প্রিয় ছাত্রছাত্রীরা এই আর্টিকেলে আমরা পরিবেশ ও তার সম্পদ Class 9 প্রশ্ন উত্তর নিয়ে এসেছি। এখানে আমরা সাঁতরা পাবলিকেশনের Class 9 এর জীবনবিজ্ঞান টেক্সট বই থেকে অনুশীলনীর সমস্ত প্রশ্ন উত্তর দিয়ে দিলাম। পরীক্ষায় ভালো ফল পাবার জন্য তোমরা টেক্সট বই খুঁটিয়ে আরো ভালোভাবে পড়বে। আশা করি আজকের এই পোস্টটি সবার ভালো লাগবে। ধন্যবাদ
পরিবেশ ও তার সম্পদ (Chapter 5)
Class 9 Life Science
A. বহু বিকল্পভিত্তিক প্রশ্ন (MCQ) :
1. নিম্নলিখিত কোনটি মরুজ উদ্ভিদ?
A. আম
B. সোলানাম
C. ফণীমনসা
D. জবা
উত্তরঃ C. ফণীমনসা
2. কোনটি মরুজ প্রাণী?
A. টার্কি ভালচার
B. কুমির
C. ঈগল
D. গোসাপ
উত্তরঃ A. টার্কি ভালচার
3. নিম্নলিখিত কোনটি অন্তঃপরজীবী?
A. মাইট
B. ফ্লি
C. টিনিয়া
D. টিকম
উত্তরঃ C. টিনিয়া
4. পুনঃস্থাপন অযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ কোনটি?
A. প্রাকৃতিক গ্যাস
B. বন
C. ফসল
D. মাটি
উত্তরঃ A. প্রাকৃতিক গ্যাস
5. নিম্নলিখিত কোন শৈবাল প্রোটিনযুক্ত খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়?
A. কারা
B. ভলভক্স
C. ক্লোরেল্লা
D. স্পাইরোগাইরা
উত্তরঃ C. ক্লোরেল্লা
6. কোনটির মধ্যে শক্তি রাসায়নিক শক্তিতে সঞ্চিত থাকে?
A. কয়লা
B. খনিজ তেল
C. রাসায়নিক সার
D. প্রাকৃতিক গ্যাস
উত্তরঃ A. কয়লা
7. উজ্জ্বল আলোতে ভালো জন্মায় এমন উদ্ভিদদের বলে
A. হেলিওফাইট
B. স্যামোফাইট
C. সিওফাইট
D. লিথোফাইট
উত্তরঃ A. হেলিওফাইট
8. জলজ বাস্তুতন্ত্রে ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটন হল
A. উৎপাদক
B. বিয়োজক
C. প্রাথমিক খাদক
D. গৌণ খাদক
উত্তরঃ A. উৎপাদক
9. যেসকল প্রাণী জলের তলদেশে বসবাস করে তাদের বলে
A. প্ল্যাঙ্কটন
B. ফনা
C. বেনথস
D. নেকটন
উত্তরঃ C. বেনথস
10. জলের তলায় থিতিয়ে পড়া পচনশীল জৈব পদার্থকে বলে
A. ডেট্রিটাস
B. বিয়োজক
C. পরিবর্তক
D. উৎপাদক
উত্তরঃ A. ডেট্রিটাস
11. বাস্তুতন্ত্রের খাদ্য পিরামিডের ভূমিতে থাকে
A. বিয়োজক
B. গৌণ খাদক
C. খাদক
D. উৎপাদক
উত্তরঃ D. উৎপাদক
12. পপুলেশন ঘনত্ব কম হলে জন্মহার
A. বেশি হবে
B. কম হবে
C. কোনো পরিবর্তন হবে না
D. সমান থাকবে
উত্তরঃ B. কম হবে
13. সর্বোচ্চ কোন তাপমাত্রায় জীব স্বাভাবিক জীবক্রিয়া করতে পারে?
A. ৪০°C — ৪৫°C
B. ৪৫°C — ৫০°C
C. ৫০°C—৫৫°C
D. ৪০°C—৬০°C
উত্তরঃ A. ৪০°C — ৪৫°C
14. তৃণভূমির খাদ্যশৃঙ্খলে প্রাথমিক খাদকটি হল
A. হরিণ
B. পতঙ্গের লার্ভা
C. ঘাসফড়িং
D. শুকর
উত্তরঃ C. ঘাসফড়িং
15. পৃথিবীতে বিকিরিত সূর্যালোকের কত শতাংশ সবুজ উদ্ভিদ কর্তৃক শোষিত হয়?
A. 0.02
B. 0.01
C. 0.05
D. 0.10
উত্তরঃ A. 0.02
16. পুনঃস্থাপন অযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদটি হল
A. কয়লা
B. মৃত্তিকা
C. বন
D. ফসল
উত্তরঃ A. কয়লা
17. আমাদের দেশে কৃষিজমির কত ভাগ জমিতে ধান, গম, যব, জোয়ার ইত্যাদি চাষ করা হয়?
A. 100
B. 75
C. 70
D. 80
উত্তরঃ B. 75
18. মানুষ দৈহিক প্রয়োজনে কত শতাংশ প্রোটিন প্রাণীজ প্রোটিন থেকে সংগ্রহ করে?
A. 80
B. 75
C. 60
D. 50
উত্তরঃ B. 75
19. পেট্রোরাসায়নিক শিল্পে কোনটি ব্যবহৃত হয়?
A. কয়লা
B. লোহা
C. খনিজ তেল
D. রাসায়নিক সার
উত্তরঃ C. খনিজ তেল
20. কোন্ ছত্রাকের মিশ্র কালচার থেকে নিষ্কাশিত প্রোটিন পশুখাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়?
A. রাইজোপাস
B. ইষ্ট
C. অ্যাগারিকাস
D. অ্যাসকোবোলাস
উত্তরঃ B. ইষ্ট
21. বায়ুর গতিবেগকে কাজে লাগিয়ে কোন শক্তি উৎপন্ন করা হয়?
A. সৌরশক্তি
B. বায়ুশক্তি
C. পারমাণবিক শক্তি
D. জলবিদ্যুৎ শক্তি
উত্তরঃ B. বায়ুশক্তি
22. কোনটি প্রোটিন সরবরাহকারী প্রাণী?
A. ক্লোরেল্লা
B. মুসুর
C. পালং
D. মাছ
উত্তরঃ D. মাছ
23. কোনটি দেশি পোনা?
A. রজত রুই
B. ধেঁসো রুই
C. কাতলা
D. আমেরিকান রুই
উত্তরঃ C. কাতলা
24. পৃথিবীতে মোট ব্যবহারযোগ্য জলের পরিমাণ
A. 97.2%
B. 0.62%
C. 2.8%
D. 2.15%
উত্তরঃ C. 2.8%
25. জলের তলায় থিতিয়ে পড়া পচনশীল জৈব পদার্থকে বলে
A. ডেট্রিটাস
B. উৎপাদক
C. পরিবর্তন
D. বিয়োজক
উত্তরঃ A. ডেট্রিটাস
26. বাস্তুতন্ত্রে কারা সংখ্যাগরিষ্ঠ?
