প্রিয় ছাত্রছাত্রীরা এই আর্টিকেলে আমরা Class 7 এর কাজী নজরুলের গান রামকুমার চট্টোপাধ্যায় প্রশ্ন উত্তর নিয়ে এসেছি। তোমাদের সপ্তম শ্রেনীর পাঠ্যবইতে রামকুমার চট্টোপাধ্যায়ের লেখা কাজী নজরুলের গান পাঠ্যাংশ রয়েছে। পাঠ্যাংশের শেষে যে সব প্রশ্নপত্র গুলি রয়েছে তার সমাধান আমরা এখানে করে দিলাম। আশা করি সবার ভালো লাগবে।
কাজী নজরুলের গান
রামকুমার চট্টোপাধ্যায়
১. কাজী নজরুল ইসলাম ব্যতীত কোন মনীষীর নাম পাঠ্যাংশে খুঁজে পেলে ?
উত্তর: রামকুমার চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘কাজী নজরুলের গান’ পাঠ্যাংশে কাজী নজরুল ইসলাম বাদে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর নাম পেলাম।
২. ‘এই ছিল তখনকার কোনো স্বদেশি মিটিং-এর রীতি।’ – কোন রীতির কথা এখানে বলা হয়েছে?
উত্তর: রামকুমার চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘কাজী নজরুলের গান’ পাঠ্যাংশে স্বদেশী মিটিংয়ের রীতি সম্পর্কে বলা হয়েছে, আগে গান হবে তারপর হবে বক্তৃতা। আলোচ্য গদ্যাংশেও আমরা দেখি কাজী নজরুলের গান দিয়ে মিটিংয়ের সূচনা হয়। তারপর বক্তৃতা দেন নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু।
৩. পাঠ্যাংশে কার, কেমন দেহসৌষ্ঠবের পরিচয় ধরা পড়েছে?
উত্তর: রামকুমার চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘কাজী নজরুলের গান’ পাঠ্যাংশে নেতাজীর দেহসৌষ্ঠবের পরিচয় ধরা পড়েছে।
নেতাজী ছিলেন গৌরবর্ণ, উন্নত ললাট, অতীব সুপুরুষ। ঠিক যেন দেবদূত।
৪. টীকা লেখো :
কাজী নজরুল ইসলাম, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, স্বদেশি যুগ।
উত্তর:
কাজী নজরুল ইসলাম : কাজী নজরুল ইসলাম ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দের ২৫ মে বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম ফকির আহমেদ ও মাতা জাহেদা খাতুন। খুব কম বয়সে পিতৃবিয়োগের ফলে দারিদ্র্যের সঙ্গে কঠোর সংগ্রাম করতে হয় তাঁকে। ছোটবেলায় থেকেই তিনি লিখতে খুব ভালবাসতেন তাঁর প্রথম প্রকাশিত কবিতা ‘মুক্তি’ এবং উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলি হল – ‘ছায়ানট’, ‘অগ্নিবীণা, বিষের বাঁশি’, ‘ফণীমনসা’, ‘সর্বহারা’ প্রভৃতি। তিনি ছিলেন খুব ভালো গীতিকার, সুরকার ও গায়ক। আমাদের কাছে তিনি ‘বিদ্রোহী কবি’ নামে পরিচিত। তাঁর বিদ্রোহ মানবতাবিদ্বেষ, অন্যায় ও অসাম্যের বিরুদ্ধে। নজরুল ছিলেন মানবপ্রেমে আবদ্ধ দেশ ও মানুষের প্রতি তার ভালোবাসা ছিল অগাধ। ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দের ২৯ আগস্ট তিনি পরলোক গমন করেন।
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু : নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দের ২৩ জানুয়ারি ওড়িশার কটক শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম জানকীনাথ বসু, মাতা প্রভাবতী দেবী। সুভাষচন্দ্র ছিলেন ভারতের মুক্তি সংগ্রামের অগ্রদূত। প্রথমে তিনি দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসের সহযোদ্ধা রূপে তিনি মুক্তিসংগ্রামে অবতীর্ণ হন। তারপর দেশের জন্য নানা সময় তিনি কারাবরণ করেন। এরপর তিনি বিপ্লবী রাসবিহারী বসুর ‘আজাদ হিন্দ বাহিনী’র নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর বিখ্যাত উক্তি —“তোমরা আমায় রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব’। তিনি ছিলেন বাঙ্গালীর গর্ব তাঁর মৃত্যুর রহস্য আজও অজানা, স্বদেশবাসীর কাছে আজও তিনি মরণজয়ী বীর। তিনি দেশের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন।
