জাতীয় শিক্ষানীতি (1986) কোন আলোচনাপত্রে প্রকাশিত হয়? এর উল্লেখযােগ্য যে-কোনাে চারটি বিষয় সম্পর্কে লেখাে। জাতীয় শিক্ষানীতির পুনর্বিবেচনা করে আচার্য রামমূর্তি কমিটি যে সুপারিশ করেছিল, সেগুলি কী কী? 1+3+4 Class 12 | Education (শিক্ষাবিজ্ঞান) | 8 Marks
উত্তর:-
জাতীয় শিক্ষানীতি (1986) যে আলোচনাপত্রে প্রকাশিত হয় : প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে সামনে রেখে শিক্ষামন্ত্রক একটি প্রস্তাবনাপত্র বা অ্যাপ্রােচ পেপার তৈরি করে, যার নাম দেওয়া হয়েছিল—“চ্যালেঞ্জ অব এডুকেশন এ পলিসি পারসূপেকটিভ’ | ওই আলােচনাপত্রেই জাতীয় শিক্ষানীতি (1986) প্রকাশিত হয়।
উল্লেখযােগ্য চারটি বিষয়:
1. শিক্ষার উপাদান ও ভূমিকা, 2. জাতীয় ব্যবস্থায় শিক্ষা, 3. সাম্যের জন্য শিক্ষা এবং 4. বিভিন্ন স্তরের শিক্ষার পুনর্গঠন।
[1] শিক্ষার উপাদান ও ভূমিকা: শিক্ষা হবে সকলের জন্য শিক্ষা হবে। সর্বাঙ্গীণ উন্নয়নের সুত্র।
[2] জাতীয় ব্যবস্থায় শিক্ষা: একটি নির্দিষ্ট স্তর পর্যন্ত শিক্ষাক্ষেত্রে জাতিধর্মবর্ণ, স্ত্রীপুরুষ নির্বিশেষে সব শিক্ষার্থীর সমান সুযােগ থাকবে।
[3] সাম্যের জন্য শিক্ষা: দেশের অনুন্নত সম্প্রদায়, যেমন— তপশিলি জাতি ও উপজাতি, সংখ্যালঘু, মহিলা এবং প্রতিবন্ধীদের শিক্ষার প্রসারে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে।
[4] বিভিন্ন স্তরের শিক্ষার পুনর্গঠন :
i. প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষাকে সঠিক ও সুষ্ঠু উপায়ে রূপায়িত করা হবে।
ii. প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার প্রসার ঘটানাে, সমস্ত ছেলেমেয়েকে বিদ্যালয়ে ভরতি করা ও অন্তত 14 বছর বয়স পর্যন্ত সব শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয়মুখী রাখা, সর্বোপরি শিক্ষার গুণগত মানের প্রকৃত উন্নয়ন ঘটানাে।
iii. মেধাবী এবং প্রতিভাবান শিক্ষার্থীদের উপযুক্ত সুযােগসুবিধা দিতে সারা দেশের প্রতিটি জেলায় একটি করে মডেল স্কুল’ বা নবােদয় বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
iv. বৃত্তি ও কারিগরি শিক্ষা প্রসারের এবং কারিগরি শিক্ষায় এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে শিক্ষার্থীদের অবাধ সরণের সুযােগ সৃষ্টি করা হবে।
v. স্বয়ংশাসিত কলেজের সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য সচেষ্ট হতে হবে শিক্ষায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং উচ্চশিক্ষার সুযােগ সকলের কাছে পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যে মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসার ঘটাতে হবে।
vi. নির্বাচিত ক্ষেত্রে চাকরির সঙ্গে ডিগ্রির বিচ্ছেদ ঘটানাের সুচনা করা হবে।
রামমূর্তি কমিটির সুপারিশ : 1990 সালে রামমূর্তি কমিটি তার রিপাের্টে যে সমস্ত সুপারিশ করেছে, সেগুলি হল —
[1] শিক্ষাক্ষেত্রে সকলের সমান সুযােগ তথা সাম্য এবং সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা দরকার।
[2] সকল স্তরের শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনার বিকেন্দ্রীকরণের দরকার।
[3] শিক্ষার মাধ্যমে সমাজের আপামর জনগণের মধ্যে মূল্যবােধ জাগ্রত করা প্রয়ােজন।
[4] কমন স্কুল প্রথার উন্নয়ন ঘটানাে প্রয়ােজন।
[5] শিক্ষাকে সাংবিধানিক অধিকারের অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়ােজন।
[6] স্ত্রীশিক্ষার প্রসারে অধিক গুরুত্ব প্রদান করা দরকার।
[7] পরীক্ষা ব্যবস্থার এবং মূল্যায়ন ব্যবস্থার সংস্কার প্রয়ােজন।
[8] বিশ্ববিদ্যালয় এবং মহাবিদ্যালয়গুলিকে স্বশাসন দেওয়া প্রয়ােজন।
[9] শিক্ষায় সকল স্তরে কর্মসংস্কৃতি ফিরিয়ে আনা দরকার।
[10] মাতৃভাষা ও আঞ্চলিক ভাষাকে শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করতে হবে।
[11] উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের ফি বাড়ানাে প্রয়ােজন।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।