কাশ্মীর বিতর্কে সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের ভূমিকা কী ছিল?

কাশ্মীর বিতর্কে সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের ভূমিকা কী ছিল?    4 Marks/Class 10

উত্তর:- ভারতের স্বাধীনতা লাভের পর দেশীয় রাজ্য কাশ্মীরে শেখ আবদুল্লার নেতৃত্বে ভারতীয় সরকার এবং পাক-হানাদারদের নেতৃত্বে ‘আজাদ কাশ্মীর’ গঠিত হয়। কিন্তু বিভিন্ন কারণে পাকিস্তানের ভারতের অন্তর্গত কাশ্মীরে হস্তক্ষেপ করতে থাকলে ভারত সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের দ্বারস্থ হলে পাকিস্তান কাশ্মীরে গণভােটের দাবি জানায়। এই পরিস্থিতিতে জাতিপুঞ্জ কাশ্মীরে যুদ্ধবিরতি ঘােষণা করে ‘যুদ্ধবিরতি সীমারেখা’ (৩১ ডিসেম্বর, ১৯৪৮ খ্রি.) নির্ধারণ করে তা নিয়ন্ত্রণ রেখা বা LOC (Line of Control) নামে পরিচিত। 

১. কাশ্মীর বিতর্ক ও সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ : সম্মিলিত জাতিপুঞ্জে কাশ্মীর প্রশ্নে বিতর্ক শুরু হলে পাকিস্তান প্রথমে জানায় যে বেসরকারি হানাদার বাহিনী কর্তৃক কাশ্মীর আক্রমণ করার জন্য পাকিস্তানের কোনাে দায়িত্ব নেই, পাকিস্তানকে এজন্য আক্রমণকারী বলা যাবে না। 

২. ভারতের যুক্তি : ভারতের যুক্তি ছিল যেহেতু হানাদাররা পাকিস্তানে থেকে ভারতে প্রবেশ করেছে, সেহেতু তাদের আটকানাের দায় ছিল পাকিস্তানের, এই দায়িত্ব পালন না করায় পাকিস্তান ছিল অপরাধী। 

৩. পাকিস্তানের পালটা যুক্তি : জাতিপুঞ্জে ভারতের উপস্থিত করা যুক্তিগুলি পাকিস্তানের পছন্দ না হওয়ায় তারা পালটা যুক্তি দেয় এবং গণভােট দাবি করে।

৪. সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের ভূমিকা : আন্তর্জাতিক ঠান্ডা লড়াইয়ের ফলে ভারত জোটনিরপেক্ষ নীতি নিলে ভারত ইঙ্গ-মার্কিন শক্তির বিরাগভাজন হয়। সুতরাং জাতিপুঞ্জে পশ্চিমি শক্তিও প্রস্তাব পাস করে যে, কাশ্মীর সমস্যা গণভােটের দ্বারা সমাধান হবে। কাশ্মীরে গণভােটের জন্য অ্যাডমিরাল নিমিজ জাতিপুঞ্জের প্রতিনিধিরূপে নিযুক্ত হন।

উপসংহার : ভারত বাধ্য হয়ে দাবি করে যে, ভারত ও পাকিস্তান উভয় দেশের সেনা কাশ্মীর ত্যাগ করলে তবেই গণভােট সম্ভব। কিন্তু সেনা অপসারণের কোনাে সুষ্ঠু ব্যবস্থা না হওয়ায় গণভােট স্থগিত ছিল। সমস্যার সমাধানের জন্য জাতিপুঞ্জ কমিশন পাঠালেও আজ পর্যন্ত তার কোনাে সমাধান হয়নি।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment