হিমালয় পর্বতমালা সৃষ্টির কারণ আলােচনা করাে। Class 10 | Geography | 5 Marks
উত্তর:-
হিমালয় পর্বতমালা সৃষ্টির কারণ :
হিমালয় পর্বতমালার উৎপত্তি বা সৃষ্টির কারণ দুইভাবে বা ব্যাখ্যা করা যায়— 1. মহীখাত বা জিওসিনক্লাইন তত্ত্ব অনুসারে এবং 2. পাত-গাঠনিক বা প্লেট টেকটনিক তত্ত্ব অনুসারে।
1. মহীখাত তত্ত্ব: 1. এখন যেখানে হিমালয়ের অবস্থান, প্রায় 6.5 থেকে 7 কোটি বছর আগে সেখানে একটি অগভীর সাগর ২ মহীখাত (geosyncline) ছিল, যার নাম টেথিস সাগর বা টেথিস জিওসিনক্লাইন। 2. টেথিস সাগরের উত্তরে আঙ্গারাল্যান্ড এবং দক্ষিণে গন্ডােয়ানাল্যান্ড নামে দুটি প্রাচীন ভূভাগ ছিল। 3. এই ভূভাগ দুটিতে প্রবাহিত অসংখ্য নদনদীবাহিত পলি দ্বারা টেথিস সাগর ক্রমশ ভরাট হয়ে যায়। 4. টার্শিয়ারি যুগে ভূ-আন্দোলনের ফলে ওই ভূভাগ দুটি পরস্পরের কাছাকাছি আসতে থাকলে টেথিস সাগরে সঞ্চিত প্রস্তরীভূত পাললিক শিলাস্তরে প্রচণ্ড পার্শ্বচাপ পড়ে। এর ফলে ওই শিলাস্তরে ভঁজের সৃষ্টি হয় ও তা ধীরে ধীরে ওপরে উঠে পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতমালা হিমালয়ের সৃষ্টি করে।

2. পাত-গাঠনিক তত্ত্ব: 1. পর্বত গঠন সম্পর্কিত সর্বাধুনিক এই তত্ত্ব অনুসারে ভূত্বক কতকগুলি চলমান পাত বা প্লেটের সমন্বয়ে (7টি প্রধান ও 20টি অপ্রধান) গঠিত। এগুলির মধ্যে ভারতীয় পাত এবং ইউরেশীয় পাতের সংঘর্ষের ফলেই হিমালয় পর্বতমালার সৃষ্টি হয়েছে।

2. পরস্পরের দিকে অগ্রসরমান অধিক গতিশীল ভারতীয় পাতের সঙ্গে ধীরগামী ইউরেশীয় পাতের প্রবল সংঘর্ষ হয়। এই সংঘর্ষের ফলে অপেক্ষাকৃত ভারী ভারতীয় পাতটি ভূগর্ভে ইউরেশীয় পাতের তলদেশে প্রবেশ করে। এর ফলে উভয় পাতের মধ্যবর্তী টেথিস মহীখাতে সঞ্চিত স্তরীভূত পলিরাশিতে প্রবল চাপ পড়ে। এই চাপের ফলে ভাঁজের সৃষ্টি হয়ে হিমালয় পর্বতের উত্থান ঘটে। অন্যদিকে, ইউরেশীয় পাতের সম্মুখভাগ তিব্বত মালভূমি হিসেবে উঁচু হয়ে অবস্থান করে। 3. ভারতীয় পাতটি এখনও প্রতি বছর প্রায় 5.4 সেমি হারে উত্তর দিকে এগিয়ে চলেছে। তাই হিমালয় অঞলে পাতজনিত সংঘর্ষ প্রক্রিয়াও এখনও কার্যকরী আছে। এর ফলে বর্তমানেও হিমালয়ের উত্থান ঘটে চলেছে।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।