অথবা, ‘হতােম পেঁচার নকশা ইতিহাসে স্মরণীয় কেন?
উনিশ শতকের বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে এক অমূল্য সম্পদ হুতােম পেঁচার নকশা। সমকালীন কলকাতা তথা বাংলার তৎকালীন সমাজ এবং বাঙালিয়ানার বিষয় কালপ্রসন্ন সিংহ-র ‘হুতােম পেঁচার নকশায় ব্যঙ্গাত্মক ও তির্যক ভঙ্গীমায় ফুটে উঠেছে।
প্রকাশকালঃ ১৮৬২ খ্রিষ্টাব্দে গ্রন্থটির প্রথমভাগ, ১৮৬৩-তে দ্বিতীয়
বিষয়বস্তু : (১) কালীপ্রসন্ন সিংহ ৩০ বছরের স্বল্পকালীন জীবনে গ্রন্থটিতে একদিকে চড়কপার্বন, রথযাত্রা, দুর্গাপূজা যেমন স্থান পেয়েছে তেমনি আবার কলকাতার বাবু সমাজের ভন্ডামি, শহরের বাঙালিদের মূল্যবােধের অবক্ষয়গুলি তুলে ধরেছেন। (২) গ্রন্থটিতে একদিকে ইংরেজী জানা নব্যবাবু এবং অন্যদিকে গোঁড়া হিন্দু সমাজের জীবনের স্ববিরােধীতাকে তুলে ধরেছিলেন। তিনি গভীর অন্তদৃষ্টি দিয়ে তৎকালীন সমাজকে বিশ্লেষণ করেন। এবং বাবু সংস্কৃতির তীব্র সমালােচনা করে তৎকালীন শিক্ষিত বাঙালী সমাজকে সচেতন করার প্রয়াস নিয়েছেন। (৩) কালীপ্রসন্ন সিংহ তাঁর হুতােম প্যচার নকশায় সমসাময়িক সমাজ ও কলকাতার ভােগবাদী নাগরিক জীবনের তীব্র সমালােচনা করেছেন। সমকালীন অশ্লীলতা, ভন্ডামি তিনি চলিত ভাষায়। ব্যঙ্গাত্মক হাস্যরসাত্মক করে উপস্থাপন করেছেন।
লেখকের রসবােধ, সাহিত্যগুণ এবং সমাজ সচেতনতাবােধ হুতােম পাচার নকশাকে কালজয়ী করেছে। ইংরেজদের তীবাহক বাঙালীকে ঘৃণা করে তিনি তাদের মধ্যে জাতীয়তাবােধের আগুন জ্বালাতে চেয়েছেন। তাই ‘হুতােম প্যাচার নকশা’ ঊনিশ শতকের তৎকালীন সমাজ চিত্রের এক জীবন্ত দলিল বলা যায়।।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।