A. উৎপাদক
B. প্রাথমিক খাদক
C. খাদক
D. বিয়োজক
উত্তরঃ D. বিয়োজক
27. একটি নির্দিষ্ট জলবায়ু দ্বারা প্রভাবিত জীবসম্প্রদায়কে বলে
A. ইকোলজিক্যাল নিচ
B. বায়োস্ফিয়ার
C. বায়োম
D. বায়োমাস
উত্তরঃ C. বায়োম
28. বাস্তুতন্ত্রের খাদ্য পিরামিডের ভূমিতে থাকে
A. বিয়োজক
B. গৌণ খাদক
C. খাদক
D. উৎপাদক
উত্তরঃ D. উৎপাদক
B. শূন্যস্থান পূরণ করো :
1. কয়লা পোড়ালে রাসায়নিক শক্তির তাপশক্তিতে রূপান্তর ঘটে।
2. বায়ুর গতিবেগকে কাজে লাগিয়ে বায়ুশক্তি উৎপন্ন করা হয়।
3. বন হল একপ্রকার পুনঃস্থাপনযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ।
4. অন্তপরজীবী পোষক দেহের অভ্যন্তরে বাস করে।
5. জীব সম্প্রদায়ের পারিপার্শ্বিক জৈব ও প্রাকৃতিক অবস্থাকে পরিবেশ বলে।
6. ফণীমনসা গাছের পাতা কাঁটায় রূপান্তরিত হয়েছে।
7. যেসব উদ্ভিদ কম আলোয় ছায়াযুক্ত পরিবেশে জন্মায়, তাদের সিওফাইট বলে।
8. সন্ন্যাসী কাঁকড়া ও সাগর কুসুম –এর মধ্যে কো-অপারেশন দেখা যায়।
9. রোডোসিউডোমোনাস একটি সালোকসংশ্লেষকারী ব্যাকটেরিয়া।
10. বাস্তুতন্ত্রে শক্তিপ্রবাহ সর্বদা একমুখী ।
11. বাস্তুতন্ত্রে মাত্র 10 শতাংশ শক্তি পরবর্তী পুষ্টিস্তরে পৌঁছায়।
12. পৃথিবীর সকল বায়োমকে একত্রে বায়োস্ফিয়ার বলে।
13. পৃথিবীর সমগ্র জলের 1 শতাংশ পানযোগ্য মিষ্টিজল।
14. বাস্তুতন্ত্রের যে উপাদান জটিল যৌগকে সরল জৈব যৌগে পরিণত করে তাকে বিয়োজক বলে।
15. যে-সকল উদ্ভিদের সংকটকালীন তাপমাত্রা দিবা-দৈর্ঘ্যের তুলনায় বেশী দিবা-দৈর্ঘ্যের ফুল উৎপন্ন হয়, তাদের দীর্ঘ দিবা উদ্ভিদ বলে।
16. ব্যাং দ্বিতীয় শ্রেণির খাদক।
17. প্রথম শ্রেণির খাদকরা সরাসরি উদ্ভিদদের থেকে খাদ্য গ্রহণ করে।
18. বাস্তুতন্ত্রে শক্তি প্রবাহ একমুখী হয়।
19. খাদ্যশৃঙ্খলের সাংগঠনিক একককে ট্রফিক স্তর বলে।
20. ফণীমনসা একপ্রকার জাঙ্গল উদ্ভিদ।
21. পেট্রোলের সঞ্চিত শক্তিতে 20% যান্ত্রিক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়ে গাড়ি চলে।
22. প্রাণীজ প্রোটিনের বেশিরভাগটা মাছ থেকে আসে।
23. বর্তমানে আমাদের দেশে 6 টি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র আছে। 24. ভারতে সবচেয়ে বেশি বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয় কয়লা থেকে।
C. সত্য (T) বা মিথ্যা (F) নির্ধারণ করো :
1. লেগুমিনোসি উদ্ভিদের মূলে অর্বুদ সৃষ্টিকারী রাইজোবিয়াম ব্যাকটেরিয়ার মিথোজীবিত্ব লক্ষ করা যায়।
উত্তর: সত্য।
2. বিশ্ব পরিবেশ দিবস 5 মার্চ।
উত্তর: মিথ্যা।
3. মোট শক্তির 90% দেহগঠনের কাজে ব্যবহৃত হয়।
উত্তর: মিথ্যা।
4. পেট্রোলিয়াম একপ্রকার পুনঃস্থাপনযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ।
উত্তর: মিথ্যা।
5. স্পাইরুলিনা প্রোটিনযুক্ত খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
উত্তর: সত্য।
6. দশ শতাংশ (10% law) সূত্রের প্রবক্তা বিজ্ঞানী হেকেল।
উত্তর: মিথ্যা।
7. যেসব উদ্ভিদ উচ্চ তাপমাত্রা অঞ্চলে বসবাস করে করে তাদের বলে মেগাথারমস।
উত্তর: সত্য।
8. বীজের অঙ্কুরোদ্গমের জন্য অক্সিজেনের প্রয়োজন।
উত্তর: সত্য।
9. ছত্রাক একপ্রকার রূপান্তরক।
উত্তর: সত্য।
10. ঘাস → হরিণ → বাঘ, এটি তৃণভূমির খাদ্যশৃঙ্খল।
উত্তর: মিথ্যা
11. পুকুরের খাদ্য শৃঙ্খল জুপ্ল্যাংকটন থেকে শুরু হয়।
উত্তর: মিথ্যা।
12. হেলিও-ফাইটদের পাতা ছোটো, পুরু কিউটিকলযুক্ত ও নিবেশিত পত্ররন্ধ্র দেখা যায়।
উত্তর: সত্য।
13. মাছ শীতলশোণিত প্রাণী।
উত্তর: সত্য।
14. পরজীবী ও পোষকের আন্তঃক্রিয়া হল পরজীবিতা।
উত্তর: সত্য।
15. বিচ্ছুরিত সৌরশক্তির 500 লক্ষ ভাগের মাত্র একভাগ সূর্যালোক হিসেবে পৃথিবীতে পৌঁছায়।
উত্তর: সত্য।
16. পৃথিবীতে ব্যবহৃত জলের 22 শতাংশ শিল্পে ব্যবহৃত হয়।
উত্তর: সত্য।
17. বিজ্ঞানী লিন্ডেম্যান-এর দশ শতাংশ সূত্র অনুযায়ী প্রতিস্তরে যে শক্তি এসে পৌঁছায় তার 90% পরবর্তী স্তরে পৌঁছায়।
উত্তর: মিথ্যা।
18. সূর্যালোক হল বাস্তুতন্ত্রের ভৌত উপাদান।
উত্তর: সত্য।
19. হেলিওফাইটস্ উদ্ভিদের অপর নাম শেড প্ল্যান্ট।
উত্তর: মিথ্যা।
20. যেসকল প্রাণীরা মরু অঞ্চলের শুষ্ক পরিবেশে বসবাস করে, তাদের ত্বকে ঘর্মগ্রন্থি বেশি থাকে।
উত্তর: মিথ্যা।
22. কয়লার মধ্যে শক্তি স্থৈতিক শক্তিরূপে সঞ্চিত থাকে।
উত্তর: মিথ্যা।
23. পারমাণবিক শক্তি পদার্থের পরমাণু থেকে উৎপন্ন করা হয়।
উত্তর: সত্য।
24. পেট্রোলিয়াম যান্ত্রিক শক্তি এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত হয়।
উত্তর: সত্য।
25. পৃথিবীর তিনভাগ জলের 50% জল লবণাক্ত।
উত্তর: মিথ্যা।
26. গ্রেজিং খাদ্যশৃঙ্খল শুরু হয় সবুজ উদ্ভিদ থেকে।
উত্তর: সত্য।
27. গোবর গ্যাসের প্রধান উপাদান মিথেন গ্যাস।
উত্তর: সত্য
28. CFL-এর সম্পূর্ণ নাম কমপ্যাক্ট ফ্লুরোসেন্ট ল্যাম্প।
উত্তর: সত্য।
D. এককথায় উত্তর দাও :
1. দুটি পুনঃস্থাপনযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদের নাম লেখো।
উত্তর: উদ্ভিদ, প্রাণী।
2. খাদ্য সম্পদ বলতে কোন্ প্রকার খাদ্যকে বোঝায়?
উত্তর: উদ্ভিজ ও প্রানীজ।
3. বায়ুশক্তি কী?
উত্তর: বায়ুর গতিবেগকে কাজে লাগিয়ে যে শক্তি উৎপন্ন করা হয়, তাকে বায়ুশক্তি বলে।
4. বাস্তুবিদ্যা কী?
