ছোটগল্প হিসেবে ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ রচনাটি কতখানি সার্থক, তা পর্যালােচনা করাে।
উত্তর:- ছােটোগল্পের প্রধান বৈশিষ্ট্য হল স্বল্প পরিসরে জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশকে প্রকাশ করা। ঘটনার ঘনঘটা, ‘অতিকথন’, তত্ত্ব, উপদেশ বা বহু চরিত্রের সমাবেশের কোনাে সুযােগ ছােটোগল্পে নেই।
প্রতিদিনের কাজকর্ম এবং কলকাতা শহরের ভিড়ভাট্টায় হাঁপিয়ে উঠে ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পের গল্পকথক দুই বন্ধুসহ বেড়াতে যাবেন তার অন্যতম বন্ধু মণির পূর্বপুরুষদের বাসভূমি তেলেনাপােতায়। সেখানে গিয়ে জীর্ণ প্রাসাদে জ্যোৎস্না রাতে নারীমুর্তি দর্শন, মাছ ধরতে গিয়ে বড়শিতে টান দিতে দেরি করা, যামিনীকে আবিষ্কার এবং যামিনীর মায়ের আশার মধ্য দিয়ে।জীবনের এক অন্যরকম উপস্থাপনা গল্পে পাওয়া যায়। আর তার প্রেক্ষাপটে থেকে যায়রহস্যময়তার এক অসামান্য বিন্যাস।
উত্তম পুরুষের আশ্রয়ে এবং ভবিষ্যৎকালের ক্রিয়াপদ ব্যবহারের সাহায্যে কথক এই গল্পে অত্যন্ত সুকৌশলে পাঠককেই নায়কের মর্যাদা দিয়ে দেন। তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ গল্পে এইভাবে লেখক শহুরে, রােমান্টিক মধ্যবিত্ত শ্রেণির চরিত্রবৈশিষ্ট্য প্রকাশ করে এই ব্যঞ্জনার প্রকাশ ঘটিয়েছেন যে, পরার্থপরতা এবং রােমান্টিকতাকে মধ্যবিত্ত শ্রেণি সাময়িকভাবে। গ্রহণ করলেও তার চরিত্রে স্বার্থমগ্নতা এবং বাস্তববাদিতাই শেষপর্যন্ত প্রাধান্য পায়। এই ভাবে ক্ষুদ্রের মধ্যে বৃহতের খন্ডের মধ্যে সমগ্রের ইঙ্গিত দিতে দিতে গল্পটি একমুখী লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে গেছে। সুতরাং নিঃসন্দেহে ‘তেলেনাপােতা আবিষ্কার’ একটি শিল্পসার্থক ছােটোগল্প।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।