উত্তর: প্রথম অংশ : স্থানীয় কৃষক আন্দোলনে সফলভাবে নেতৃত্ব দানের মাধ্যমে ভারতের জাতীয় আন্দোলনের শীর্ষ নেতা মােহনদাস। করমচাদ গান্ধির রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়েছিল। এইরকম দুটি উল্লেখযােগ্য আন্দোলন ছিল চম্পারণ ও খেদার কৃষক আন্দোলন।
চম্পারণ আন্দোলন : রাসায়নিক পদ্ধতিতে কৃত্রিম নীল আবিষ্কারের পর ভারতে নীলচাষ উঠে গেলেও বিহারের চম্পারণসহ বিভিন্ন এলাকায় ‘তিনকাঠিয়া’ (২০ কাঠার মধ্যে ৩ কাঠা বা জমির ৩/২০ অংশ) প্রথায় নীলচাষ করা হত। তাই চম্পারণে বলপূর্বক নীলচাষ করানাে এবং নীলকর সাহেবদের অকথ্য অত্যাচারের বিরুদ্ধে নীলচাষিরা স্থানীয় নেতাদের নেতৃত্বে আন্দোলন গড়ে তুলেছিল।
গান্ধিজির যােগদান : চম্পারণের কয়েকজন মানুষের। আবেদনে গান্ধিজি রাজেন্দ্র প্রসাদ, আচার্য কৃপালনী, মহাদেব দেশাই প্রমুখ তরুণ জাতীয়তাবাদী নেতাকে সঙ্গে নিয়ে চম্পারণে পৌছান (১৯১৭ খ্রি.)। সেখানে পৌছে তিনি কৃষকদের দুর্দশা ও নীলকরদের অত্যাচার সম্পর্কে অনুসন্ধান শুরু করেন।
এভাবে নীলচাষিদের স্বার্থরক্ষার জন্য ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে গান্ধিজি যে সত্যাগ্রহ শুরু করেছিলেন, তা চম্পারণ সত্যাগ্রহ নামে পরিচিত। এই সত্যাগ্রহের চাপেই সরকার ওই বছরই চম্পারণ কৃষি বিল’ পাস করে এবং তিনকাঠিয়া প্রথা তুলে দেয়।
চম্পারণের গুরুত্ব : ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদারের মতে, চম্পারণের আন্দোলনের ফলে কৃষকদের মনােবল বৃদ্ধি পায় এবং গান্ধিজির খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। এই আন্দোলনের সাফল্য জাতীয় রাজনীতিতে কৃষকদের গুরুত্ব বৃদ্ধি করে।
দ্বিতীয় অংশ : খেদা সত্যাগ্রহ : গুজরাটের খেদা জেলার। কৃষকদের নিয়ে রাজস্ব বৃদ্ধির প্রতিবাদে ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে গান্ধিজি খেদা সত্যাগ্রহ শুরু করেন। এখানকার কৃষকরা ধান ও গমচাষের পাশাপাশি তামাক ও তুলােচাষ করত। ব্যাপক মূল্যবৃদ্ধির কারণে কৃষকদের খাজনা হ্রাসের দাবিতে সরকার সাড়া না দেওয়ায় গান্ধিজি ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে মােহনলাল পান্ডা, বল্লভভাই প্যাটেল, ইন্দুলাল। যাজ্ঞিক প্রমুখ নেতাকে নিয়ে খেদার কৃষকদের একত্রিত করে বয়কট সত্যাগ্রহ শুরু করে। এর ফলে খাজনা দেওয়ার জন্য কৃষকদের ওপর চাপ বন্ধ হয়।
গুরুত্ব : ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদারের মতে, খেদা। আন্দোলন একটি আঞ্চলিক আন্দোলন হলেও তা ভারতীয় স্বাধীনতা। সংগ্রামের ক্ষেত্রে চরিত্রগত পরিবর্তন আনে। অধ্যাপিকা জুডিথ। ব্রাউনের মতে, মহাত্মা গান্ধি এই আন্দোলনের মাধ্যমে গ্রামের নিরক্ষর কৃষকের সঙ্গে শহরের মধ্যবিত্ত শ্রেণির সঙ্গে যােগসূত্র রচনা করেছিল।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।