প্রিয় ছাত্রছাত্রীরা এই আর্টিকেলে আমরা Class 5 এর মায়াতরু কবিতার প্রশ্ন উত্তর নিয়ে এসেছি। তোমাদের পঞ্চম শ্রেনীর পাঠ্যবইতে অশোকবিজয় রাহার লেখা মায়াতরু কবিতা রয়েছে। কবিতার শেষের হাতে কলমে প্রশ্নগুলির সমাধান আমরা এখানে করে দিলাম। আশা করি সবার ভালো লাগবে।
মায়াতরু
অশোকবিজয় রাহা
মধু আনতে বাঘের মুখে প্রশ্ন উত্তর | শিবশঙ্কর মিত্র | Modhu Ante Bagher Mukhe Question Answer
১. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :
১.১ তোমার চেনা এমন দুটি গাছের নাম লেখো অন্ধকারে যাদের দেখলে মনে হয় যেন মানুষের মতো হাত নেড়ে ডাকছে।
উত্তর : আমার চেনা এমন দুটি গাছ হল কলা গাছ ও ডুমুর গাছ যাদের দেখলে মনে হয় যেন মানুষের মতো হাত পা নেড়ে ডাকছে।
১.২ দুই বন্ধু আর ভাল্লুককে নিয়ে যে গল্পটি আছে তা তোমরা শুনেছ? যদি না শুনে থাকো, তাহলে শিক্ষকের থেকে জেনে নিয়ে গল্পটি নিজের খাতায় লেখো।
উত্তর :
দুই বন্ধু ও ভালুক
একদিন দুই বন্ধু পথের উপর দিয়ে গল্প করতে করতে এগিয়ে চলেছে। হঠাৎ তাদের সামনে এসে হাজির হল এক ভালুক। ভালুককে এগিয়ে আসতে দেখে এক বন্ধু বেশ ভয় পেয়ে গেল। সে ভয় পেয়ে তাড়াতাড়ি কাছাকাছি একটা বড় গাছের ওপর উঠে পড়ল। অপর বন্ধু গাছে চড়তে জানত না। তাই সে গাছে ওঠার চেষ্টা না করে তাড়াতাড়ি বুদ্ধি খাটিয়ে মাটির ওপরে মড়ার মত দম বন্ধ করে শুয়ে পড়ল। কারণ সে জানত, ভালুক মরা মানুষ ছোঁয় না। ভালুক তার কাছে এসে তার নাক, কান, মুখ, চোখ আর বুক পরীক্ষা করে ভাবল, লোকটা মরে গেছে। তাই সে রাগে গজ গজ করতে করতে পাশের বনে ঢুকে গেল ভালুক বনের ভেতরে ঢুকে গেছে দেখে অন্য বন্ধুটি তখন গাছ থেকে নেমে এসে বন্ধুকে জিজ্ঞাসা করল, বন্ধু, ভালুক তোমার কানে কানে কী বলে গেল? যে বন্ধুটি মাটিতে দম বন্ধ হয়ে শুয়েছিল সে তাড়াতাড়ি উঠে দাঁড়িয়ে হাঁফ ছেড়ে বাঁচল। এদিকে ওদিক একবার ভাল করে দেখে নিয়ে গম্ভীর হয়ে বলল, ভালুক আমায় বলে গেল, যে বন্ধু বিপদের সময় বন্ধুকে বিপদে ফেলে রেখে পালায় তার সঙ্গে কখনও বন্ধুত্ব করতে নেই।
১.৩ নানারকম রঙিন মাছ তুমি কোথায় দেখেছ?
উত্তর : আমি অ্যাকোয়ারিয়ামে নানানরকম রঙিন মাছ দেখেছি।
১.৪ ভোরের আলো তোমার কেমন লাগে? তখন তোমার কোথায় যেতে ইচ্ছে করে?
উত্তর : ভোরের আলো আমার খুবই স্নিগ্ধ ও পবিত্র লাগে।
১.৫ আলোয় এবং অন্ধকারে একই গাছের দুরকম চেহারা তোমার চোখে কীভাবে ধরা পড়ে?