উত্তর: বাস্তুবিদ্যা হল বিভিন্ন জীব এবং তার চারপাশের পরিবেশ ও তাতে অন্তর্ভুক্ত জীবদের মধ্যে পারস্পরিক আন্তঃক্রিয়া।
5. দুটি মরুজ উদ্ভিদের নাম লেখো।
উত্তর: ফনীমনসা, ত্রিশিরা মনসা।
6. দুটি অন্তঃপরজীবীর নাম লেখো।
উত্তর: ফিতাকৃমি, গোলকৃমি।
7. খাদ্যশৃঙ্খলের উদাহরণ দাও।
উত্তর:

8. ফণীমনসার মূল কী কারণে দীর্ঘ হয়?
উত্তর: জলের সন্ধানের জন্য।
9. মরুভূমির প্রাণীদের তাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য চামড়ার নীচে কী থাকে?
উত্তর: অধিক পরিমাণ মেদ জমা থাকে।
10. ক্ষুদ্র স্তন্যপায়ী প্রাণীরা দুপুরের সূর্যের তেজ থেকে নিজেদের রক্ষা করার জন্য কী কৌশল অবলম্বন করে?
উত্তর: মাটির ভিতর গভীর গর্তের মধ্যে ঢুকে যায়।
11. কোন্ বিজ্ঞানী পপুলেশনের সংজ্ঞা দিয়েছেন?
উত্তর: Odum
12. পপুলেশনের ঘনত্ব বেড়ে গেলে জন্মহার কীরূপ হবে?
উত্তর: বাড়বে।
13. খাদ্য-খাদক সম্পর্কে উৎপাদকদের গ্রাস করে কারা?
উত্তর: প্রাথমিক খাদকরা।
14. কোন্ ধরনের জীবের মধ্যে সহযোগিতা বা মিথোজীবিতা দেখা যায়?
উত্তর: শৈবাল ও ছত্রাক।
15. বাস্তুতন্ত্রের দুটি জীবজ শর্তের উদাহরণ দাও।
উত্তর: স্বভোজী ও পরভোজী উপাদান।
16. আলো কোন্ প্রক্রিয়ার উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়?
উত্তর: সালোকসংশ্লেষ।
17. সবুজ উদ্ভিদ কীসের সাহায্যে সূর্যালোক শোষণ করে?
উত্তর: ক্লোরোফিল।
18. রাইজোবিয়াম কোথায় বসবাস করে?
উত্তর: শিম্বিগোত্রীয় উদ্ভিদের মূলে।
19. খাদ্যশৃঙ্খলে শক্তির উৎস কী?
উত্তর: উৎপাদক।
20. যখন উৎপাদক ও বিভিন্ন খাদক পরস্পর সম্পর্কযুক্ত হয় তখন তাকে কী বলে?
উত্তর: খাদ্যশৃঙ্খল।
21. জল সম্পদের অতিব্যবহারের একটি কুফল উল্লেখ করো।
উত্তর: পানীয় জলের সমস্যা।
22. জল সংরক্ষণের দুটি উপায় উল্লেখ করো।
উত্তর: জলাশয় খনন ো বাঁধ প্রকল্প।
23. প্রোটিনের বিকল্প খাদ্য কী?
উত্তর: ক্লোরেল্লা।
24. কয়লা দহন করে বিদ্যুৎ উৎপাদনকালে কী পরিমাণ শক্তি নষ্ট হয়?
উত্তর: 60%
25. বাড়িতে বিদ্যুৎ খরচ কমানোর জন্য টিউব লাইট, বালব্-এর বদলে কী ব্যবহার করা উচিত?
উত্তর: CFL লাইট।
26. সবচেয়ে বেশি বিদ্যুৎশক্তি উৎপন্ন করা হয় কী থেকে?
উত্তর: কয়লা।
27. পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে মোট কত মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়?
উত্তর: 1230 মেগাওয়াট।
28. বায়ুশক্তিকে কাজে লাগিয়ে কত মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়?
উত্তর: 20000 মেগাওয়াট।
29. রান্নার জন্য সৌরশক্তিকে কীরূপে ব্যবহার করা হয়?
উত্তর: সোলার কুকার।
30. সোলার ড্রায়ার কী কাজে লাগে?
উত্তর: শস্য শুকাবার জন্য।
31. প্রাণীদেহে জলের একটি প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করো।
উত্তর: পানীয় জল হিসাবে।
32. উদ্ভিদদেহে জলের একটি প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করো।
উত্তর: শস্য উৎপাদনের জন্য সেচ ব্যাবস্থায়।
33. উদ্ভিদের বিস্তার রীতিকে প্রভাবিত করে এমন উদাহরণ দাও।
উত্তর: প্রয়োজনের অতিরিক্ত অরণ্য কেটে ফেলা হচ্ছে, অথচ নতুন অরণ্য তৈরির পরিকল্পনা যথাযথ নেওয়া হচ্ছে না।
34. যেসব জীব নিজেদের খাদ্য নিজেরাই উৎপাদন করে, তাদের কী বলে ?
উত্তর: স্বভোজী।
35. যেসব পরভোজী সরাসরি উৎপাদকদের খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে, তাদের কী বলে ?
উত্তর: খাদক।
E. সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন : (প্রশ্নমান – 2)
1. জীবসম্প্রদায় কাকে বলে?
উত্তর: একটি বসতিস্থানের বিভিন্ন প্রকার পপুলেশন মিলিত হয়ে যে সংগঠন গড়ে তোলে তাকে কমিউনিটি বা জীবগোষ্ঠী বা জীবসম্প্রদায় (Biotic community) বলে।
2. খাদ্যশৃঙ্খল কাকে বলে?
উত্তর: উৎপাদক থেকে ক্রম পর্যায়ে খাদ্যখাদক সম্পর্কযুক্ত বিভিন্ন প্রাণীগোষ্ঠীর মধ্যে খাদ্যশক্তির একমুখী প্রবাহের ক্রমিক পর্যায়কে খাদ্যশৃঙ্খল বলে।
3. পপুলেশন কী?
উত্তর: একই স্থানে বসবাসকারী একই প্রজাতিভুক্ত জীবগোষ্ঠী বা খুবই নিকট সম্পর্কিত জীবগোষ্ঠী যাদের মধ্যে জিনের আদান-প্রদান ঘটে তাদের পপুলেশন বলে।
4. প্রাকৃতিক সম্পদ কাকে বলে?
উত্তর: পৃথিবীর যে সমস্ত জড় পদার্থ এবং জীবসমূহ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মানুষের অভাব পূরণে এবং কল্যাণসাধনে ব্যবহৃত হয়, তাদের প্রাকৃতিক সম্পদ বলে।
5. পপুলেশন কাকে বলে?
উত্তর: একই স্থানে বসবাসকারী একই প্রজাতিভুক্ত জীবগোষ্ঠী বা খুবই নিকট সম্পর্কিত জীবগোষ্ঠী যাদের মধ্যে জিনের আদান-প্রদান ঘটে তাদের পপুলেশন বলে।
6. মৎস্যচাষ কী?
উত্তর: যে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মাছের প্রজনন, পালন, সংরক্ষণ ও প্রয়োজনে ব্যবহার করা হয়, তাকে মৎস্যচাষ বা ফিসারি বলে।
7. খাদ্যজাল কাকে বলে?
উত্তর: একটি বাস্তুতন্ত্রের মধ্যে বিভিন্ন খাদ্যশৃঙ্খলের সাংগঠনিক এককগুলি বিভিন্নভাবে একে অপরের ওপর নির্ভরশীল হয়ে জটিল জালকাকার সম্পর্ক সৃষ্টি করে, তাকে খাদ্য-জালক বলে।
8. পরিপোষক চক্র কাকে বলে?
উত্তর: পরিবেশ থেকে উদ্ভিদ দেহে, উদ্ভিদ দেহ থেকে প্রাণীদেহে এবং উদ্ভিদ ও প্রাণীদেহ থেকে পরিবেশে পরিপোষকগুলির চক্রাকার আবর্তনকে পরিপোষক চক্র বা জৈব-ভূরাসায়নিক চক্র বলে।
9. সিনইকোলজি কাকে বলে?
