত হওয়ার পদ্ধতিগুলি আলােচনা করাে। ? Class 10 | Geography | 5 Marks
উত্তর:
1. বিকিরণ পদ্ধতি: যে পদ্ধতিতে কোনাে মাধ্যম ছাড়াই বা মাধ্যম থাকলেও তাকে উত্তপ্ত না করে তাপ এক বস্তু থেকে অন্য বস্তুতে চলে যায়, সেই পদ্ধতিকে বিকিরণ পদ্ধতি বলে l সূর্যতাপে ভূপৃষ্ঠ। উষ্ণ হয় এবং ওই উয় ভূপৃষ্ঠ তাপ বিকিরণ করে। বায়ুমণ্ডলের একেবারে নীচের স্তর ওই বিকীর্ণ তাপ গ্রহণ করে উত্তপ্ত হয়।
2. পরিবহণ পদ্ধতি: যে পদ্ধতিতে কোনাে পদার্থের উম্নতর অংশ থেকে শীতলতর অংশে তাপ সঞলিত হয় কিন্তু পদার্থের অণুগুলি স্থান পরিবর্তন করে না, সেই পদ্ধতিকে পরিবহণ পদ্ধতি বলে। যেমন—সূর্যতাপে ভূপৃষ্ঠ উত্তপ্ত হয় এবং ওই উত্তপ্ত ভূপৃষ্ঠের সংস্পর্শে ভূপৃষ্ঠসংলগ্ন বায়ুস্তর উত্তপ্ত হয়। আবার ওই উত্তপ্ত বায়ুর উত্তাপ শীতল বায়ুতে সঞলিত হয় এবং এইভাবে বায়ুমণ্ডল উত্তপ্ত হয়।।
3. পরিচলন পদ্ধতি: ভূপৃষ্ঠসংলগ্ন বায়ু উত্তপ্ত হওয়ার ফলে প্রসারিত ও হালকা হয়ে ওপরে উঠে যায়। তখন চারদিক থেকে ঠান্ডা ভারী বাতাস ওই ফাঁকা স্থানে ছুটে আসে এবং ওই বাতাসও ক্রমে উত্তপ্ত হয়ে ওপরে উঠে যায়। এরকম উল্লম্বভাবে বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন স্তরে উত্তাপ ছড়িয়ে যায় এবং বায়ুমণ্ডল উত্তপ্ত হয়। বায়ুমণ্ডল উত্তপ্ত হওয়ার এই পদ্ধতির নাম পরিচলন পদ্ধতি।
4. অ্যাডভেকশন : এক জায়গার উত্তাপ বায়ুর মাধ্যমে যখন ভূপৃষ্ঠের সঙ্গে অনুভূমিকভাবে অন্য জায়গায় চলে যায়, তার নাম অ্যাডভেকশন (অর্থাৎ এটি পরিচলন পদ্ধতির ঠিক বিপরীত। পরিচলন পদ্ধতিতে উত্তাপ উল্লম্বভাবে যায় কিন্তু অ্যাডভেকশন পদ্ধতিতে অনুভূমিকভাবে যায়)। উদাহরণ—নিম্ন অক্ষাংশের বেশি উষ্ণতা বায়ুপ্রবাহের মাধ্যমে উচ্চ অক্ষাংশের বায়ুমণস্নত স্থানান্তরিত হয়।
5. সূর্যরশ্মির প্রত্যক্ষ শােষণ : সূর্যরশ্মি যখন বায়ুমণ্ডলের মধ্য দিয়ে আসে তখন তার কিছু অংশ বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন উপাদান, যেমন—কার্বন ডাইঅক্সাইড, জলীয় বাষ্প, ধূলিকণা প্রভৃতি সরাসরি শােষণ করে বায়ুমণ্ডলকে সামান্য উত্তপ্ত করে।
অন্যান্য পদ্ধতি
1. লীনতাপ সংযােজন : জল বাষ্পীভূত হওয়ার সময় যে তাপ। গ্রহণ করে, সেই গৃহীত তাপকে বলে লীনতাপ। জলীয় বাষ্প ঘনীভবনের সময় যখন ওই লীনতাপ ত্যাগ করে, তাতে চারপাশের বায়ুমণ্ডল উষ্ণ হয়।
2. বায়ুর সংকোচন: বায়ুমণ্ডলের ওপরের দিক থেকে যখনঠান্ডা ও ভারী বায় নীচের দিকে নামে তখন ক্রমশ তার চাপ বাড়ে। যতই চাপ বাড়ে ততই সেই বায়ুর আয়তন হ্রাস পায়। অর্থাৎ সংকোচন ঘটে, ফলে বায়ু ধীরে ধীরে উত্তপ্ত হয়। বায়ু উত্তপ্ত হওয়ার এই পদ্ধতিকে বলে অ্যাডিয়াবেটিক উষ্ণকরণ (adiabatic heating)। [ আর যখন ঠিক এর উলটো হয় অর্থাৎ উঃ বায়ু হালকা বলে ওপরে ওঠে এবং ওপরে চাপ কম বলে ওই বায়ু প্রসারিত হয়ে শীতল বায়ুতে পরিণত হয়, তাকে অ্যাডিয়াবেটিক শীতলীকরণ (adiabatic cooling) বলে।]।
3. ভূত্বক থেকে ইউরেনিয়াম, থােরিয়াম প্রভৃতি পদার্থেরতেজস্ক্রিয়তা নিঃসরণ ।
4. আগ্নেয়গিরি, প্রস্রবণ প্রভৃতির মাধ্যমে নির্গত ভূগর্ভের তাপ,
5. শিলার রাসায়নিক আবহবিকার,
6. প্রাণীদেহ থেকে নির্গত তাপ প্রভৃতিও বায়ুমণ্ডলে মিশে উয়তা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।