প্রিয় ছাত্রছাত্রীরা এই আর্টিকেলে আমরা Class 7 এর দিন ফুরোলে কবিতার প্রশ্ন উত্তর নিয়ে এসেছি। তোমাদের সপ্তম শ্রেনীর পাঠ্যবইতে শঙ্খ ঘোষের লেখা দিন ফুরোলে কবিতা রয়েছে। কবিতার শেষে যে সব প্রশ্নপত্র গুলি রয়েছে তার সমাধান আমরা এখানে করে দিলাম। আশা করি সবার ভালো লাগবে।
দিন ফুরোলে
শঙ্খ ঘোষ
১. কবিতাটিতে ‘চ্ছ’ দিয়ে কতগুলি শব্দ আছে লেখো, প্রত্যেকটি শব্দ ব্যবহার করে একটি করে আলাদা বাক্য লেখো।
উত্তর: ইচ্ছেয় – নিজের ইচ্ছেয় আমি খেলতে এসেছি।
দুচ্ছাই – দুচ্ছাই! খেলতে এলেই বৃষ্টি নামে।
মুচ্ছো – অন্ধকারে বাগান পেরিয়ে আসতে গিয়ে ভয়ে মুচ্ছো যাবার জোগাড়।
গুচ্ছে – ধানের গুচ্ছে হাওয়া দোলা দিয়ে যায়।
আচ্ছা – আচ্ছা, তবে তাই হোক ৷
কুচ্ছিৎ – ধুলো মেখে পা দুটো কুচ্ছিৎ হয়ে আছে।
ধুচ্ছি – মায়ের সাহায্য করার জন্য কেটে রাখা সবজি ধুচ্ছি।
২. নীচের ছকটি সম্পূর্ণ করো :

উত্তর: সূর্য > সূয্যি
দুরছাই >দুচ্ছাই
মূর্চ্ছা > মুচ্ছো
অন্ধকার > আঁধার
কুৎসিত > কুচ্ছিৎ
সন্ধ্যা > সন্ধে
৩. ‘লক্ষ’ শব্দটিকে দুটি পৃথক অর্থে ব্যবহার করে দুটি পৃথক বাক্য লেখো। ‘লক্ষ্য’ শব্দটির সঙ্গে এই দুটি অর্থের পার্থক্য দেখিয়ে আরও একটি নতুন বাক্য লেখো।
উত্তর: লক্ষ (শত সহস্র)- ব্যাগে এক লক্ষ টাকা আছে ৷
লক্ষ (খেয়াল) – শিশুটির দিকে লক্ষ রেখো।
লক্ষ্য (উদ্দেশ্য) – আমার লক্ষ্য শিক্ষক হওয়া।
৪. এক গঙ্গা জল’ – শব্দবন্ধটির মানে ‘গঙ্গায় যত জল ধরে সব’ অর্থাৎ কিনা অনেকখানি জল। নীচের স্তম্ভদুটির ডানদিক ও বামদিক ঠিকভাবে মেলাতে পারলে আরো কিছু এরকম শব্দবন্ধ তৈরি করতে পারবে।
উত্তর:
এক মাথা | ধুলো |
এক ক্লাস | ছাত্র |
এক আকাশ | তারা |
এক ঘর | লোক |
এক কাঁড়ি | টাকা |
এক ঝুড়ি | আম |
এক হাঁড়ি | পায়েস |
এক মুঠো | চিনি |
এক মুখ | হাসি |
এক কাহন | ধান |
৫. নীচের বিশেষ্যগুলির আগে উপযুক্ত বিশেষণ বসিয়ে বাক্যরচনা করো :
সূয্যি, দৃশ্য, বাক্স, বাপ-মা, গর্ত, ঠ্যাং, গাদা, ঘর, ধান, জল।
উত্তর: ডুবন্ত সূয্যি – ডুবন্ত সূয্যির আলো ম্লান হয়ে এসেছে।
চমৎকার দৃশ্য – চমৎকার দৃশ্য দেখে সকলে মুগ্ধ হলাম ।
ছোট বাক্স – ছেলেটির হাতে একটি ছোট বাক্স ।
ভালো বাপ-মা – ভাগ্য করে ভালো বাপ – মা পেয়েছি।
গভীর গর্ত – বাড়ির পিছনে রয়েছে গভীর গর্ত।
লম্বা ঠ্যাং – বাবুয়া লম্বা ঠ্যাং ঝুলিয়ে গাছের ডালে বসে আছে।
খড়ের গাদা – খড়ের গাদায় আগুন লেগেছে।
নোংরা ঘর – নোংরা ঘরে বসবাস করা অস্বাস্থ্যকর।
সোনালী ধান – সোনালী ধানে মাঠ ভরে আছে।