উত্তর: একাধিক প্রজাতির সঙ্গে পরিবেশের আন্তঃসম্পর্ক নিয়ে আলোচনা কে সিনইকোলজি বলে।
10. হাইড্রোফাইট উদ্ভিদ কাকে বলে? এর দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর: হাইড্রোফাইট হলো এমন উদ্ভিদ যা জলাশয়ে বেড়ে ওঠে এবং বৃদ্ধি পায়। এই উদ্ভিদ গুলি জলাশয়ে বেঁচে থাকার জন্য বিশেষভাবে অভিযোজিত হয়। যেমন – ওয়াটার লিলি।
এর দুটি বৈশিষ্ট্য হলো – i) এই উদ্ভিদের জল ধারণ ক্ষমতা থাকে। ii) এই উদ্ভিদের পাতাগুলি সমতল হয়।
11. বহিঃপরজীবী ও অন্তঃপরজীবী কাকে বলে?
উত্তর:
বহিঃপরজীবী (Ectoparasite) : যে সকল পরজীবী পোষক দেহ সংলগ্ন থাকে কিন্তু পোষক দেহের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে না, তাদের বহিঃপরজীবী বলে। যেমন—পক্ষী ও স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বহিঃপরজীবী – উকুন, ফ্লি, মাইট, এঁটুলি ইত্যাদি।
অন্তঃপরজীবী (Endoparasite) : যে সকল পরজীবী পোষক দেহের অভ্যন্তরে বাস করে, তাদের অন্তঃপরজীবী বলে। যেমন—এন্টামিবা (আমাশয় পরজীবী); অ্যাসকেরিস (গোলকৃমি), টিনিয়া (ফিতাকৃমি), প্লাসমোডিয়াম (ম্যালেরিয়া পরজীবী)।
12. বাধ্যতামূলক পরজীবিতা কাকে বলে?
উত্তর: বাধ্যতামূলক পরজীবীতা বা হ্যালোপ্যারাসাইট হলো এক ধরনের পরজীবিতা, যেখানে পরজীবী জীব একটি উপযুক্ত পোষক ছাড়া তার জীবনচক্র সম্পন্ন করতে পারে না। যদি একটি বাধ্যতামূলক পরজীবী, পোষক পেতে ব্যর্থ হয় তবে এটি বংশবৃদ্ধি করতেও ব্যর্থ হবে। যেমন – ভাইরাস।
13. পরিযান বা মাইগ্রেশন কাকে বলে?
উত্তর: কোনো পপুলেশনের অন্তর্গত জীবেরা যখন দলবদ্ধভাবে দ্বিমুখী গমনে পুরনো বাসস্থান থেকে নতুন বাসস্থানে এবং নতুন বাসস্থান থেকে পুরনো বাসস্থানে বিচরণ করে তখন তাকে মাইগ্রেশন (migration) বা পরিযান বলে।
14. রূপান্তরক কাকে বলে?
উত্তর: কিছু আণুবীক্ষণিক জীব বিয়োজিত পদার্থকে আরও সরল উপাদানে পরিণত করে তাকে রূপান্তরক বা ট্রান্সফরমার বলে। যেমন – মাইক্রোব ও ছত্রাক।
15. অর্থকরী গুরুত্ব হিসেবে গৃহপালিত পশুদের কীভাবে ভাগ করা যেতে পারে?
উত্তর: অর্থকরী গুরুত্ব হিসেবে গৃহপালিত পশুদের চার ভাবে ভাগ করা যায়। যেমন –
(i) দুগ্ধ উৎপাদনকারী প্রাণী : গোরু, ছাগল, মহিষ।
(ii) মাংস ও ডিম উৎপাদনকারী প্রাণী : গোরু, ছাগল, ভেড়া, শূকর, হাঁস, মুরগি।
(iii) পশম ও চামড়া উৎপাদনকারী প্রাণী : ভেড়া, ছাগল, গোরু, মহিষ, ঘোড়া, উট ইত্যাদি।
(iv) বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত প্রাণী : গোরু, মহিষ, ঘোড়া, গাধা, হাতি, খচ্চর, কুকুর ইত্যাদি।
16. খাদ্যের দুটি বিকল্প উৎস সম্পর্কে উল্লেখ করো।
উত্তর: বর্তমান বিশ্ব যখন খাদ্য সংকটের সম্মুখীন তখন খাদ্যের বিকল্প উৎসের প্রয়োজন।
1. ব্যাকটেরিয়া, শৈবাল, ছত্রাক বা ইস্টের বিশুদ্ধ বা মিশ্র কালচার থেকে নিষ্কাশিত প্রোটিন পশু বা মানুষের বিকল্প খাদ্য হিসাবে ব্যবহার করা হয়।
2. ভোজ্য মাশরুম হল নরম, মাংসল ও সুগন্ধযুক্ত খাদ্য। এর মধ্যে প্রোটিন, শর্করা, ফ্যাট, ভিটামিন, খনিজ মৌল, তন্তুজ পদার্থ থাকে।
17. শক্তি সম্পদ বলতে কী বোঝো?
উত্তর: কার্য করার সামর্থ্যকে শক্তি বলা হয়। শক্তির বিভিন্ন রূপ বর্তমান। যেমন — তাপশক্তি, বিদ্যুৎ শক্তি, বায়ুশক্তি, শব্দশক্তি, আলোক শক্তি প্রভৃতি।
18. প্রাত্যহিক জীবনে শক্তি সংরক্ষণের দুটি উপায় উল্লেখ করো।
উত্তর: প্রাত্যহিক জীবনে শক্তি সংরক্ষণের দুটি উপায় হল –
i) বাড়িতে প্রয়োজনের বাইরে আলো, পাখা ইত্যাদি বন্ধ রেখে বিদ্যুৎ এর সাশ্রয় করা প্রয়োজন।
ii) বাড়িতে বাল্ব, টিউব লাইটের বদলে CFL লাইটের ব্যবহারে আলো বাড়ে, বিদ্যুৎ খরচ কমে।
F. দীর্ঘ উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন : (প্রশ্নমান – 5)
1. শক্তি কী? শক্তির ব্যবহারগুলি উল্লেখ করো।
উত্তর:
শক্তি (Energy) : কার্য করার সামর্থ্যকে শক্তি বলা হয়। শক্তির বিভিন্ন রূপ বর্তমান। যেমন — তাপশক্তি, বিদ্যুৎ শক্তি, বায়ুশুক্তি, শব্দশক্তি, আলোক শক্তি প্রভৃতি।
শক্তির ব্যবহার (Uses of energy) :
1. প্রচলিত শক্তির ব্যবহার : আমরা সাধারণত যেসব প্রচলিত শক্তিকে দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করি তা হল —
(i) কয়লার মধ্যে সঞ্চিত রাসায়নিক শক্তিকে তাপশক্তিতে রূপান্তরিত করে রান্নার কাজে, শিল্পে, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে, স্টিম উৎপাদনে ব্যবহার করা হয়।
(ii) পেট্রোল, ডিজেল, কেরোসিন ইত্যাদির মধ্যে সঞ্চিত শক্তিকে ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রকার যানবাহন ও কারখানার বিভিন্ন প্রকার যন্ত্রপাতি চালনা করা হয়।
(iii) প্রচণ্ড গতিসম্পন্ন জলের স্রোতের সাহায্যে টারবাইন ঘুরিয়ে, ডায়ানামোর মাধ্যমে প্রাপ্ত জলবিদ্যুৎ বর্তমানে বিভিন্ন শিল্পে ও গৃহস্থালির দৈনন্দিন কাজে তাপবিদ্যুৎ-এর বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
2. অপ্রচলিত শক্তির ব্যবহার : বর্তমান যুগে ব্যবহৃত উল্লেখযোগ্য অপ্রচলিত শক্তিগুলি হল –
(i) পারমাণবিক শক্তি : কম সময়ে দ্রুত বিদ্যুৎ উৎপাদনে এই শক্তি ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া এই শক্তির সাহায্যে খনিজ তেল উত্তোলন, রকেট চালানো, সাবমেরিন ও যুদ্ধজাহাজ চালানো ইত্যাদি কাজ হয়ে থাকে।
(ii) বায়ুশক্তি : বর্তমানে বায়ুশক্তিকে বৈদ্যুতিক শক্তিতে পরিণত করে গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকায় জল সরবরাহের কাজে ও দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।
(iii) সৌরশক্তি : সূর্য থেকে প্রাপ্ত সৌরশক্তিকে বিদ্যুৎশক্তিতে রূপান্তরিত করে, সোলার হিটারের সাহায্যে জল গরম, সোলার কুকারে রান্না ও বিভিন্ন বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি সচল রাখার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।
(iv) জোয়ারভাটার শক্তি : নদীতে জোয়ারভাটার সময় তীব্র জলস্রোতকে কাজে লাগিয়ে টারবাইন ঘুরিয়ে যে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা হয় তা বিভিন্ন অফিস, হাসপাতাল, বিদ্যালয়, গৃহস্থের বাড়ি ইত্যাদিতে ব্যবহার করা হয়।
(v) ভূতাপীয় শক্তি : পৃথিবীর যেসব স্থানে আগ্নেয়গিরি বা উষ্ণপ্রস্রবণ রয়েছে সেখানে ভূতাপীয় শক্তি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়। এই বিদ্যুৎ আমাদের দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করা হয়।
2. বনজসম্পদের ব্যবহার লেখো। বনধ্বংসের কারণ ও ফলাফল লেখো।
উত্তর:
বনজ সম্পদের ব্যবহার (Use of Forest Resources) :
1. বন জলসম্পদ সংরক্ষণে প্রধান ভূমিকা গ্রহণ করে।
2. বন বায়ুপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে।
3. বন ভূমিক্ষয় নিয়ন্ত্রণ করে।
4. বন থেকে আমরা নিত্য ব্যবহার্য সম্পদ সংগ্রহ করি। যেমন — আসবাবপত্র তৈরির জন্য কাঠ, জ্বালানি, ধুনো, মধু, গাছের ছাল, বিভিন্ন ভেষজ সামগ্রী ইত্যাদি।
5. বনজ উদ্ভিদ থেকে কাষ্ঠ শিল্প গড়ে উঠেছে। যার দ্বারা বহু লোকের কর্মসংস্থান হয়।
6. বনভূমি পশুপাখিদের আবাসস্থল।
7. বন পরিবেশকে দূষণের হাত থেকে রক্ষা করে।
8. বাস্তুতন্ত্রে বনভূমি খাদ্যশৃঙ্খলের সমতা বজায় রাখে।
9. বন বন্যা ও খরা নিয়ন্ত্রণ করে।
বন ধ্বংসের কারণ ও ফলাফল (Deforestation and Consequences) : বন মানুষের সবচেয়ে উপকারী বন্ধু, তথাপি বন ধ্বংসের অন্যতম কারণ মানুষ। কল-কারখানা গড়া, গৃহ নির্মাণ, আসবাবপত্র নির্মাণ, রেলের স্লিপার তৈরি, ইলেকট্রিক তারের খুঁটি হিসেবে ব্যবহার, ব্রীজ তৈরি, রাস্তা তৈরি, নদীর পাড় নির্মাণ, কাগজ তৈরি, ভেষজ উৎপাদন ইত্যাদি কারণে মানুষ যথেচ্ছভাবে গাছ কাটছে, ফলে ভূমি ক্ষয়, বন্যা, খরা ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটে চলেছে। এতে বন্য প্রাণীদের যেমন আবাসস্থল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মানুষ ও নানাভাবে অসুবিধায় পড়ছে ।
অরণ্য ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বন সংরক্ষণ করা একান্তভাবে প্রয়োজন। বৃক্ষছেদন করলে পুনরায় বৃক্ষ রোপণ করতে হবে। চারা গাছের যত্ন নিতে হবে। বনে যাতে আগুন না লাগে সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। বনজ উদ্ভিদ ও প্রাণী মারা গেলে অরণ্যের বাস্তুতন্ত্র ধ্বংস হয়ে যাবে, যার ফলভোগ করতে হবে মানুষকে।
3. জল সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা কী? বৃষ্টির জল ধরে রাখার পদ্ধতিগুলি কী কী?
উত্তর:
জল সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা (Necessity of water conservation) :
1. প্রকৃতির জলচক্রকে সঠিক অবস্থায় রাখা।
2. খরার প্রকোপ থেকে উদ্ভিদ এবং প্রাণীদের বেঁচে থাকার উপযোগী জল সরবরাহ করা।
3. কৃষিকার্যে সহায়তা করা।
4. বাস্তুসংস্থানকে সঠিকভাবে চলতে দেওয়া।
5. মানুষের দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয় জল সরবরাহকে স্বাভাবিক রাখা।
6. জলচর প্রাণীদের অস্তিত্ব রক্ষা করা।
বৃষ্টির জল ধরে রাখার বিভিন্ন পদ্ধতি (Different process of rain water harvesting) :
বৃষ্টির জল ধরে রাখার বিভিন্ন প্রথাগত পদ্ধতি যেমন — মাটির উপরে ও নীচে জলাধার তৈরি করা, উঁচু বাঁধ দিয়ে পুকুর কাটা ইত্যাদি ছাড়াও বৃষ্টির জলকে বিভিন্নভাবে ধরে রেখে সেই জলকে ভূগর্ভে ফেরত পা.ঠানোর জন্য Central Ground Water Board কয়েকটি পদ্ধতি নির্ণয় করেছেন। যেমন—
(i) গর্ত (Pit) : অপেক্ষাকৃত কম গভীরতায় ছোটো ছোটো গর্ত (2 মিটার চওড়া, 3 মিটার গভীর) তৈরি করে গর্তের নীচে বড়ো পাথর, ছোটো নুড়ি পাথর, মোটা দানার ফিল্টার বেড তৈরি করে বৃষ্টির জল ধরে রাখা এবং ভূগর্ভে ফেরত পাঠানো।
(ii) ছোটো খাল (Trench) : লম্বা, চওড়া ও গভীরতায় (20 x 1 x 1.5 মিটার) ছোটো ছোটো খাল কেটে তলায় ফিল্টার বেড তৈরি করে বৃষ্টির জল ধরে রাখা।
