প্রিয় শিক্ষার্থীরা, এই আর্টিকেলে আমরা গাধার কান প্রশ্ন উত্তর নিয়ে আলোচনা করেছি। শরদিন্দু মুখোপাধ্যায়ের লেখা গাধার কান গল্পটির শেষে থাকা হাতে-কলমে অংশের প্রশ্নগুলির উত্তর এখানে সহজ ও সরল ভাষায় লিখে দেওয়া হয়েছে, যাতে তোমরা সহজেই বুঝতে পারো। এই উত্তরগুলি মনোযোগ দিয়ে পড়লে তোমাদের পরীক্ষায় ভালো ফলাফল পাওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়ে যাবে।
গাধার কান
শরদিন্দু মুখোপাধ্যায়
গাধার কান প্রশ্ন উত্তর | শরদিন্দু মুখোপাধ্যায়
হাতে কলমে প্রশ্ন উত্তর
১. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :
১.১ ‘শহরের মধ্যে বেশ একটু সাড়া পড়ে গেছে’— এই ‘সাড়া পড়ার’ কারণ কী ?
উত্তর : শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘গাধার কান’ গল্পে টাউন স্কুল ও মিশন স্কুলের ছেলেদের মধ্যে ফুটবল খেলায় চিরকালের রেষারেষি ছিল।তাই দুই স্কুলের মধ্যে ফুটবল ম্যাচ – কাপ ফাইনাল হওয়ায় শহরের মধ্যে সাড়া পড়ে গিয়েছিল। পাঁচটা থেকে খেলা শুরুর কথা থাকলেও বিকেল চারটে বাজতে না বাজতেই মাঠে লোক জমতে আরম্ভ করেছিল।এ খেলা যে জমজমাট হবে তাতে কোনো সন্দেহ ছিল না।
১.২ ‘এই দুই স্কুলের ছেলেদের মধ্যে চিরকালের রেষারেষি’— কোন দুই স্কুলের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর : শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘গাধার কান’ গল্প থেকে নেওয়া প্রশ্নোদ্ধৃত অংশে টাউন স্কুল ও মিশন স্কুলের কথা বলা হয়েছে।
১.৩ ‘হিঃ হিঃ— তুক্ করা হলো না’— বক্তা কে? কাকে সে একথা বলেছে? কখন বলেছে?
উত্তর :
বক্তা কে? :- শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘গাধার কান’ গল্প থেকে নেওয়া প্রশ্নোদ্ধৃত উক্তির বক্তা টাউন স্কুলের খেলোয়াড় টুনু।
কাকে বলেছে ? :- টুনু তাদের দলের খেলোয়াড় সমরেশকে একথা বলেছে ।
কখন বলেছে? :- টাউন স্কুলের খেলোয়াড়দের বিশ্বাস ছিল খেলা শুরুর আগে গাধার কান মলতে পারলে তারা জিতে যায়।তাই ফাইনাল কাপ ম্যাচের দিন গাধা খুঁজে না পেয়ে সমরেশ যখন চিন্তিত মনে পায়ে অ্যাঙ্কলেট আঁটতে আঁটতে সেকথা ভাবছিল তখন টুনু উদ্ধৃত উক্তিটি করেছিল।
১.৪ গল্পে ফুটবল খেলার সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু শব্দ রয়েছে, যেমন— হাফ-ব্যাক, রাইট-ইন, গোলকিপার, সেন্টার ফরোয়ার্ড, ব্যাক-এরিয়া ইত্যাদি। আরো কিছু শব্দ তুমি গল্প থেকে খুঁজে নিয়ে লেখো। এছাড়াও নিজস্ব কিছু সংযোজনও করতে পারো।
উত্তর : কর্ণার, ফাউল, গোল, পেনাল্টি, অফসাইড, কিক প্রভৃতি ।
২. নীচের শব্দগুলি কোন মূল শব্দ থেকে এসেছে :
ভুরু, গাধা, দুপুর, চোখ, বাঁশি, পাঁচ।
উত্তর :
ভ্রূ (সংস্কৃত) > ভুরু
গর্দভ (সংস্কৃত) > গাধা
দ্বিপ্রহর (সংস্কৃত) > দুপুর
চক্ষু (সংস্কৃত) > চোখ
বংশী (সংস্কৃত) > বাঁশি
