Class 11 Class 11 Education শৈশবকালে সামাজিক ও প্রাক্ষোভিক বিকাশ কীভাবে ঘটে | প্রাথমিক শিক্ষার উন্নতিকল্পে অঙ্গনওয়াড়ির অবদান লেখো

শৈশবকালে সামাজিক ও প্রাক্ষোভিক বিকাশ কীভাবে ঘটে | প্রাথমিক শিক্ষার উন্নতিকল্পে অঙ্গনওয়াড়ির অবদান লেখো

শৈশবকালে সামাজিক ও প্রাক্ষোভিক বিকাশ কীভাবে ঘটে | প্রাথমিক শিক্ষার উন্নতিকল্পে অঙ্গনওয়াড়ির অবদান লেখো

উত্তর:

শৈশবকালে সামাজিক বিকাশ যেভাবে ঘটে :

শৈশবকাল বলতে ভূমিষ্ঠ হওয়ার সময় থেকে 6 বছর বয়স পর্যন্ত স্তরটিকে বােঝায়। এই স্তরের বেশিরভাগ সময় কাটে গৃহ পরিবেশে এবং কিছুটা সময় কাটে প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। শৈশবের শুরুতে শিশু থাকে পুরােপুরি আত্মকেন্দ্রিক। একমাস বয়সের শিশুরা নিকটে থাকা বয়স্ক ব্যক্তিদের সম্পর্কে সচেতন থাকে। তারা দু-মাস বয়সে মৃদু হাসি দিয়ে প্রতিক্রিয়া জানায়। ওই বয়সে তারা ‘মা’-কেও চিনতে পারে। শিশুর তিন মাস বয়সের সময় কেউ তার সঙ্গে কথা বললে বা অঙ্গভঙ্গি করলে সে চুপচাপ থাকে বা হাসে কিন্তু ওই ব্যক্তি চলে গেলেই শিশু কাঁদতে শুরু করে। শিশু পাঁচ-ছয় মাস বয়সে পৌঁছেলে আদর ও বকাবকির মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পারে। নতুন কোনাে লােক তাকে নিতে চাইলে, সে বিরক্তবােধ করে। তার কাছে যেতে চায় না। শিশু ধীরে ধীরে আট নয় মাস বয়সে পৌছেলে বড়ােদের কথা অনুসরণ করতে শুরু করে। এমনকি ‘না’ শব্দের অর্থও বুঝতে পারে। শিশুর বয়স প্রায় দেড় বছর মতাে হলে, তার মধ্যে একটি নেতিবাচক মনােভাব লক্ষ করা যায়। এই বয়সে তারা তাদের সমবয়সিদের তুলনায় বড়ােদের বেশি পছন্দ করে। শিশু দু-বছর বয়স পৌছােলে তাদের মধ্যে সত্যিকারের সামাজিক চেতনা আসতে শুরু করে। এই সময় থেকেই তাদের মধ্যে সহযােগিতা ও সহানুভূতির গুণগুলি বিকশিত হতে শুরু করে। এইভাবে ধীরে ধীরে শিশুর শৈশবে সামাজিক বিকাশ ঘটতে থাকে।

শৈশবকালে প্রাক্ষোভিক বিকাশ যেভাবে ঘটে :

মনােবিজ্ঞানীদের মতে শিশুর প্রাক্ষোভিক বিকাশ প্রায় তিন মাস বয়সের সময় শুরু হয়। ওই সময় থেকেই শিশু আনন্দ ও অস্বাচ্ছন্দ্য বিষয়গুলি অনুভব করতে শুরু করে। শিশু আর একটু বড়াে হলে অর্থাৎ শিশুর বয়স প্রায় ছয় মাস হলে, তার মধ্যে আনন্দের প্রক্ষোভটি উচ্ছ্বাসে এবং অস্বাচ্ছন্দ্যের প্রক্ষোভটি বিরক্তি হিসেবে প্রকাশ পায়। শিশুর প্রক্ষোভের স্থায়িত্ব খুব কম হলেও এর তীব্রতা কিন্তু বেশি হয়। শিশুরা তাদের প্রাক্ষোভিককে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। অনেক ক্ষেত্রেই তারা অস্বাচ্ছন্দ্যের প্রক্ষোভটিকে কান্নার মাধ্যমে প্রকাশ করে।

প্রাথমিক শিক্ষার উন্নতিকল্পে অঙ্গনওয়াড়ির অবদান :

শিক্ষার প্রথম স্তর হল প্রাথমিক শিক্ষা। সাধারণত 5+ বছর বয়সে শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষার জন্য বিদ্যালয়ে পাঠানাে হয়। কিন্তু বর্তমানে সারা পৃথিবীতে প্রাথমিক শিক্ষার আগে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষাস্তর চালু হয়েছে। এটিকে শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তর হিসেবেও বিবেচনা করা হচ্ছে। আমাদের দেশের কোঠারি শিক্ষা কমিশন (1964–1966) এবং জাতীয় শিক্ষানীতি (1986)-তে প্রাক্‌-প্রাথমিক শিক্ষার গুরুত্বকে স্বীকার করা হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষার উন্নতিকল্পে ভারত সরকার 1975 খ্রিস্টাব্দে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের মাধ্যমে গ্রামাঞল, শহরাঞল ও উপজাতি অধ্যুষিত অঞলের 6 বছরের কমবয়সি দরিদ্র শিশুদের জন্য স্বাস্থ্য-পরিষেবা, পুষ্টিবিষয়ক সহায়তা এবং শিক্ষাদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। প্রত্যেকটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে স্থানীয় কোনাে মহিলাকর্মীকে দায়িত্বভার অর্পণ করা হয়েছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত মহিলারা নিজের কেন্দ্রের 3 থেকে 6 বছর বয়সি দরিদ্র শিশুদের প্রথাবহির্ভূত শিক্ষাদানের দায়িত্ব পালন করে থাকেন।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment

error: Content is protected !!