(iii) শহরাঞ্চলে বাড়ির ছাদে বৃষ্টির জল ধরে রাখা : শহরাঞ্চলে যেসব বাড়ির ফাঁকা ছাদ আছে সেখানে বৃহৎ পাত্র বা চৌবাচ্চা স্থাপন করে বৃষ্টির জল সংগ্রহ করা যেতে পারে। ওই জলকে শোধন করে পানীয় জল হিসেবে বা রান্নার কাজে লাগানো যেতে পারে। জলাধারগুলি বৃষ্টির জলে ভরে গেলে ঢাকা দেওয়ার ব্যবস্থা রাখতে হবে।
4. মরুজ প্রাণীর অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ করো।
উত্তর:
মরুজ প্রাণীর অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্য :
(i) মরু অঞ্চলের উচ্চ তাপমাত্রা থেকে বাঁচতে মরু প্রাণীরা অনেকে গর্তের ভিতর ঢুকে নিষ্ক্রিয় অবস্থায় থাকে। একে গ্রীষ্মঘুম বা এস্টিভেশন বলে।
(ii) মরু অঞ্চলের প্রাণীদের ত্বকের নীচে মেদের পরিমাণ ও ত্বকের ওপর লোমের পরিমাণ কম হয়।
(iii) মরু অঞ্চলের অনেক প্রাণীদের ত্বকে রঞ্জকের ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়, ফলে গাত্রবর্ণ ঘন হয়। একে গ্লগারের নীতি বলে।
(iv) পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে দেখা গেছে, মরু অঞ্চলের পক্ষী ও স্তন্যপায়ী প্রাণীদের দেহের আকার শীতপ্রধান অঞ্চলের প্রাণীদের থেকে ছোটো হয়, একে বার্গম্যানের নীতি বলে।
(vi) মরুভূমির প্রাণী উটের পুরু চামড়া, ত্বকে ঘর্মগ্রন্থির স্বল্পতা এবং পায়ে শক্ত প্যাডের উপস্থিতি ইত্যাদি উচ্চ তাপমাত্রা থেকে দেহকে রক্ষার জন্য বিশেষ ধরনের অভিযোজন।
5. কমিউনিটি স্তরে সম্ভাব্য আন্তঃক্রিয়াগুলি উল্লেখ করো।
উত্তর:
কমিউনিটি স্তরে সম্ভাব্য আন্তঃক্রিয়াগুলি হল :
A) প্রতিযোগিতা (Competition) : খাদ্য, আশ্রয়, প্রজননের অধিকার স্থাপন করার জন্য একই প্রজাতির অথবা ভিন্ন প্রজাতির মধ্যে প্রতিযোগিতা প্রায়ই লেগে থাকে। এটি ঋণাত্মক-ঋণাত্মক (- -) আন্তঃক্রিয়া। যেমন—পর্যাপ্ত সূর্যালোক পাওয়ার জন্য উদ্ভিদের মধ্যে বৃদ্ধির প্রতিযোগিতা, খাদ্য ও প্রজননের জন্য হরিণে-হরিণে, সিংহে-সিংহে লড়াই।
B) খাদ্য-খাদক সম্পর্ক (Predation) : একটি বাস্তুতন্ত্রে একটি খাদ্যস্তর থেকে ক্রমপর্যায়ে পরবর্তী খাদ্যস্তরে শক্তি প্রবাহ চলতে থাকে। এটি ধনাত্মক-ঋণাত্মক (+-) আন্তঃক্রিয়া। প্রাথমিক উৎপাদক সবুজ উদ্ভিদ সৌরশক্তিকে আত্তীকরণ করে সালোকসংশ্লেষের মাধ্যমে স্থৈতিক শক্তি হিসাবে খাদ্যে (শর্করা, প্রোটিন, ফ্যাট) সঞ্ঝয় করে, সেই শক্তি উৎপাদক থেকে ক্রমপর্যায়ে ভক্ষক ও ভক্ষিতের সম্পর্কে প্রথম খাদক (শাকাশী প্রাণী), দ্বিতীয় খাদক, তৃতীয় খাদক (মাংসাশী প্রাণী) খাদ্য গ্রহণ করার মাধ্যমে প্রবাহিত হয়।

C) পরজীবিতা (Parasitism) : যেসব প্রজাতি খাদ্য ও আশ্রয়ের জন্য অন্য কোনো প্রজাতির উপর নির্ভরশীল হয় পরিবর্তে আশ্রয়দাতার ক্ষতিসাধন করে, তাকে পরজীবী বলে। যে প্রজাতি নির্ভরশীল তাকে পরজীবী এবং যার ওপর নির্ভরশীল তাকে পোষক (Host) বলে। পোষকের সঙ্গে পরজীবীর নির্ভরশীলতাকে পরজীবিতা (Parasitism) বলে। এটি ধনাত্মক-ঋণাত্মক (+-) সন্নিবেশ।
যেমন — স্বর্ণলতা উদ্ভিদ (Cuscuta reflexa) অন্যান্য উদ্ভিদের ওপর আশ্রয়প্রাপ্ত হয়ে চোষক মূলের সাহায্যে পোষক দেহ থেকে খাদ্য শোষণ করে বেঁচে থাকে। মানুষের অস্ত্রে বসবাসকারী পরজীবী গোলকৃমি (Ascaris lumbricoides) মানুষের দেহ থেকে খাদ্য গ্রহণ করে, পরিবর্তে মানবদেহে রোগ সৃষ্টি করে।
D) সহযোগিতা (Cooperation) : যে সহাবস্থানের মাধ্যমে দুটি ভিন্ন প্রজাতির আন্তঃবিক্রিয়ার দ্বারা উভয় প্রজাতি বিশেষভাবে উপকৃত হয় তাকে সহযোগিতা বা মিথোজীবিতা বলে। এটি একপ্রকার ধনাত্মক ধনাত্মক (+ +) বা ধনাত্মক নিরপেক্ষ (+ 0) আন্তঃক্রিয়া। যেমন—লাইকেন নামক একপ্রকার উদ্ভিদ বিশেষ একপ্রকার শৈবাল ও ছত্রাকের সহাবস্থানে সৃষ্টি হয়। ছত্রাক অণুসূত্র বিস্তার করে শৈবালকে রক্ষা করে, বিনিময়ে শৈবাল থেকে খাদ্য গ্রহণ করে। লেগুমিনোসি বা শিম্বিগোত্রীয় উদ্ভিদের মূলে অর্বুদ সৃষ্টিকারী রাইজোবিয়াম ব্যাকটেরিয়ার মিথোজীবিত্ব লক্ষ করা যায়। উদ্ভিদ দেহে থেকে ব্যাকটেরিয়া খাদ্য ও আশ্রয় গ্রহণ করে, অপরদিকে ব্যাকটেরিয়া মুলে নাইট্রোজেন সংবন্ধন করে উদ্ভিদকে নাইট্রোজেনজাতীয় পদার্থ সরবরাহ করে।
6. জেরোফাইট উদ্ভিদের অভিযোজন বর্ণনা করো।
উত্তর:
জেরোফাইট উদ্ভিদের অভিযোজন : প্রত্যেক জীবের সুষ্ঠুভাবে জীবনধারণের জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে বায়ুর আপেক্ষিক আর্দ্রতার ওপর নির্ভর করতে হয়। মরুভূমি অঞ্চলে বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতা খুব কম। এইসব অঞ্চলে জেরোফাইট (Xerophyte) বা জাঙ্গল উদ্ভিদ জন্মায়। ফণীমনসা, ত্রিশিরা মনসা, ইউফরবিয়া ইত্যাদি উদ্ভিদ মরুভূমিতে জন্মায়। কম আর্দ্রতাযুক্ত ঊষর পরিবেশে বসবাস করার জন্য এদের নিম্নরূপ অভিযোজন বৈশিষ্ট্য দেখা যায় —