পঞ্চ (সংস্কৃত) > পাঁচ
৩. পদ-পরিবর্তন করো :
সন্দেহ, সজ্জিত, সর্বনাশ, উপস্থিত, মজবুত, শব্দ।
উত্তর :
সন্দেহ (বিশেষ্য পদ) – সন্দিগ্ধ (বিশেষণ পদ)
সজ্জিত (বিশেষণ পদ) – সজ্জা (বিশেষ্য পদ) )
সর্বনাশ (বিশেষ্য পদ ) – সর্বনাশা (বিশেষণ পদ )
উপস্থিত (বিশেষণ পদ) – উপস্থিতি (বিশেষ্য পদ)
মজবুত (বিশেষণ পদ) – মজবুতি (বিশেষ্য পদ) )
শব্দ (বিশেষ্য পদ) – শাব্দিক (বিশেষণ পদ)
৪. বিপরীতার্থক শব্দ লেখো :
রেষারেষি, ক্ষীণ, বিষণ্ণ, বিষম, উৎসাহ।
উত্তর :
রেষারেষি – সমঝোতা
ক্ষীণ – সবল
বিষন্ন – প্ৰসন্ন
বিষম – সুষম
উৎসাহ – নিরুৎসাহ
৫. সন্ধি বিচ্ছেদ করো :
আশ্চর্য, দুশ্চিন্তা, উপস্থিত।
উত্তর :
আশ্চর্য – আ + চর্য
দুশ্চিন্তা – দুঃ + চিন্তা
উপস্থিত – উপঃ + থিত
৬. “ফিস ফিস করে বললে’ অর্থ অত্যন্ত আস্তে/নিচু গলায় বলা বোঝায়। ‘কথা বলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হতে পারে, এমন কয়েকটি ধ্বন্যাত্মক শব্দ লেখো।
উত্তর : মিনমিন, গজগজ, ফুসফুস।
৭. ‘খেলোয়াড়গণ’— ‘খেলোয়াড়’ শব্দের সঙ্গে ‘গণ’ জুড়ে তাকে বহুবচনের রূপ দেওয়া হয়েছে। একবচন থেকে বহুবচনের রূপ পাওয়ার পাঁচটি কৌশল নতুন শব্দ গঠন করে দেখাও ৷
উত্তর :
রা – ছেলেরা, মেয়েরা।
গুলো – গাছগুলো, বইগুলো।
মন্ডলী – শিক্ষকমন্ডলী।
পুঞ্জ – মেঘপুঞ্জ।
বৃন্দ – দৰ্শকবৃন্দ।
৮. গল্প অনুসরণে নিজের ভাষায় উত্তর দাও :
৮.১ ‘আজকের খেলাটা যে খুব জমবে তাতে সন্দেহ নেই।’ — কোন বিশেষ দিনের কথা এখানে বলা হয়েছে? সেদিনের সেই ‘খেলার মাঠের দৃশ্যটি নিজের ভাষায় বর্ণনা করো ।
উত্তর : কোন বিশেষ দিন? : শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘গাধার কান’ গল্প থেকে নেওয়া প্রশ্নোদ্ধৃত অংশে টাউন স্কুল ও মিশন স্কুলের ছেলেদের মধ্যে কাপ ফাইনাল ফুটবল ম্যাচের দিনের কথা বলা হয়েছে।
খেলার মাঠের দৃশ্য:- টাউন স্কুল ও মিশন স্কুলের ছেলেদের মধ্যে চিরকালের রেষারেষি। তাই দুই স্কুলের মধ্যে কাপ ফাইনাল ম্যাচের পরিবেশ ছিল জমজমাট। পাঁচটা থেকে খেলা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও চারটে বাজতে না বাজতেই মাঠে লোক জমতে আরম্ভ করে। দুই স্কুলের ছেলেরা মাঠের দুধারে কাতার দিয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু দুপক্ষের খেলোয়াড় তখনও মাঠে নামেনি। তারা রণসজ্জায় সজ্জিত হচ্ছে। খেলার মাঠ থেকে কিছু দূরে বটগাছের তলায় টাউন স্কুলের ছেলেরা তৈরি হচ্ছিল।
রেফারি দিব্যেন্দুবাবু টস করলে দুই পক্ষের খেলোয়াড় খেলা শুরু করল। প্রথম মিনিট দশেক মিশন স্কুল চেপে রইল। বল আর টাউন স্কুলের গোলের কাছ থেকে দূরে যায় না। গোল বাঁচাতে বাঁচাতে গোলকিপার প্রশান্ত হিমসিম খেয়ে গেল। দু’বার কর্নার হলো, কিন্তু ভাগ্যক্রমে গোল হলো না। তারপর একবার একটু ফাঁক পেয়ে সমরেশ বল বের করে দিল। বল গিয়ে টুনুর পায়ে পড়ল। টুনু বিদ্যুৎ বেগে বল নিয়ে ছুটল। সামনে গোলকিপার ছাড়া আর কোনো বাধা ছিল না, কিন্তু গোলে বল শূট করবার আগেই মিশন স্কুলের দুজন ব্যাক পিছন থেকে দৈত্যের মতো টুনুর ঘাড়ের উপর এসে পড়ল। লাথি খেয়ে টুনুর ডান পায়ের বুড়ো আঙুল জখম হলো। দিব্যেন্দুবাবু ফাউল তো দিলেন না উল্টে টাউন স্কুলের বিরুদ্ধে অফসাইড দিলেন। টুনু হতাশ হলেও গিরীন টুনুকে উৎসাহ দিল। হাফ টাইমের পর আবার খেলা শুরু হলে টুনু পায়ের ব্যথা ভুলে একের পর এক গোল করতে লাগল। খেলা যখন শেষ হল তখন টাউন স্কুল দিয়েছে চার গোল, আর মিশন স্কুল মোটে এক গোল।
৮.২ ‘সমরেশদা কোথায় গেছে?” — এই সমরেশদার পরিচয় দাও। সে কোথায়, কোন উদ্দেশ্যে গিয়েছিল? তার উদ্দেশ্য সফল হয়েছিল কি ?
উত্তর :
সমরেশদা’র পরিচয়:- শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘গাধার কান’ গল্পের অন্যতম এক চরিত্র সমরেশ। সে টাউন স্কুলে ফুটবল দলের খেলোয়াড়। হাফ- ব্যাক পজিশনে খেলে সমরেশ। দলের ভরসাযোগ্য খেলোয়াড় হলেও সে একটু কুসংস্কারগ্রস্ত।
উদ্দেশ্য ও গন্তব্য : দলের অন্যান্য খেলোয়াড়দের মতো কুসংস্কারগ্রস্ত সমরেশের বিশ্বাস ছিল খেলা শুরুর আগে গাধার কান মলতে পারলে তাদের দল জিতে যায়। তাই গাধার কান মলার উদ্দেশ্যে সমরেশ মাঠে, ঘাটে, ধোপার বাড়ি প্রভৃতি জায়গায় গাধা খুঁজে বেড়িয়েছে।
উদ্দেশ্য সফল হয়েছে কিনা? :- সমরেশের উদ্দেশ্য সফল হয়নি। কারণ সে কোথাও গাধা খুঁজে পায়নি। আর গাধার কান মলাও হয়নি।
৮.৩ ‘এই সময় মাঠে রেফারির বাঁশি বেজে উঠল’ — ‘রেফারি’ টি কে? তাঁর সম্পর্কে ছেলেদের ধারণা কীরূপ ছিল? খেলার মাঠে তিনি কেমন ভূমিকা পালন করলেন?
উত্তর :
রেফারি কে? :- শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘গাধার কান’ গল্পে উল্লিখিত ‘রেফারি’টি হলেন দিব্যেন্দুবাবু।
তাঁর সম্পর্কে ছেলেদের ধারণা:- দিব্যেন্দুবাবু সম্পর্কে ছেলেদের ধারণা, তিনি নিরপেক্ষ রেফারি নন। তিনি জিলিপি খেতে খুব ভালোবাসেন। তাই ম্যাচের আগে যে দল তাকে জিলিপি খাওয়ায় তিনি সেই দলকে জিতিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন।
খেলার মাঠে ভূমিকা:– মিশন স্কুল দিব্যেন্দুবাবুকে জিলিপি খাইয়েছিল এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে খেলার প্রথম অর্ধে মিশন স্কুলের দুজন ব্যাক পিছন থেকে দৈত্যের মতো টুনুর ঘাড়ের উপর এসে পড়ে। লাথি খেয়ে টুনুর ডান পায়ের বুড়ো আঙুল জখম হয়। টুনু আশা করে দিব্যেন্দুবাবু নিশ্চয়ই ফাউল দেবেন, পেনাল্টি হবে। কিন্তু দিব্যেন্দুবাবু ফাউল তো দিলেন না উল্টে টাউন স্কুলের বিরুদ্ধে অফসাইড দিলেন। সেন্টার-ফরোয়ার্ড রণজিত নাকি অফসাইডে ছিল। খেলার দ্বিতীয় অর্থে টাউন স্কুলের খেলোয়াড়রা যেভাবে খেলল, বিশেষ করে স্কুল টিমে প্রথম সুযোগ পাওয়া টুনু যে আশ্চর্য খেলা দেখাল তাতে দিব্যেন্দুবাবুর বিশেষ কিছু করার ছিল না। খেলার নিয়ম অনুযায়ী তাকে চলতে হয়েছে।
৮.৪ খেলায় যে ফলাফল হলো, তাতে তুমি কি খুশি হলে? তোমার উত্তরের সমর্থনে যুক্তি দাও।
উত্তর : শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘গাধার কান’ গল্পে টাউন স্কুলের সঙ্গে মিশন স্কুলের ফাইনাল ফুটবল ম্যাচের যে ফলাফল হয়েছিল তাতে আমি খুব খুশি হয়েছি।
খেলার প্রথম অর্ধে রেফারি দিব্যেন্দুবাবু টাউন স্কুলকে পেনাল্টি শট থেকে বঞ্চিত করে। মিশন স্কুলের দুজন ব্যাকের দ্বারা টুনু আহত হয়। ডান পায়ের বুড়ো আঙুল জখম হয় টুনুর। গিরীনেরও হাঁটুর নীচে ফুলে ওঠে। তবু টুনুর গলা জড়িয়ে তাকে সাহস দেয় গিরীন। ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে দেখা যায় প্রবল মানসিক জোরকে অবলম্বন করে টুনু অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠে। টুনু একাই তিন গোল দেয়, রণজিৎ দেয় এক গোল। ম্যাচের ফলাফল টাউন স্কুল চার গোল, মিশন স্কুল এক গোল।
মিশন স্কুলের ছেলেরা হারবার উপক্রম হলেই মারামারি করে খেলতে আরম্ভ করে। তবে টাউন স্কুলের ছেলেরা এমন কায়দায় খেলে যে তাদের মারতে গেলে পিছলে বেরিয়ে যায়। প্রবল মানসিক জোর ও অসাধারণ দক্ষতার জোরেই টাউন স্কুলের ছেলেরা খেলায় জিতেছিল তাই আমি খুশি। আরেকটি কারণ হল, টাউন স্কুলের ছেলেরা এই ম্যাচটি না জিততে পারলে তাদের মনে গাধার কান মলার অন্ধবিশ্বাস স্থায়ী আকার ধারণ করত। তাদের ধারণা বিশ্বাসে পরিণত হত। তারা জেতায় এটা প্রমাণিত হল মনের জোর ও সত্যিকারের ইচ্ছা থাকলে সমস্ত সমস্যাকে অতিক্রম করা যায়।
৮.৫ গল্পে যে ফলাফলের কথা বলা হয়েছে, তার বিপরীতটি যদি ঘটত, তা হলে গল্পের উপসংহারটি কেমন হতো তা নিজের ভাষায় লেখো।
উত্তর : শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘গাধার কান’ গল্পে ফাইনাল ম্যাচের ফলাফল যদি বিপরীত হত, তবে মিশন স্কুল দিত চার গোল, টাউন স্কুল এক গোল।
ম্যাচ হেরে গিয়ে মন খারাপ করে টাউন স্কুলের ছেলেরা বাড়ি ফিরত। মিশন স্কুলের ছেলেরা ম্যাচ জিতে যাওয়ায় আনন্দ করত। যেহেতু ম্যাচের প্রথম অর্ধে রেফারি দিব্যেন্দুবাবু টাউন স্কুলকে পেনাল্টি পাওয়া থেকে বঞ্চিত করেছে। তাই টাউন স্কুলের ছেলেদের হয়তো মনে হত দিব্যেন্দুবাবু মিশন স্কুলের থেকে জিলিপি পেয়ে তাদের পক্ষপাতিত্ব করেছে। এছাড়াও টাউন স্কুল হেরে গেলে সদ্য স্কুল টিমে চান্স পাওয়া টুনুকে কাঁধে তুলে নিয়ে কেউ নাচত না। সে ম্যাচের হিরো হয়ে উঠতে পারত না। সর্বোপরি টাউন স্কুলের ছেলেরা ম্যাচ হেরে গেলে তাদের মনে গাধার কান মলার কুসংস্কার বদ্ধমূল হত। তারা মনে করত গাধার কান মলেনি বলেই তারা ম্যাচ জিততে পারেনি।
৮.৬ গল্পে বলা হয়েছে — ‘আজ টুনুই আমাদের হিরো।’— তোমার টুনু চরিত্রটিকে কেমন লাগল? সত্যিই কি নায়কের সম্মান তার প্রাপ্য?
উত্তর : শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘গাধার কান’ গল্পে টুনু চরিত্রটিকে আমার খুব ভালো লেগেছে।
ম্যাচের প্রথম অর্ধে মিশন স্কুল চেপে খেলায় টাউন স্কুলের গোলের কাছ থেকে বল দুরে যাচ্ছিল না। অবশেষে যখন বল গিয়ে টুনুর পায়ে পড়ল। টুনু বিদ্যুৎ বেগে বল নিয়ে ছুটল। সামনে গোলকিপার ছাড়া আর কোনো বাধা ছিল না, কিন্তু গোলে বল শূট; করবার আগেই মিশন স্কুলের দুজন ব্যাক পিছন থেকে দৈত্যের মতো টুনুর ঘাড়ের উপর এসে পড়ল। লাথি খেয়ে টুনুর ডান পায়ের বুড়ো আঙুল জখম হলো। দিব্যেন্দুবাবু ফাউল তো দিলেন না উল্টে টাউন স্কুলের বিরুদ্ধে অফসাইড দিলেন। টুনু হতাশ হলেও গিরীন টুনুকে উৎসাহ দিল। হাফ টাইমের পর আবার খেলা শুরু হলে টুনু পায়ের ব্যথা ভুলে একের পর এক গোল করতে লাগল। খেলা যখন শেষ হল তখন টাউন স্কুল দিয়েছে চার গোল, আর মিশন স্কুল মোটে এক গোল। টুনু একাই দিয়েছে তিন গোল। প্রথমে এক গোল খেলেও, নিজের ব্যথার কথা ভুলে গিয়ে টুনু যেভাবে দক্ষতার সাথে খেলে টাউন স্কুলকে ম্যাচ জিতিয়েছে তাতে বলা যেতেই পারে নায়কের সম্মান টুনুর প্রাপ্য।
৮.৭ গিরীন কীভাবে খেলার মাঠে টুনুকে ক্রমাগত উৎসাহ আর সাহস জুগিয়েছিল তা আলোচনা করো।
উত্তর : শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘গাধার কান’ গল্পে গিরীন টাউন স্কুল ফুটবল টিমের ক্যাপ্টেন। গল্পের শুরুতেই দেখা যায় সে ও অন্যদের মতো কুসংস্কারে বিশ্বাসী। সে মনে করে গাধার কান না মলে খেলতে নামলে তারা ম্যাচ হারবে।
তবে ম্যাচে যথার্থ অধিনায়কের মতো গিরীন ক্রমাগত টুনুকে উৎসাহ ও সাহস জুগিয়েছে। নিশ্চিত পেনাল্টি পাওয়া থেকে দিব্যেন্দুবাবু টাউন স্কুলকে বঞ্চিত করলে টুনু মনে মনে হতাশ হয়। কিন্তু গিরীন উৎসাহ দিয়ে বলেছে,-
“দিব্যেন্দুবাবু যা খুশি করুন, আজ তোকে গোল দিতে হবে মনে থাকে যেন।”
– টুনু নিজের পায়ের বুড়ো আঙুলের চোটের কথা বললে, গিরীন বলে, –
” তা যাক। কিন্তু গোল দেওয়া চাই-ই।”
– হাফ টাইমে নিজের হাঁটুর নীচের চোট দেখিয়ে টুনুকে ব্যথা অতিক্রম করে নতুন উদ্যমে খেলতে উৎসাহ জুগিয়েছে গিরীন। এরপরই টুনু সব বাঁধা অতিক্রম করে নিজে তিন গোল ও রণজিৎকে এক গোল দিতে সাহায্য করে টিমকে জিতিয়েছে। রোগা পটকা টুনুকে এভাবেই ক্রমাগত উৎসাহ আর সাহস জুগিয়েছে অধিনায়ক গিরীন।
৮.৮ ‘অন্ধসংস্কারের প্রতি আনুগত্যের জোরে নয়, প্রবল প্রচেষ্টা আর মানসিক জোরেই জীবনে সাফল্য আসে’ — ‘গাধার কান’ গল্পটি অনুসরণে উদ্ধৃতিটির যথার্থতা প্রতিপন্ন করো।
উত্তর : শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘গাধার কান’ গল্প থেকে আমরা শিক্ষা পাই অন্ধ সংস্কার মানুষকে সংকীর্ণ গন্ডিতে আবদ্ধ করে। জীবনে সাফল্যের জন্য প্রয়োজন প্রচেষ্টা ও মানসিক জোর।
গল্পে দেখা যায় টাউন স্কুলের ফুটবল টিমের সদস্যরা অন্ধ সংস্কার আঁকড়ে ছিল। তাদের ধারণা ছিল গাধার কান যেহেতু তারা মলতে পারেনি তাই তারা ম্যাচ জিতবে না। অর্থাৎ আসন্ন পরাজয়ের মানসিকতা নিয়েই টাউন স্কুলের অন্ধ সংস্কার আচ্ছন্ন খেলোয়াড়েরা মাঠে নেমেছিল। তাদের অন্ধ সংস্কারের প্রতি এতটাই বিশ্বাস ছিল যে, নিজেদের দক্ষতার ওপর তাদের কোনো ভরসা ছিল না।
কিন্তু টাউন স্কুলের ফুটবল টিমে সদ্য সুযোগ পাওয়া টুনু অন্ধ সংস্কারে বিশ্বাস করেনি। সে নিজের চোটের কথা ভুলে অসম্ভব মানসিক জোর ও দক্ষতার জোরে টাউন স্কুলকে ম্যাচ জিতিয়েছে। টুনুর এই জয় শুধুমাত্র খেলায় জয় নয়। এই জয় টাউন স্কুলের ফুটবল টিমের অন্য সদস্যদের অন্ধ সংস্কারের প্রতি আনুগত্য চিরকালের জন্য ভেঙে দিয়েছে।
৯. তোমার দেখা/খেলা কোনো ফুটবল ম্যাচের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে বন্ধুকে চিঠি লেখো।
উত্তর : নিজে কর ।
আরো পড়ুন
ছন্দে শুধু কান রাখো কবিতার প্রশ্ন উত্তর | অজিত দত্ত | Chonde Sudhu Kan Rakho Question Answer
বঙ্গভূমির প্রতি কবিতার প্রশ্ন উত্তর | মাইকেল মধুসূদন দত্ত | Bongobhumir Proti Question Answer
পাগলা গণেশ প্রশ্ন উত্তর | শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় | Pagla Ganesh Class 7 Question Answer
একুশের কবিতা প্রশ্ন উত্তর | আশরাফ সিদ্দিকী | Ekusher Kobita Question Answer
আত্মকথা রামকিঙ্কর বেইজ প্রশ্ন উত্তর | Attokotha Class 7 Question Answer
আঁকা লেখা কবিতার প্রশ্ন উত্তর | মৃদুল দাশগুপ্ত | Class 7 Bengali Aka Lekha Question Answer
খোকনের প্রথম ছবি প্রশ্ন উত্তর | বনফুল | Khokoner Prothom Chobi Question Answer
কার দৌড় কদ্দুর প্রশ্ন উত্তর | শিবতোষ মুখোপাধ্যায় | Class 7 Bengali Kar Dour Koddur Question Answer
নোট বই কবিতার প্রশ্ন উত্তর | সুকুমার রায় | Note Boi Sukumar Roy Question Answer
মেঘ চোর গল্পের প্রশ্ন উত্তর | সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় | Class 7 Bengali Megh Chor Question Answer
দুটি গানের জন্মকথা প্রশ্ন উত্তর | Class 7 Bengali | Duti Ganer Jonmokotha Question Answer
ভানুসিংহের পত্রাবলি প্রশ্ন উত্তর | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | Bhanusingher Potraboli Question Answer
চিরদিনের কবিতার প্রশ্ন উত্তর | সুকান্ত ভট্টাচার্য | Class 7 Bengali Chirodiner Question Answer
ভারততীর্থ কবিতার প্রশ্ন উত্তর | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | Bharat Tirtha Question Answer
স্মৃতিচিহ্ন কামিনী রায় প্রশ্ন উত্তর | Class 7 Bengali Smriti Chinha Question Answer
রাস্তায় ক্রিকেট খেলা গল্পের প্রশ্ন উত্তর | মাইকেল অ্যানটনি | Rastay Cricket Khela Question Answer
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।