স্বদেশি যুগ : বিশ শতকের শুরুর দিকে সাম্রাজ্যবাদী বড়োলাট লর্ড কার্জন ভারতে ব্রিটিশ শাসন সুরক্ষিত করার উদ্দেশে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। এগুলির মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিতর্কিত সিদ্ধান্ত হল বঙ্গভঙ্গের সিদ্ধান্ত। ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের জুলাই মাসে লর্ড কার্জন বঙ্গকে ভাগ করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। এর প্রতিবাদে এইসময় স্বাধীনতা সংগ্রামীরা বয়কটনীতি গ্রহণ করেন। ভারতের মুক্তিযোদ্ধারা বিদেশি দ্রব্য বর্জন করে ব্রিটিশ সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে চেয়েছিলেন। এ ছাড়া বিদেশি দ্রব্য বর্জনের প্রয়োজন ছিল স্বদেশি শিল্পের বিকাশের জন্য। বিদেশি পণ্যসম্ভারের মধ্যে বিশেষত সুতিবস্ত্র বর্জন এই আন্দোলনের মুখ্য বিষয় ছিল। এরপরে বিদেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকেও বয়কট করা হয়। এই আন্দোলন স্বদেশি আন্দোলন নামে পরিচিত। আর এই যুগকেই স্বদেশি যুগ বলা হয়। এইসময় ভারতীয়রা কবিতা, গান, নাট্যসাহিত্য ও স্বদেশি ভাবধারায় ওপর জোর দিয়েছিল এবং নিজেদের সম্পূর্ণরূপে দেশের সেবায় উৎসর্গ করেছিল।
৫. কাজী নজরুল ইসলামের গান শুনে লেখকের মনে কোন অনুভূতির সৃষ্টি হলো? তখন তিনি কী করলেন?
উত্তর: কাজী নজরুল ইসলামের গান শুনে লেখক রামকুমার চট্টোপাধ্যায়ের উত্তেজিত হয়ে পড়েন তাঁর অল্প বয়সের রক্ত টগবগ করে ফুটতে শুরু করে।
লেখক তখন স্কুলে না গিয়ে বাড়ি ফিরে এসে সেই উত্তেজনাকে বশে আনার জন্যই তার প্রিয়সঙ্গী তবলাকে কাছে টেনে নিয়ে তবলার বোলে ডুবে গিয়েছিলেন।
৬. শিক্ষকের সাহায্য নিয়ে নীচের বিষয়গুলির মধ্যে কাজী নজরুলের লেখা কোন কোন গান খুঁজে পেলে লেখো:
স্বদেশপ্রেম বিষয়ক; প্রকৃতি বিষয়ক; হাসির গান/ছড়ার গান; প্রেমের গান;ধর্মীয় অনুষঙ্গের গান।
উত্তর:
দেশপ্রেম বিষয়ক:
এই আমাদের বাংলাদেশ এই আমাদের বাংলাদেশ।
কোন পাগল পথিক ছুটে এল বন্দিনী মা’র আঙ্গিনায়।
এই ভারতে নাই যাহা তা ভূ-ভারতে নাই।
আমার সোনার হিন্দুস্থান / দেশ তুমি বিশ্বের প্রাণ।।
প্রকৃতি বিষয়ক:
একি অপরূপ রূপে মা তোমায় হেরিনু পল্লী-জননী।
আমার দেশের মাটি ও ভাই, খাঁটি সোনার চেয়েও খাঁটি।
বনের হরিণ আয়রে বনের হরিণ আয়।
মোরা বিহান-বেলা উঠে রে ভাই চাষ করি এই মাটি।
হাসির গান! ছড়ার গান :
আমার খোকার মাসী শ্রী মুকুল বালা দাসী।
আমার ঠনঠনিয়ার চটি। / যাত্রা শুনতে কাহার সাথে গেলি তুই পালটি।
প্রেমের গান:
ওগো চৈতী রাতের চাঁদ যেয়ো না।
ও মেঘের দেশের মেয়ে।
ও কে উদাসী আমায় হায়, ডাকে আয় আয়।
কত কথা ছিল তোমায় বলিতে।
ধর্মীয় অনুষঙ্গের গান (ইসলামি):
অসীম বেদনায় কাদে মদিনাবাসী।
অকুল তুফানে নাইয়া কর পার।
(আমি) আল্লা নামের বীজ বুনেছি এবার মনের মাঠে।
আমারে সকল ক্ষুদ্রতা হাতে বাঁচাও প্রভু উদার!
আরো পড়ুন
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।