(i) কাণ্ড স্থূল, রসালো, চ্যাপটা, সবুজ এবং পুরু কিউটিকল দিয়ে ঢাকা।
(ii) বাষ্পমোচন রোধ করার জন্য পাতাগুলি কাঁটায় রূপান্তরিত।
(iii) প্রধান মূল খুব দীর্ঘ, জলের সন্ধানে মাটির গভীরে প্রবেশ করেছে।
(iv) পার্শ্বীয় মূলগুলি মাটির নীচেই ছড়িয়ে থাকে, যাতে অল্প বৃষ্টি হলেই জল দ্রুত শোষণ করে নিতে পারে।
7. পরজীবিতা কাকে বলে? পরজীবীর বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ করো।
উত্তর:
পরজীবিতা (Parasitism) : যেসব প্রজাতি খাদ্য ও আশ্রয়ের জন্য অন্য কোনো প্রজাতির উপর নির্ভরশীল হয় পরিবর্তে আশ্রয়দাতার ক্ষতিসাধন করে, তাকে পরজীবী বলে। যে প্রজাতি নির্ভরশীল তাকে পরজীবী এবং যার ওপর নির্ভরশীল তাকে পোষক (Host) বলে। পোষকের সঙ্গে পরজীবীর নির্ভরশীলতাকে পরজীবিতা (Parasitism) বলে। এটি ধনাত্মক-ঋণাত্মক (+-) সন্নিবেশ।
যেমন — স্বর্ণলতা উদ্ভিদ (Cuscuta reflexa) অন্যান্য উদ্ভিদের ওপর আশ্রয়প্রাপ্ত হয়ে চোষক মুলের সাহায্যে পোষক দেহ থেকে খাদ্য শোষণ করে বেঁচে থাকে। মানুষের অন্ত্রে বসবাসকারী পরজীবী গোলকৃমি (āscaris lumbricoides) মানুষের দেহ থেকে খাদ্য গ্রহণ করে, পরিবর্তে মানবদেহে রোগ সৃষ্টি করে।
পরজীবীর বৈশিষ্ট্য :
(i) পোষক এবং পরজীবী সর্বদাই ভিন্ন প্রজাতির হয়।
(ii) পরজীবী সর্বদাই পোষক অপেক্ষা ক্ষুদ্রতর হয়।
(iii) পরজীবী সর্বদাই পোষকের কাছ থেকে উপকার লাভ করে, পরিবর্তে পোষকের ক্ষতি করে।
(iv) পোষক কখনও কখনও অ্যান্টিবডি তৈরি করে যা পরজীবীর পক্ষে ক্ষতিকারক হয়।
(v) যে সকল পরজীবী পোষক দেহে রোগ সৃষ্টি করে তাদের প্যাথোজেন বলে।
(vi) পরজীবীর প্রজনন হার খুব বেশি হয়।
8. পপুলেশন কাকে বলে? পপুলেশনে জন্মহার সম্পর্কে আলোচনা করো।
উত্তর:
পপুলেশন (Population) : একই স্থানে বসবাসকারী একই প্রজাতিভুক্ত জীবগোষ্ঠী বা খুবই নিকট সম্পর্কিত জীবগোষ্ঠী যাদের মধ্যে জিনের আদান-প্রদান ঘটে তাদের পপুলেশন বলে (Odum, 1971)। পপুলেশনের সকল সদস্যরা সাধারণত একই পরিবারভুক্ত হয়। যেমন—গির জঙ্গলের সিংহের পপুলেশন। পপুলেশন একটি আত্মনিয়ন্ত্রণকারী একক যার মধ্য দিয়ে শক্তির প্রবাহ চলে এবং পুষ্টি পদার্থ চক্রাকারে আবর্তিত হয়ে বাস্তুতন্ত্রকে স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে।
পপুলেশনে জন্মহার (Natality in Population) : পপুলেশনে প্রজাতি সদস্যরা যে হারে সন্তান-সন্ততির জন্ম দেয়, তাকে বলে ন্যাটালিটি। পপুলেশন বৃদ্ধিতে ন্যাটালিটিই প্রধান সহায়ক পথ।
একক সময়ে জননের মাধ্যমে যে সংখ্যায় নতুন সদস্য পপুলেশনে যুক্ত হয়, তাকে ন্যাটালিটি বলে।
ন্যাটালিটির দুটি প্রকারভেদ করা যায়, যেমন—চরম বা সার্বিক ন্যাটালিটি (Absolute or Maximum or Potential Natality) এবং প্রকৃত বা ইকোলজিক্যাল ন্যাটালিটি (Realised or Ecological Natality)।
জননের দ্বারা কোনো পপুলেশন একক সময়ে যে পরিমাণে নতুন সদস্য যোগ করার ক্ষমতা রাখে, তাকে বলে চরম বা সার্বিক ন্যাটালিটি। আদর্শ বাস্তুতান্ত্রিক ও জিনগত অবস্থায় এমন জন্মহার দেখা যেতে পারে।
অপরদিকে, একক সময়ে কোনো পপুলেশন প্রকৃতপক্ষে যে সংখ্যায় নতুন সদস্যদের জন্ম দেয়, তাকে বলে প্রকৃত বা ইকোলজিক্যাল ন্যাটালিটি। কখনও বাস্তুতন্ত্রে সমস্ত অবস্থাই অনুকুল হয় না বলে প্রকৃত ন্যাটালিটি, চরম ন্যাটালিটির থেকে কম হয় ।
জন্মহার নিম্নলিখিত সূত্রের দ্বারা প্রকাশ করা হয় —

9. জলজ উদ্ভিদ এবং প্রাণীদের যেসব অভিযোজন লক্ষ করা যায় সেই সম্বন্ধে উদাহরণসহ লেখো।
উত্তর:
জলজ উদ্ভিদের অভিযোজন :
1. জলজ উদ্ভিদের খুব পাতলা কিউটিকল থাকে বা থাকেনা কারণ কিউটিকল জলের ক্ষতি রোধ করে।
2. পাতার দুপাশে অসংখ্য স্টোমাটা থাকে স্টোমাটা সব সময় খোলা থাকে।
3. এদের গঠন নমনীয় হয়।
4. এদের অক্সিজেন গ্রহণের জন্য বিশেষ মূল রয়েছে।।
5. এদের পাতাগুলি ভাসার সুবিধার জন্য সমতল এবং বায়ুথলি থাকে যা পাতাগুলিকে জলের ওপর ভাসতে সাহায্য করে।
6. এদের মূলগুলি খুব ছোট হয়।
জলজ উদ্ভিদের উদাহরণ : কচুরিপানা, পদ্ম
জলজ প্রাণীদের অভিযোজন :
1. এরা তাদের ফুলকা বা ত্বকের মাধ্যমে অক্সিজেন গ্রহণ করে। সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের ফুসফুস থাকে এবং এদের নিঃশ্বাস নেওয়ার জন্য জলের বাইরে আসতে হয়।
2. এদের রক্ত ঠান্ডা হয় অর্থাৎ এদের শরীরের তাপমাত্রা আশেপাশের পরিবেশের মতোই।
3. এদের বিশেষ ধরনের ফুসফুস এবং পাঁজর থাকে যা এদের অতিরিক্ত উচ্চ জলের চাপ সহ্য করতে সাহায্য করে।
4. অতি গভীরতায় থাকা জলজ প্রাণীরা এক ধরনের আলো নির্গত করে যা তাদের শিকার করতে এবং সঙ্গীকে খুঁজতে সাহায্য করে।
5. জলজ প্রাণীদের এক বিশেষ বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা তাদের জলের ভেতরের পরিবেশে নিজেদের মানিয়ে নিতে সাহায্য করে।
জলজ প্রাণীদের উদাহরণ : মাছ ও কচ্ছপ
10. সহযোগিতা বা মিথোজীবিতা কাকে বলে? সহযোগিতা কত রকমের হয়?