ঠান্ডা জল – শীতে ঠান্ডা জলে স্নান করা ভারী কষ্ট ।
৬. নীচের শব্দগুলির সমার্থক শব্দ কবিতা থেকে খুঁজে বের করো :
বারি, অরুণ, অম্বর, পেটিকা, অজ্ঞান, গোছা, বিষাদ, কন্দর, পা, বিশ্রী।
উত্তর: বারি – জল, অরুণ – সুয্যি, অম্বর – আকাশ, পেটিকা – বাক্স, অজ্ঞান – মুচ্ছো, গোছা – গুচ্ছ, বিষাদ – মন খারাপ, কন্দর – গর্ত, পা – ঠ্যাং, বিশ্রী – কুচ্ছিৎ
৭. নীচের শব্দগুলির বিপরীতার্থক শব্দ কবিতা থেকে খুঁজে নাও :
ভালো, মিথ্যা, বাইরে, বুড়ো, সুশ্রী।
উত্তর: ভালো – খারাপ
মিথ্যা – সত্যি
বাইরে – ঘরে
বুড়ো – বাচ্চা
সুশ্ৰী – কুচ্ছিৎ
৮. কারক ও বিভক্তি নির্ণয় করো :
৮.১ চমকে দেবেন লক্ষ রঙের দৃশ্যে।
উত্তর: করণকারকে ‘এ’ বিভক্তি।
৮.২ বাপ মায়েরা যাবেই তবে মুচ্ছো।
উত্তর: কর্তৃকারকে ‘এরা’ বিভক্তি।
৮.৩ কেই বা খুলে দেখছে রঙের বাক্স।
উত্তর: সম্বন্ধ পদ ‘এর’ বিভক্তি।
৮.৪ নিজের নিজের মন খারাপের গর্তে।
উত্তর: অধিকরণকারকে ‘এ’ বিভক্তি।
৮.৫ এক গঙ্গা জল দিয়ে তাই ধুচ্ছি।
উত্তর: কর্মকারকে ‘শূন্য’ বিভক্তি।
৯. এক কথায় উত্তর দাও :
৯.১ সূয্যি ডুবে যাওয়ায় কথকরা ‘দুচ্ছাই’ বলছে কেন ?
উত্তর: শঙ্খ ঘোষ রচিত ‘দিন ফুরোলে’ কবিতায় সূয্যি ডুবে যাওয়ায় কথকরা ‘দুচ্ছাই’ বলে বিরক্ত প্রকাশ করেছেন। কারণ, সন্ধ্যা নেমে আসায় এখন তাদের খেলার মাঠ ছেড়ে নিজের নিজের বাড়ি ফিরতে হবে।
৯.২ কে এক্ষুণি আকাশ জুড়ে লক্ষ রঙের দৃশ্যে চমকে দেবেন?
উত্তর: শঙ্খ ঘোষ রচিত ‘দিন ফুরোলে’ কবিতায় এক ঈশ্বর এক্ষুণি আকাশ জুড়ে লক্ষ রঙের দৃশ্যে চমকে দেবেন।
৯.৩ কথকরা কেন সেই দৃশ্য দেখতে পাবে না?
উত্তর: শঙ্খ ঘোষ রচিত ‘দিন ফুরোলে’ কবিতায় কথকদের সন্ধ্যা নামার সাথে সাথেই খেলার মাঠ ছেড়ে বাড়ি ফিরে যেতে হবে। তাই তারা আকাশে লক্ষ রঙের দৃশ্য দেখতে পাবে না ।
৯.৪ কথকরা কেন বলেছে, ‘কেই বা খুলে দেখছে রঙের বাক্স!’?
উত্তর: শঙ্খ ঘোষ রচিত ‘দিন ফুরোলে’ কবিতায় কথক জানিয়েছেন সূর্য ডুবে গেছে। এক্ষুনি এক ঈশ্বর আকাশ জুড়ে লক্ষ রঙের দৃশ্যে চমকে দেবেন। কিন্তু কথকরা আকাশে দৃশ্যমান সেই রঙের বাক্স খুলে দেখতে পারবে না। কারণ সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় তাদের সবাইকে বাড়িতে ফিরতে হবে।
৯.৫ বাপ মায়েরা কী হলে ‘মুচ্ছো’ যাবেন?
উত্তর: শঙ্খ ঘোষ রচিত দিন ফুরোলে কবিতায় কথকরা যদি সন্ধ্যা নামার পরও বাড়ি না ফেরে তবে চিন্তায় বাপ মায়েরা মুচ্ছো যাবেন।
৯.৬ পাখিরা কোথা থেকে কোথায় উড়ে যায় ?
উত্তর: শঙ্খ ঘোষ রচিত ‘দিন ফুরোলে’ কবিতায় পাখিরা ধানের গুচ্ছের ওপর দিয়ে নিজেদের ঘরের দিকে উড়ে যায় ৷
৯.৭ কথকরা কেন বলেছে তাদের ‘নিজের নিজের মনখারাপের গর্তে’ ফিরতে হবে?
উত্তর: শঙ্খ ঘোষ রচিত ‘দিন ফুরোলে’ কবিতায় সূর্য ডোবার সাথে সাথে যখন সন্ধ্যা নামে তখনই কথকদের খেলার মাঠের আনন্দ ভঙ্গ করে বাড়ির দিকে ফিরতে হয়। খেলার মাঠ তাদের কাছে অফুরন্ত খুশির এক অন্যতম জায়গা। তারা খেলা শেষ না করতে চাইলেও সন্ধ্যা নামার কারণে বাধ্য হয়েই তাদের বাড়ি ফিরে যেতে হয়। বাড়িতে তারা ইচ্ছে মতো আনন্দে মেতে উঠতে পারে না। সেখানে গুরুজনদের কড়া শাসনে তাদের সময় কাটে। একারণে বাড়িকে তাদের ‘মন খারাপের গর্ত’ মনে হয় ৷
৯.৮ বাবা কী বলবেন?
উত্তর: শঙ্খ ঘোষ রচিত ‘দিন ফুরোলে’ কবিতায় খেলার মাঠ ছেড়ে দেরি করে বাড়ি ফিরলে বাবা বলবেন, এইটুকু সব বাচ্ছারা, দিন ফুরোলেও মাঠ ছাড়ে না, অতএব ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
৯.৯ মা-ই বা বাড়ি ফিরলে কী বলবেন?
উত্তর: শঙ্খ ঘোষ রচিত ‘দিন ফুরোলে’ কবিতায় কথক দেরি করে বাড়ি ফিরলে মা বলবেন, “ঠ্যাং দুটো কী কুচ্ছি।”
৯.১০ কথকরা কেন ‘এক গঙ্গা জল দিয়ে’ পা ধুচ্ছে?
উত্তর: শঙ্খ ঘোষ রচিত ‘দিন ফুরোলে’ কবিতায় কথকরা খেলার মাঠ থেকে বাড়ি ফিরেছে, তাদের পা কুৎসিত হয়ে গেছে তাই তারা এক গঙ্গা অর্থাৎ অনেক জল দিয়ে পা ধুয়ে পরিষ্কার করছে।
১০. ব্যাখ্যা করো :
১০.১ “সূয্যি নাকি……. ডুব দিয়েছে?”
উত্তর: শঙ্খ ঘোষ রচিত ‘দিন ফুরোলে’ কবিতা থেকে আলোচ্য তাৎপর্যপূর্ণ উদ্ধৃতিটি নেওয়া হয়েছে। সূর্য ডুবে গিয়ে সন্ধ্যা নামায় কথক ও তার সঙ্গীদের খেলার সময় শেষ। এবারে তাদের নিজেদের মন খারাপের গর্ত অর্থাৎ বাড়ির চার দেওয়ালের বদ্ধ জীবনে প্রবেশ করতে হবে। কথকদের তাই মনে হয় সূর্যটা যেন একটু ইচ্ছে করেই আগে আগে অস্ত গেছে। তাই কথকরা ‘দুচ্ছাই’ বলে বিরক্তি প্রকাশ করেন।
১০.২ “আকাশ জুড়ে……. লক্ষ রঙের দৃশ্য।”
উত্তর: শঙ্খ ঘোষ রচিত ‘দিন ফুরোলে’ কবিতা থেকে আলোচ্য তাৎপর্যপূর্ণ উদ্ধৃতিটি নেওয়া হয়েছে। সূর্য ডুবে গিয়ে সন্ধ্যা নামায় কথকদের এবার খেলার মাঠ ছেড়ে বাড়ি ফিরতে হবে। তবে কথকদের বিশ্বাস সন্ধেবেলা তারা খেলার মাঠ থেকে ঘরে ফেরার পরেই এক ঈশ্বর লক্ষ রঙের দৃশ্যে আকাশটা চমকে দেবে। অথচ কথকরা কেউই সে দৃশ্য দেখতে পাবে না। কারণ সন্ধ্যা নেমে যাওয়ায় তাদের বাড়ি ফিরতে হবে।
১০.৩ “লক্ষ, বা তা হতেও পারে………রঙের বাক্স!”
উত্তর: শঙ্খ ঘোষ রচিত ‘দিন ফুরোলে’ কবিতা থেকে আলোচ্য তাৎপর্যপূর্ণ উদ্ধৃতিটি নেওয়া হয়েছে। কবিতার কথকরা বিশ্বাস করে সন্ধ্যা নামার পরেই এক ঈশ্বর লক্ষ রঙের দৃশ্যে আকাশটা চমকে দেবেন। কথক বলেন লক্ষ না হয়ে একশো রঙের দৃশ্যও হতে পারে। তবে সেই রঙের বাক্স খুলে কেউই মেলাতে পারবে না। কারণ, সন্ধ্যা নেমে যাওয়ায় কথকদের বাড়ি ফিরতে হবে ।
১০.৪ “আমরা কি আর ……. ..যাবেই তবে মুচ্ছো।”
উত্তর: শঙ্খ ঘোষ রচিত ‘দিন ফুরোলে’ কবিতা থেকে আলোচ্য তাৎপর্যপূর্ণ উদ্ধৃতিটি নেওয়া হয়েছে। কবিতায় দেখা যায় সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গেই এক ঈশ্বর লক্ষ রঙের দৃশ্যে আকাশটা চমকে দেবেন৷ কিন্তু সে দৃশ্য দেখতে গেলে সন্ধ্যার পরও কথকদের খেলার মাঠে থাকতে হবে। আর কথকরা যদি সন্ধ্যা নামার পরও বাড়ি না ফিরে খেলার মাঠে থাকে তবে মা – বাবা তাদের জন্য চিন্তা করে মুচ্ছো যাবে অর্থাৎ অজ্ঞান হয়ে যাবে।
১১. আট-দশটি বাক্যে উত্তর দাও :
১১.১ কবিতাটি অবলম্বনে তোমার দেখা একটি গোধূলির রূপ বর্ণনা করো।
উত্তর: আমি একজন সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। আমার বাড়ি গ্রামে। গ্রামে গোধূলির রূপের দৃশ্য অসাধারণ। বিকেলে যেদিন বন্ধুদের সাথে মাঠে ফুটবল খেলতে যাই সেদিন দেখি ধীরে ধীরে বেলা গড়িয়ে লাল টকটকে সূর্য অস্ত যেতে থাকে পশ্চিম আকাশে। সমস্ত আকাশ লাল আভাযুক্ত হয়ে ওঠে। পাখিরা সারিবদ্ধভাবে বাসার দিকে উড়ে যায়। অন্ধকার নামার আগে আলো ও ছায়ার এক মায়াবী পরিবেশ সৃষ্টি হয়। রাখাল গোরু নিয়ে বাড়ি ফেরে। কৃষকরা আল পথ ধরে যে যার বাড়ি ফিরে যায়। নদীর জলে অস্তগামী লাল সূর্যের প্রতিবিম্ব ফুটে ওঠে। সব মিলিয়ে গ্রাম্য পরিবেশে গোধূলির রূপ অসাধারণ।
১১.২ কবিতাটিতে ছোটো ছেলেমেয়েদের কাদের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে? সন্ধেবেলায় ঘরে ফেরাকে ‘মনখারাপের গর্তে’ ফেরা বলে কেন মনে হয়েছে? খেলা থেকে সন্ধেবেলা বাড়ি ফেরার দুঃখ নিয়ে তোমার অনুভূতি লেখো।
উত্তর:- শঙ্খ ঘোষ রচিত ‘দিন ফুরোলে’ কবিতাটিতে ছোটো ছেলেমেয়েদের পাখির সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।
ঘরে ফেরাকে ‘মন খারাপের গর্ত’ বলা হয়েছে কারণ, শিশুরা খেলার মাঠে বন্ধুদের সাথে খেলতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য ও আনন্দ অনুভব করে। ঘরে গুরুজনদের শাসনে বদ্ধ পরিবেশে তারা তেমন আনন্দ পায়না। একারণে, খেলার মাঠ ছেড়ে শিশুদের ঘরে ফেরাকে ‘মন খারাপের গর্তে’ ফেরা বলে মনে হয়েছে।
খেলা ছেড়ে সন্ধ্যাবেলা বাড়ি ফিরতে আমার একদমই ভালো লাগেনা। কারণ, বাড়ি ফিরে আবার রোজকার মতো পড়াশোনা করতে হয়, হোমওয়ার্ক করতে হয়। ঠিকমতো না করলে বাবা – মায়ের বকুনি শুনতে হয়। নিজের ইচ্ছেমতো সময় কাটানো যায় না। গুরুজনদের কড়া শাসনে সময় কাটাতে হয় তাই বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামলে খেলার মাঠ ছেড়ে বাড়ি ফিরতে মন চায় না।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।