উত্তর : আলোয় একটি গাছকে ডালপালা বিশিষ্ট গাছ বলেই মনে হয়, কিন্তু সেই গাছকেই অন্ধকারে দেখলে প্রকান্ড হাত-পা বিশিষ্ট দৈত্যের মতো মনে হয়।
শব্দার্থ : পশলা – একবারের বৃষ্টি। কম্প – কাঁপুনি। ঝিকিমিকির — ঝিকিমিকি। ঝিলিক – তীব্র কিন্তু অল্পক্ষণ স্থায়ী আলোর ছটা, চমক। আবছায়া— আবছা/অস্পষ্ট ছায়ার মতো। ঝালর – যা ঝলমল করে ঝুলতে থাকে।
২. “ক’ স্তম্ভের সঙ্গে ‘খ’ স্তম্ভ মিলিয়ে লেখো :

উত্তর :
ক | খ |
গাছ | বৃক্ষ |
বন | অরণ্য |
ভূত | অশরীরী |
ঝালর | পর্দা |
কম্প | কাঁপুনি |
৩. কবিতা অবলম্বনে শূন্যস্থান পূরণ করো :
৩.১ এক যে ছিল ——————- l
উত্তর : এক যে ছিল গাছ।
৩.২ বিষ্টি হলেই আসত ——————- কম্প দিয়ে ——————- l
উত্তর : বিষ্টি হলেই আসত আবার কম্প দিয়ে জ্বর।
৩.৩ ——————- হয়ে ঝাঁক বেঁধেছে লক্ষ ——————- মাছ।
উত্তর : মুকুট হয়ে ঝাঁক বেঁধেছে লক্ষ হীরার মাছ।
৩.8 ——————- পশলার ——————- l
উত্তর : এক পশলার শেষে।
৩.৫ বনের মাথায় ঝিলিক মেরে ——————- উঠত যখন
ভালুক হয়ে ঘাড় ——————- করত সে ——————- l
উত্তর : বনের মাথায় ঝিলিক মেরে চাঁদ উঠত যখন
ভালুক হয়ে ঘাড় ফুলিয়ে করত সে গরগর।
৪. কবিতাটি অবলম্বনে একটি গল্প তৈরি করো :

উত্তর :
অনিকদের বাড়ির পিছনে একটি গাছ ছিল সন্ধ্যে হলেই অন্ধকারে তাকে যেন ভূতের মতো মনে হত। আবার কখনও বনের মাথায় চাঁদ উঠলে চাঁদের আলোয় গাছটিকে দেখে মনে হত যেন একটি ভালুক ঘাড় ফুলিয়ে রাগে গরগর করছে। যখন বৃষ্টি শেষ হয়ে যেত তখন গাছের পাতায় থাকা বৃষ্টির ফোঁটায় চাঁদের আলো পড়ে অপূর্ব রূপ সৃষ্টি করত।যা দেখে মনে হত মুকুটের মতো ঝাঁক বাঁধা লক্ষ হীরার মাছ। ভোরবেলায় গাছ আরও কত কী যে রূপ ধারণ করত তা সব বলা মুশকিল। আর যখন সকাল হত তখন মাছ উধাও হত শুধুমাত্র দেখা যেত ঝিকিমিকির আলোর রূপালি এক ঝালর।
৫. শব্দগুলির অর্থ লিখে তা দিয়ে বাক্য রচনা করো :
ঝাঁক, ঝিলিক, ঘাড়, মুকুট, ঝিকিমিকির।
উত্তর :
ঝাঁক (দল) এক ঝাঁক পায়রা উড়ে যাচ্ছে।
ঝিলিক (ক্ষণিকের তীব্র আলো) – বৃষ্টির মাঝে মাঝে দেখা যাচ্ছে বিদ্যুতের ঝিলিক ।
ঘাড় (কন্ঠের পশ্চাৎভাগ) – ঘাড়ের কাছে নিশ্বাস ফেলছে মৃত্যু।
মুকুট (শিরোভূষণ) – রাজার মাথায় রয়েছে বহুমূল্য মুকুট।
ঝিকিমিকির (ঝিকিমিকি) – দীপাবলিতে চারিদিকে আলোর ঝিকিমিকির দেখা যায়।
৬. কোনটি কী জাতীয় শব্দ শব্দঝুড়ি থেকে বেছে নিয়ে আলাদা করে লেখো :