উত্তর:
সহযোগিতা (Cooperation) : যে সহাবস্থানের মাধ্যমে দুটি ভিন্ন প্রজাতির আন্তঃবিক্রিয়ার দ্বারা উভয় প্রজাতি বিশেষভাবে উপকৃত হয় তাকে সহযোগিতা বা মিথোজীবিতা বলে। এটি একপ্রকার ধনাত্মক ধনাত্মক (+ +) বা ধনাত্মক নিরপেক্ষ (+ 0) আন্তঃক্রিয়া। যেমন—লাইকেন নামক একপ্রকার উদ্ভিদ বিশেষ একপ্রকার শৈবাল ও ছত্রাকের সহাবস্থানে সৃষ্টি হয়। ছত্রাক অণুসূত্র বিস্তার করে শৈবালকে রক্ষা করে, বিনিময়ে শৈবাল থেকে খাদ্য গ্রহণ করে।
সহযোগিতার প্রকারভেদ : সহযোগিতা দুই প্রকার। যথা —
(i) বাধ্যতামূলক সহাবস্থান (Obligate cooperation) : যেখানে উভয় প্রজাতির বেঁচে থাকার জন্য পরস্পরের ওপর নির্ভর করে এবং লাভবান হয়, তাকে বাধ্যতামূলক সহাবস্থান বলে। যেমন — লাইকেনে ছত্রাক ও শৈবালের সহাবস্থান এবং উইপোকার পৌষ্টিকনালিতে ট্রাইকোনিমফা নামক প্রোটিস্টা বাস করে, যারা উইপোকার সেলুলোজ পরিপাকে সাহায্য করে।
(ii) স্বেচ্ছাগত সহাবস্থান (Facultative cooperation) : যেখানে সহাবস্থানে অবস্থিত সদস্যরা কারও উপর নির্ভর না করে স্বাধীনভাবে জীবনযাপন করে, তাকে সহাবস্থান স্বেচ্ছাগত বলে। যেমন — চোষক মাছ (Echeneis) হাঙরের তলদেশে চোষক দিয়ে যুক্ত হয়ে চলাচল করে, কিন্তু কেউ কারও ক্ষতি করে না। হারমিট ক্রাবের (কাঁকড়া) পৃষ্ঠদেশে সাগরকুসুম লেগে থাকে। হারমিট ক্রাবের সঙ্গে এরা একস্থান থেকে অন্য স্থানে খাদ্য সংগ্রহের জন্য যেতে পারে।
11. শক্তির উৎস রূপে কয়লা ও খনিজ তেলের ব্যবহারগুলি উল্লেখ করো।
উত্তর:
শক্তির উৎস রূপে কয়লার ব্যবহার : কয়লার মধ্যে শক্তি রাসায়নিক শক্তিরূপে সঞ্চিত থাকে। কয়লাকে পোড়ালে এই রাসায়নিক শক্তির তাপশক্তিতে রুপান্তর ঘটে। এই তাপশক্তি আমাদের বিভিন্ন প্রয়োজনে বিশেষ করে রান্নার কাজে, শিল্পাঞ্চলে, চুল্লীতে, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে, স্টিম উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়।
শক্তির উৎস রূপে খনিজ তেলের ব্যবহার : আজকের দিনে সভ্যতার বিকাশ এবং অর্থনীতির অনেকটাই খনিজ তেল বা পেট্রোলিয়ামের উপর নির্ভরশীল। পৃথিবীর প্রায় অর্ধেক পরিমাণ প্রয়োজনীয় শক্তির জোগান দেয় পেট্রোলিয়াম। পাথরের তলদেশে এই খনিজ সম্পদ তরল অথবা গ্যাসীয় অবস্থায় প্রবাহিত হয়। খনিজ তেল থেকে পেট্রোল, ডিজেল, কেরোসিন, অ্যাভিয়েশন স্পিরিট উৎপন্ন হয়। পেট্রোলিয়াম যান্ত্রিক শক্তি এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রধানত ব্যবহৃত হয়। এছাড়া মোটর, ট্রাক, জাহাজ, এরোপ্লেন চালাতে এবং রাসায়নিক সার, প্লাস্টিক, প্রসাধন সামগ্রী উৎপাদনে পেট্রোলিয়াম এবং তার উপজাত পদার্থগুলি ব্যবহার হয়ে থাকে।
12. বায়ুশক্তি কী? এর ব্যবহারগুলি উল্লেখ করো।
উত্তর:
বায়ুশক্তি : বায়ুর গতিবেগকে কাজে লাগিয়ে যে শক্তি উৎপন্ন করা হয়, তাকে বায়ু শক্তি বলে । সমুদ্রতীরে অথবা মরুভূমি অঞ্চলে যেখানে বায়ুর গতিবেগ বেশি সেখানে বাতাসের গতিবেগ দ্বারা বায়ুকল চালিয়ে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা হয়।
বায়ুশক্তির ব্যবহার : বায়ুশক্তিকে যান্ত্রিক ও বৈদ্যুতিক শক্তিতে রূপান্তরিত করা যায়। বর্তমানে গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকায় জল সরবরাহের কাজে বায়ুশক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। বায়ুশক্তি দ্বারা বায়ুকলের সাহায্যে প্রায় 20,000 MW বিদ্যুৎশক্তি উৎপাদন করা সম্ভব। প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে বায়ুশক্তি জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহারকে কমায় এবং উৎস অঞ্চলে দূষণমুক্ত কম পরিমাণে শক্তির জোগান দেয়। ভারতের গুজরাটে সর্বপ্রথম এর ব্যবহার হয়।
13. বন ধ্বংসের কারণ ও ফলাফল সম্পর্কে উল্লেখ করো।
উত্তর:
বন ধ্বংসের কারণ ও ফলাফল (Deforestation and Consequences) : বন মানুষের সবচেয়ে উপকারী বন্ধু, তথাপি বন ধ্বংসের অন্যতম কারণ মানুষ। কল-কারখানা গড়া, গৃহ নির্মাণ, আসবাবপত্র
নির্মাণ, রেলের স্লিপার তৈরি, ইলেকট্রিক তারের খুঁটি হিসেবে ব্যবহার, ব্রীজ তৈরি, রাস্তা তৈরি, নদীর পাড় নির্মাণ, কাগজ তৈরি, ভেষজ উৎপাদন ইত্যাদি কারণে মানুষ যথেচ্ছভাবে গাছ কাটছে, ফলে ভূমি ক্ষয়, বন্যা, খরা ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটে চলেছে। এতে বন্য প্রাণীদের যেমন আবাসস্থল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মানুষ ও নানাভাবে অসুবিধায় পড়ছে।
অরণ্য ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বন সংরক্ষণ করা একান্তভাবে প্রয়োজন। বৃক্ষছেদন করলে পুনরায় বৃক্ষ রোপণ করতে হবে। চারা গাছের যত্ন নিতে হবে। বনে যাতে আগুন না লাগে সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। বনজ উদ্ভিদ ও প্রাণী মারা গেলে অরণ্যের বাস্তুতন্ত্র ধ্বংস হয়ে যাবে, যার ফলভোগ করতে হবে মানুষকে।
14. খাদ্য উৎপাদনে মৎস্যচাষের ভূমিকা উল্লেখ করো।
উত্তর:
খাদ্য উৎপাদনে মৎস্যচাষের ভূমিকা : যে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মাছের প্রজনন, পালন, সংরক্ষণ ও প্রয়োজনে ব্যবহার করা হয়, তাকে মৎস্যচাষ বা ফিসারি বলে।
মানুষ তার দৈহিক প্রয়োজনে প্রোটিনের 75 শতাংশ প্রাণীজ প্রোটিন থেকে সংগ্রহ করে থাকে। আবার প্রাণীজ প্রোটিনের বেশিরভাগটাই আসে মাছ থেকে। তবে ভারতবর্ষে চাহিদা অনুযায়ী মাছের সরবরাহ অনেক কম। শুধু পশ্চিমবঙ্গে যেখানে 1500 লক্ষ টন মাছের প্রয়োজন সেখানে প্রায় ৪০০ লক্ষ টনের বেশি সরবরাহ হয় না। তাই আমাদের দেশে বর্তমানে আধুনিক বৈজ্ঞানিক প্রথায় মাছের চাষ শুরু হয়েছে।
অধুনা মাছচাষ বলতে বর্তমানে কেবল মাছের চাষ বোঝায় না, চিংড়ি, কাঁকড়া, ঝিনুক, গুগলি, ডলফিন প্রভৃতি প্রাণীদের চাষকেও বোঝায় ৷
আজকাল সাবেকি প্রথায় মাছ চাষের পরিবর্তে উন্নত প্রথায় মাছ চাষ করা হয়। প্রণোদিত প্রজননের সাহায্যে বিশুদ্ধ নিষিক্ত ডিম সংগ্রহ করা হয়।
এই সংগৃহিত ডিম হ্যাচারিতে রেখে ডিম পোনা সৃষ্টি করে অগভীর আঁতুর পুকুরে 1 মাস ধরে চাষ করার পর মাছগুলিকে অপেক্ষাকৃত বড়ো পালন পুকুরে ছাড়া হয়। পালন পুকুরে তিনমাস পালন করার পর মাছগুলিকে সঞ্চয়ী পুকুরে ছাড়া হয়। সঞ্চয়ী পুকুরে এক বছর পালন করার পর মাছগুলি খাদ্যযোগ্য মাছে পরিণত হলে তাদের বাজারজাত করা হয়। মাছ চাষ করার সময় পুকুরে চুন দেওয়া, সার দেওয়া, নিয়মিত মাছের খাবার দেওয়া,পুকুরে জাল টানা দরকার।
এখন বড়ো আকারের সঞ্চয়ী বা মজুত পুকুরে তিন জাতের দেশি পোনার (রুই, কাতলা, মৃগেল) সঙ্গে তিনজাতের বিদেশি পোনা (রজত রুই, ঘেঁসো রুই এবং আমেরিকান রুই) চাষ করে প্রভূত উৎপাদন বাড়ানো হয়।
আরো পড়ুন
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।