ভাব সম্মিলন’ কবিতার আলেখ্যে ভাব সম্মিলন আসলে কী বুঝিয়ে বলো ।

‘ভাব সম্মিলন’ কবিতার আলেখ্যে ভাব সম্মিলন আসলে কী বুঝিয়ে বলো । MARK 5 | Class 11 Bengali | ভাব সম্মিলন

উত্তর :

বিদ্যাপতির কাব্যবিশ্লেষণ ও কৃতিত্ব আলোচনা করতে গেলে কয়েকটি বিশেষরসপর্যায় সম্পর্কে অবহিত হওয়া একান্ত প্রয়োজন। তাঁর রচিত পদগুলিতে শ্রীরাধিকার পর্যায়ক্রমিক বিকাশ অঙ্কিত হয়েছে। বয়ঃসন্ধি, পূর্বরাগ, অভিসার, মাথুর, বিরহ, ভাবোল্লাস বা ভাব সম্মিলন ও প্রার্থনা ইত্যাদি পদের মাধ্যমে শ্রীরাধিকার ক্রমবিকাশ ঘটেছে। এইরকমই একটি পর্যায় ভাবোল্লাস বা ভাব সম্মিলন। শ্রীকৃষ্ণ অক্রুরের রথে চড়ে শেষবারের মতো বৃন্দাবন বা ব্রজধাম ছেড়ে মথুরায় চলে যান এবং আর কোনোদিনই বৃন্দাবনে ফিরে আসেননি। তাঁর বৃন্দাবনলীলা এভাবেই সমাপ্ত হয়। বিরহের পর যেসকল মিলনের পদ বৈষ্ণব কাব্যে দেখতে পাওয়া যায়, তা পুনর্মিলনের বর্ণনা নয়। মাধবের (শ্রীকৃ) সাথে রাধার আর সাক্ষাৎ হয়নি। বিরহের আতিশয্যে রাধা কল্পনা করতেন, মাধব আবার এসেছেন, তাঁদের উভয়ের মিলন হয়েছে; এটাই ভাব সম্মিলন। এককথায় বলা যায়—ভাবজগতে রাধাকৃয়ের মিলনকে ভাবোল্লাস বা ভাব সম্মিলন বলে। ভাবোল্লাসে রাধাকৃষ্ণের মিলনলীলা সম্পূর্ণ হয় বৃন্দাবনের রূপজগতে নয়, রাধার আন্তর্জগতের বৃন্দাবনে। বিদ্যাপতির এইসকল পদ অতি উচ্চশ্রেণির, তাঁর সমকক্ষ আর কোনো কবি নেই। কখনও রাধা স্বপ্ন দেখছেন যে মাধব এসেছেন, কখনও মাধব ফিরলে রাধা কী করবেন তার উল্লেখ করছেন। কখনও মোহাবেশে তাঁকে সম্বোধন করছেন। প্রকৃত চাক্ষুষ সাক্ষাৎ আর তাঁদের ঘটেনি।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment