‘কর্তার ভূত’ ছােটোগল্পের রুপকার্থটি সংক্ষেপে লেখাে। 

‘কর্তার ভূত’ ছােটোগল্পের রুপকার্থটি সংক্ষেপে লেখাে। 

উত্তর:- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কর্তার ভূত’ একটি রূপকধর্মী গল্প। এখানে দেখা যায় যে, সর্বাঙ্গসম্পন্ন প্রাচীন সভ্যতার অবসানকালে আধুনিক যুগের আত্মবিশ্বাসহীন দেশবাসী ভবিষ্যতের কথা ভাবতে বসে প্রাচীন সভ্যতার ধর্মতন্ত্রকে আঁকড়ে ধরাই নিরাপদ বলে মনে করল। কিন্তু ধর্মশাস্ত্র তথা ধর্মতন্ত্র যেহেতু অপরিবর্তনীয়, তাই কারও জন্য তার বিশেষ দুশ্চিন্তাও নেই। তবে, নিজস্ব প্রকৃতিগত কারণে যে দু-একজন মানুষ স্বাধীনভাবে ভাবার চেষ্টা করে, ধর্মতন্ত্রের শাস্তি নেমে আসে তাদের ওপর। ধর্মতন্ত্রের কারাগারে বন্দি ভারতবাসীর পাহারাদার হল পুরােহিতশ্রেণি। সেই কারাগারের পাঁচিল আসলে অন্ধ ধর্মমােহের বাধা, যার অবস্থান মানুষের মনে। ধর্মতন্ত্র নির্দেশিত শ্রমে অর্থাৎ যাগযজ্ঞ-পূজা-অর্চনাসহ যাবতীয় লােকাচারে দেশবাসী সবসময় ব্যস্ত থাকতে থাকতে তাদের যুক্তিসংগত চিন্তাভাবনা ও প্রতিবাদের শক্তি হারিয়ে যায়। কিন্তু এতে দেশে দুঃখ-দারিদ্র্য থাকলেও শান্তি রয়ে যায়। সে শান্তি অবশ্য শ্মশানের শান্তি।

এদিকে দু-একজন ভীরু দেশবাসী আত্মকর্তৃত্ব বা আত্মশক্তি লাভের ইচ্ছা প্রকাশ করলেও তার জন্য মানসিক শক্তি অর্জন করতে সক্ষম হয় না। আসলে জনসাধারণের আত্মশক্তির অভাব এবং ভয়ের কারণেই দেশে ধর্মীয় সংস্কার এবং ধর্মতন্ত্র বাসা বেঁধে রয়েছে। ধর্মতন্ত্রের অবস্থান আসলে ভীত দেশবাসীর অন্তরে।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment