জলবিভাজিকা উন্নয়ন বলতে কী বােঝ? এর গুরুত্ব এবং এর উন্নয়ন পদ্ধতি সম্পর্কে লেখাে। 1+2+2 Class 10 | Geography | 5 Marks‘
উত্তর:-
জলবিভাজিক উন্নয়ন : জলবিভাজিকা উন্নয়ন বলতে বােঝায় জলবিভাজিকা দ্বারা পৃথককৃত নদীর ধারণ অববাহিকার সামগ্রিক ও বিজ্ঞানসম্মত উন্নয়নের মাধ্যমে ওই নদীর সমগ্র অববাহিকারই জলসম্পদ, বাস্তুতন্ত্র, পরিবেশ ও মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থার স্থায়ী উন্নয়ন। এজন্য অববাহিকায় 1. বৃষ্টির জল সংরক্ষণ, 2. মৃত্তিকা ক্ষয়রােধ, 3. বৃক্ষরােপণ, 4. ভৌমজল ভাণ্ডার বৃদ্ধি করা, 5. প্রাকৃতিক সম্পদের সঠিক ব্যবহার ইত্যাদি কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। তার ফলে কৃষিকাজ ব্যাহত হয় না। 3. শুষ্ক ঋতুতে বা শুষ্ক অঞ্চলে জল পাওয়া যায় এবং 4. ভৌমজল ভাণ্ডার সমৃদ্ধ হয়।
জলবিডাজিক উন্নয়ন পদ্ধতি : জলবিভাজিকা উন্নয়ন পদ্ধতিগুলি হল—
1. ঢাল উন্নয়ন: নদী অববাহিকার উঁচু খাড়া অংশে ভূমিক্ষয় এবং বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য বৃক্ষরােপণ, তৃণভূমির আচ্ছাদন তৈরি, ধস নিয়ন্ত্রক দেয়াল নির্মাণ, প্রয়ােজনে পাহাড়ি নদীর গতিপথ পরিবর্তন করা যেতে পারে। এর সাথে ঝুমচাষের মতাে ক্ষতিকর প্রথায় চাষ বন্ধ করা দরকার।
2. সমােন্নতিরেখা বরাবর বনভূমি তৈরি: উচ্চ ভূমি বা পার্বত্য অঞ্চলে সমােন্নতিরেখা বরাবর বনভূমি তৈরি করলে মাটিক্ষয় কম হয় এবং ভৌমজলের পরিমাণ বাড়ে।
3. নদীখাতে ছােটোবাঁধ তৈরি: অববাহিকার ছােটোনদীগুলির প্রবাহপথে বাঁধ দিলে স্থানীয়ভাবে জল সংরক্ষণ ও মাটিক্ষয় রােধ করা যায়।
4. বন্যা নিয়ন্ত্রণ: বন্যাপ্রবণ নদী অববাহিকায় প্রচুর সংখ্যক জলাভূমি, পুকুর, খাল ইত্যাদি খনন করতে হবে এবং নদীখাতের পলি কেটে তুলে ফেলতে হবে। এতে নদীর জলধারণ ক্ষমতা এবং জলপ্রবাহ উভয়ই বৃদ্ধি পাবে।
5. শুষ্ক অঞ্চলের পদ্ধতি: স্বল্প বৃষ্টিপাতযুক্ত অঞ্চলে মাটির আর্দ্রতা বজায় রাখার জন্য বেশি সংখ্যক পুকুরসহ বিভিন্ন জলাধার খনন করে তাতে বর্ষার জল সঞ্চয় করে রাখতে হবে। এ ছাড়া বৃষ্টিপাতের আগে ভূমি কর্ষণ করে বা খুঁড়ে রাখলে মৃত্তিকার জলাধারণ ক্ষমতা ও আর্দ্রতা বৃদ্ধি পাবে।
6. আর্দ্র অঞ্চলের পদ্ধতি: আর্দ্র অঞ্চলে নদীখাতগুলিকে গভীর ও পরিষ্কার রাখলে জল দ্রুত নিষ্কাশিত হতে পারে এবং তার ফলে সেখানে সহজেই বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও ভূমিক্ষয় রােধ করা যেতে পারে।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।