গাছ, যে, বা, রূপালি, জুড়ত, তুলে, হয়ে, ঝিকিমিকির,লক্ষ, সে, কম্প, জ্বর।
উত্তর :
বিশেষ্য | বিশেষণ | সর্বনাম | অব্যয় | ক্রিয়া |
গাছ, জ্বর, কম্প। | রুপালি, ঝিকিরমিকির, লক্ষ। | যে, সে। | বা | জুরত, তুলে, হয়ে। |
৭. বিপরীতার্থক শব্দ লেখো:
সন্ধে, হঠাৎ, শেষে, হেসে, আলো।
উত্তর :
সন্ধে – সকাল,
হঠাৎ – সবসময়,
শেষে – শুরুতে,
হেসে – কেঁদে,
আলো – অন্ধকার।
৮. সমার্থক শব্দ লেখো:
গাছ, ভূত, বন, বিষ্টি, মাছ, চাঁদ।
উত্তর :
গাছ – বৃক্ষ, তরুন
ভূত – প্রেতাত্মা, অশরীরী।
বন – অরণ্য, কানন।
বিষ্টি – বৃষ্টি, বর্ষণ।
মাছ – মৎস্য, মীন।
৯. প্রতিটি বাক্য ভেঙে আলাদা দুটি বাক্যে লেখো :
৮.১ এক যে ছিল গাছ, সন্ধে হলেই দুহাত তুলে জুড়ত ভূতের নাচ।
উত্তর : একটি গাছ ছিল। গাছটি সন্ধে হলেই দুহাত তুলে ভূতের নাচ জুড়ত।
৮.২ বিষ্টি হলেই আসত আবার কম্প দিয়ে জ্বর।
উত্তর : বৃষ্টি হত। কম্প দিয়ে জ্বর আসত।
৮.৩ সকাল হল যেই, একটিও মাছ নেই।
উত্তর : সকাল হত। একটিও মাছ থাকত না।
৮.৪ মুকুট হয়ে ঝাঁক বেঁধেছে লক্ষ হীরার মাছ।
উত্তর : লক্ষ হীরার মাছ আছে। মাছগুলি মুকুট হয়ে ঝাঁক বেঁধেছে।
৮.৫ ভালুক হয়ে ঘাড় ফুলিয়ে করত সে গর্র্গর্।
উত্তর : সে ভালুক হয়ে যেত। ঘাড় ফুলিয়ে গরগর করত।
১০. এলোমেলো বর্ণগুলিকে সাজিয়ে শব্দ তৈরি করো :
র্ গ র্ গ, ট কু মু, ব আ য়া ছা, র কি মি ঝি র কি, র বে ভো লা।
উত্তর : গরগর, মুকুট, আবছায়া, ঝিকিমিকির, ভোরবেলা।
অশোকবিজয় রাহা (১৯১০-১৯৯০) : জন্ম বাংলাদেশের শ্রীহট্টে। কবি ও প্রাবন্ধিক। রচিত উল্লেখযোগ্য কাব্য গ্রন্থ ‘ভানুমতীর মাঠ’, ‘রুদ্রবসন্ত’, ‘ডিহংনদীর বাঁকে, ‘জলডুম্বুর পাহাড়”, ‘রক্তসন্ধ্যা”, “উড়ো চিঠির ঝাঁক। নদী, পাহাড়, অরণ্যপ্রকৃতি তাঁর কবিতার কেন্দ্রভূমি।
‘মায়াতরু” কবিতাটি তাঁর ‘ভানুমতীর মাঠ’ কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।
—————————————————————————-
১১.১ কবি অশোকবিজয় রাহার দুটি বইয়ের নাম লেখো।
উত্তর : কবি অশোকবিজয় রাহার দুটি বইয়ের নাম, ‘ভানুমতীর মাঠ’ ও ‘রুদ্রবসন্ত’।
১১.২ তাঁর কবিতা রচনার প্রধান বিষয়টি কী ছিল ?
উত্তর : অশোকবিজয় রাহার কবিতা রচনার প্রধান বিষয় ছিল নদী, পাহাড় ও অরণ্যপ্রকৃতি।
১১.৩ ‘মায়াতরু’ কবিতাটি তাঁর কোন কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে?
