“একেই বলে অদৃষ্টের চালে চলা।”– ‘কর্তার ভূত’ রচনা অবলম্বন করে এই ‘অদৃষ্টের চালে চলা’র তাৎপর্য বিশ্লেষণ করাে। Mark 5 | Class 11
উত্তর:- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘কর্তার ভূত’ রচনায় আমরা দেখি যে, বুড়াে কর্তা মারা গেলেও দেবতার দয়ায় তার ভূত দেশবাসীর ঘাড়ে চেপে বসে রইলেন। বেশিরভাগ দেশবাসী এতে নিশ্চিন্ত নিরুদবিগ্ন হলেও কয়েকজন মানুষ এ ব্যাপারটা ভালাে চোখে দেখলেন না। ফলে তাঁরা ভূতের কানমলা খেলেন এবং নিরস্ত হলেন। অতঃপর দেশসুদ্ধ লােক ভূতে-পাওয়া অবস্থায় চোখ বুজে জীবন কাটাতে লাগলেন। দেশের তত্ত্বজ্ঞানীরাও দেশবাসীর এই আচরণকে সমর্থন করলেন।
দেশের তত্ত্বজ্ঞানসম্পন্ন মানুষেরা বললেন যে, ‘চোখ বুজে চলাই’ হল পৃথিবীর অতি প্রাচীন চলন—এই চলাকেই বলে নিয়তির নিয়মে চলা। বিশ্বসৃষ্টির প্রথম যুগে অন্ধ এককোশী জীবেরা তেমনভাবেই চলত, ঘাস থেকে শুরু করে সমস্ত প্রকারের উন্নত বৃক্ষের মধ্যে তেমনই চলার ইঙ্গিত স্পষ্ট। এই কথাগুলির রূপকাৰ্থ হল এই যে, ধর্মতন্ত্রকে অনুসরণ করে অন্ধের মতাে এগিয়ে চলাই মানুষের আদিম চলন। নিয়তির কাছে, ভাগ্যের কাছে নিজের কর্তব্যবুদ্ধি ও বিবেকবুদ্ধিকে সঁপে দেওয়াই হল ধৰ্মৰ্তন্ত্র নির্দেশিত পথে প্রশ্নাতীত অন্ধ আনুগত্য নিয়ে চলা। এটিই হল ‘অদৃষ্টের চালে চলা এবং চোখ বুজে চলা’, যার কথা তত্ত্বজ্ঞানীরা বলেছেন।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।