প্রশ্ন – জগদীশচন্দ্র বসুর বিজ্ঞান গবেষণা উল্লেখ করে‘বসু বিজ্ঞান মন্দির প্রতিষ্ঠা ব্যাখ্যা করাে। 8 Marks | Class 10
উত্তর: ভূমিকা : উনিশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে বাঙালির বিজ্ঞান সাধনা ও বিজ্ঞান গবেষণার সূচনা হয় এবং এক্ষেত্রে উল্লেখযােগ্য গবেষক ছিলেন জগদীশচন্দ্র বসু (১৮৫৮-১৯৩৭ খ্রি.)।।
শিক্ষালাভ : জগদীশচন্দ্র বসু কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে পদার্থবিদ্যায় বি এ পাস করেন (১৮৭৯ খ্রি.)। পরবর্তীকালে তিনি কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়ন, পদার্থ বিদ্যা ও উদ্ভিদ বিদ্যার ট্রাইপস ডিগ্রি (অনার্সসহ ডিগ্রি পরীক্ষা) লাভ করেন এবং লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি এসসি পাস করে দেশে প্রত্যাবর্তন করেন।
কর্মজীবন ও বিজ্ঞান গবেষণা : ইংল্যান্ড থেকে দেশে ফিরে তিনি প্রেসিডেন্সি কলেজে পদার্থবিদ্যার অধ্যাপকরূপে যােগদান করেন (১৮৮৫ খ্রি.)। এই কলেজে অধ্যাপনার পাশাপাশি তিনি কলেজের মাত্র ২৪ বর্গফুট ঘরেই বিজ্ঞান গবেষণাও করতে থাকেন। তার গবেষণার তিনটি পর্যায় ছিল—প্রথম পর্যায়ে তড়িৎ-চুম্বকীয় তরঙ্গ সম্পর্কে গবেষণা করেন ও বেতার যন্ত্র আবিষ্কার করেন। দ্বিতীয় পর্যায়ে তিনি জীবনের উৎপত্তি সংক্রান্ত গবেষণা করেন। এবং তৃতীয় পর্যায়ে উদ্ভিদ ও প্রাণী সংক্রান্ত গবেষণা করেন। তিনি উদ্ভিদের স্নায়বিক ক্রিয়াকলাপ ও বৃদ্ধি মাপার জন্য ‘ক্রেস্কোগ্রাফ নামক একটি যন্ত্র উদ্ভাবন করেন।
বসু বিজ্ঞান মন্দির প্রতিষ্ঠা : জগদীশচন্দ্র বসু তার তড়িৎ-চুম্বকীয় তরঙ্গ সংক্রান্ত গবেষণায় উদ্ভূত নতুন তত্ত্ব ও তথ্যের কথা ইংল্যান্ডের রয়্যাল ইন্সটিটিউশনে বক্তৃতার মাধ্যমে প্রকাশ করেন। এরপর তািন। ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানিসহ ইউরােপের বিভিন্ন দেশে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। এই সময়েই রয়্যাল সােসাইটির বিখ্যাত বিজ্ঞানীরা ভারত সরকারের কাছে জগদীশচন্দ্র বসুর গবেষণার জন্য একটি উন্নতমানের গবেষণাগার প্রতিষ্ঠার অনুরােধ জানান। কিন্তু তা বাস্তবায়িত হয়নি। | প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে অবসর গ্রহণের পর জগদীশচন্দ্র বসু তার বাড়িতেই ছােটো গবেষণাগার প্রতিষ্ঠা করে গবেষণার কাজ শুরু করেন। এর পাশাপাশি তিনি তার নিজের ও দেশের স্বার্থে একটি বৃহৎ গবেষণাগার প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট হন। শেষপর্যন্ত তার । নিজস্ব অর্থ ও সংগৃহীত ১১ লাখ টাকা অনুদানের অর্থে কলকাতায় প্রতিষ্ঠা করেন বসু বিজ্ঞান মন্দির’ (২৩ নভেম্বর, ১৯১৭) ।
মূল্যায়ন : জগদীশচন্দ্র বসু ছিলেন একজন সফল বাঙালি বৈজ্ঞানিক এবং উদ্যোগপতি। তাঁর প্রতিষ্ঠিত বসু বিজ্ঞান মন্দির হয়ে ওঠে আধুনিক ভারতের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় বৈজ্ঞানিক গবেষণাগার।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।