উত্তর : ‘মায়াতরু’ কবিতাটি অশোকবিজয় রাহার ‘ভানুমতীর মাঠ’ কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।
১২. দিনের কোন সময়ে কোন ঘটনাটি ঘটছে পাশে পাশে লেখো। খাতায় ছবি আঁকো :
১২.১ দুহাত তুলে জুড়ত ভূতের নাচ ————– l
উত্তর : দুহাত তুলে জুড়ত ভূতের নাচ সন্ধেবেলা।
১২.২ ভালুক হয়ে ঘাড় ফুলিয়ে করত যে গর্গর্ ———————- l
উত্তর : ভালুক হয়ে ঘাড় ফুলিয়ে করত যে গর্গর্ রাতের বেলা।
১২.৩ কেবল দেখি পড়ে আছে ঝিকিমিকির আলোর রূপালি এক ঝালর ———————- l
উত্তর : কেবল দেখি পড়ে আছে ঝিকিমিকির আলোর রূপালি এক ঝালর সকালবেলা।
১৩. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :
১৩.১ ‘মায়াতরু’ শব্দটির অর্থ কী? কবিতায় গাছকে ‘মায়াতরু’ বলা হয়েছে কেন ?
উত্তর : ‘মায়াতরু’ শব্দের অর্থ মায়াবী গাছ।
অশোকবিজয় রাহা রচিত ‘মায়াতরু’ কবিতায় গাছটিকে মায়াতরু বলা হয়েছে কারণ, গাছটি ছিল মায়াবী। সে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রূপ ধারণ করত। কখনও সে হাত পা তুলে ভূতের মতো নাচ জুড়ত। কখনও সে ভালুকের মতো ঘাড় ফুলিয়ে রাগে গরগর করত। কখনও লক্ষ হীরার মাছ হয়ে যেত। তাই তার অলৌকিক কার্যকলাপের জন্য তাকে ‘মায়াতরু’ বলা হত।
১৩.২ শব্দের শুরুতে ‘মায়া’ যোগ করে পাঁচটি নতুন শব্দ তৈরি করো। একটি করে দেওয়া হল: মায়াজাল
উত্তর : মায়াবী, মায়াময়, মায়াকান্না, মায়াবতী, মায়াডোর।
১৩.৩ ভূতের আর গাছের প্রসঙ্গ রয়েছে এমন কোন গল্প তুমি পড়েছ? পাঁচটি বাক্যে সেই গল্পটি লেখো।
উত্তর : নিজে করো।
১৩.৪ দিনের বিভিন্ন সময়ে কবি গাছকে কোন কোন রূপে দেখেছেন?
উত্তর : অশোকবিজয় রাহা রচিত ‘মায়াতরু’ কবিতায় দিনের এক এক সময় গাছকে এক এক রূপে দেখেছেন। সন্ধেবেলা তিনি গাছটিকে দেখেছেন ভূতের বেশে, রাতের বেলা আকাশে চাঁদ উঠলে তিনি গাছকে দেখেছেন ভালুক রূপে, আবার এক পশলা বৃষ্টির পরে চাঁদ উঠলে তিনি গাছকে দেখেছেন মুকুটধারী লক্ষ হীরার মাছ রূপে। রাতের শেষে ভোর হলে তিনি কেবল ঝিকিমিকির আলোর এক রূপোলি ঝালর পড়ে থাকতে দেখেছেন।
১৪. যে গাছটিকে দেখে তোমার মনেও অনেক কল্পনা ভিড় জমায়, তার একটি ছবি আঁকো, সেই গাছটি সম্পর্কে পাঁচটি বাক্য লেখো।
উত্তর : নিজে করো।
আরো পড়ুন
গল্পবুড়ো কবিতার প্রশ্ন উত্তর | সুনির্মল বসু | Golpo Buro Kobita Question Answer | Class 5 | Wbbse
বুনো হাঁস প্রশ্ন উত্তর | লীলা মজুমদার | Buno Has Class 5 Question Answer | Wbbse
দারোগাবাবু এবং হাবু কবিতার প্রশ্ন উত্তর | Daroga Babu Ebong Habu Question Answer | Class 5 | Wbbse
এতোয়া মুন্ডার কাহিনী প্রশ্ন উত্তর | Etoya Mundar Kahini Question Answer | Class 5 | Wbbse
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।