‘কর্তার ভূত’ ছোটোগল্পে ‘ভূতের কানমলা’ সম্বন্ধে কী বলা হয়েছে? এই গল্পে ওঝা চরিত্রটি সৃষ্টির সার্থকতা বিচার করাে।

‘কর্তার ভূত’ ছোটোগল্পে ‘ভূতের কানমলা’ সম্বন্ধে কী বলা হয়েছে? এই গল্পে ওঝা চরিত্রটি সৃষ্টির সার্থকতা বিচার করাে। ২+৩ 

উত্তর:- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কর্তার ভূত’ ছােটোগল্পে স্বাধীনভাবে ভাবতে চাওয়া দেশবাসীর কথা প্রসঙ্গে লেখক বলেছেন যে, তারা ভূতের কানমলা খায়। মৌলিক চিন্তার অধিকারীদেরই ভাগ্যে জোটে ‘ভূতের কানমলা’ অর্থাৎ কঠোর বিধিনিষেধ এবং অনুশাসন। সেই কানমলা থেকে নিজেকে মুক্ত করা যেমন কঠিন, তেমন সেখান থেকে পালানােও শাস্তিগ্রহণকারীর পক্ষে অসম্ভব। এমনকি সেই ‘বিনা-অপরাধের শাস্তি’র জন্য কোথাও অভিযােগও করা যায় না। কেননা, ভূতের বিরুদ্ধে বিচারের কোনাে ব্যবস্থাই যে কারাের জানা নেই।

‘য়ুরােপ যাত্রীর ডায়ারি’র ভূমিকায় রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন, “আমাদের সেই সর্বাঙ্গসম্পন্ন প্রাচীন সভ্যতা বহুদিন হল পঞত্বপ্রাপ্ত হয়েছে …।” এই ‘পঞত্বপ্রাপ্ত সর্বাঙ্গসম্পন্ন প্রাচীন সভ্যতা’-ই এই গল্পের কর্তা এবং সে-সভ্যতার ‘ধর্মতন্ত্রই হল তার ভূত। অন্য দেশগুলিতে ভূতের উপদ্রব হলে মানুষ দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে ওঝার খোঁজ করে, আমাদের দেশবাসী কিন্তু সেসব চিন্তাও করে না। কেননা, এদেশের ওঝাদের আগেভাগেই ভূতে পেয়েছে। কথাগুলির মধ্যে লুকিয়ে থাকা অর্থ হল, বিদেশে ধর্মতন্ত্র ও কুসংস্কারের বাড়াবাড়ি হলে মানুষ বিজ্ঞানী এবং বিজ্ঞানশিক্ষায় শিক্ষিত মানুষের দ্বারস্থ হয়। এই দেশের লােকেদের সেচিন্তা নেই, কারণ এ দেশের বিজ্ঞানী ও বিজ্ঞান-শিক্ষায় শিক্ষিত মানুষের অধিকাংশই ধর্মতন্ত্র ও কুসংস্কারে সম্পূর্ণরূপে নিমজ্জিত।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment