ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর কীভাবে ছাপাখানার ব্যাবসায়িক উদ্যোগে নিজেকে সংশ্লিষ্ট করেন তা বিশ্লেষণ করাে। অথবা, বিদ্যাসাগর কীভাবে গ্রন্থ রচনার মাধ্যমে শিক্ষার প্রসার করেন? 4 Marks/Class 10
উত্তর:–
ভূমিকা : শিক্ষক, শিক্ষাবিশারদ এবং শিক্ষাসংস্কারকের পাশাপাশি বিদ্যাসাগর ছিলেন উনিশ শতকের একজন উল্লেখযােগ্য গ্রন্থকার, মুদ্রক ও প্রকাশক।
ছাপাখানা ও বিদ্যাসাগর : প্রাক্-আধুনিক যুগের ছাপাখানার ইতিহাসে বিদ্যাসাগরের অবদানের বিভিন্ন দিক হল—
১) গ্রন্থকার রূপে : বিদ্যাসাগর তার লেখা ‘বেতাল পঞ্চবিংশতি’ গ্রন্থটি রােজারিও কোম্পানির ছাপাখানায় ছাপানাের ব্যবস্থা করেন (১৮৪৭ খ্রি:)। পরবর্তীকালে তিনি নিজের রচিত অনেক পুস্তক নিজের ছাপাখানাতেই মুদ্রণের ব্যবস্থা করেন।
২) মুদ্রাকর রূপে বিদ্যাসাগর : ১৮৪৭ খ্রিস্টাব্দে বিদ্যাসাগর তার বন্ধু মদনমােহন তর্কালঙ্কারের সঙ্গে যৌথভাবে ৬২ নং আমহার্স্ট স্ট্রিটে ‘সংস্কৃত যন্ত্র’ নামক একটি ছাপাখানা যন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীকালে তিনি এই ছাপাখানার একক মালিক হন।
৩) প্রকাশক : এই ছাপাখানা থেকে বিদ্যাসাগর তার নিজের রচিত বর্ণপরিচয় প্রথম ও দ্বিতীয় ভাগ (১৩ এপ্রিল ও ১৪ জুন, ১৮৫৫ খ্রি.)-সহ অন্যান্য লেখকের রচিত গ্রন্থ ছাপান ও প্রকাশ করেন।
৪) পুস্তক বিক্রেতা : উনিশ শতকে বটতলা ও চিনাবাজার এলাকায় বই বাজার গড়ে উঠলেও হিন্দু কলেজ ও সংস্কৃত কলেজ অঞলে বইয়ের দোকান না থাকায় বিদ্যাসাগর এই অঞ্চলে ‘সংস্কৃত প্রেস ডিপজিটরি’ (১৮৪৭ খ্রি.) নামক একটি বইয়ের দোকান খােলেন।
উপসংহার : এভাবে বিদ্যাসাগর গ্রন্থকার, প্রকাশক ও মুদ্রাকর হয়ে ওঠেন এবং ‘বিদ্যাবণিক’ নামে পরিচিত পাশাপাশি ছাপাখানার টেকনিক্যাল ব্যাপারেও উন্নতি ঘটাতে সচেষ্ট হন, যার উদাহরণ হল ‘বিদ্যাসাগর সাট’।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।