‘কর্তার ভূত’ রচনাটিকে কী জাতীয় রচনা বলে তুমি মনে করাে? Mark 5 | Class 11
উত্তর:- রবীন্দ্রনাথের ‘কর্তার ভূত’ রচনার বাইরের গৌণ আখ্যানের আড়ালে লুকিয়ে আছে আরও একটি সমান্তরাল আখ্যান—সেটিই মুখ্য। ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দে ‘য়ুরােপ যাত্রীর ডায়ারি’ র ভূমিকায় রবীন্দ্রনাথ বলেন, “আমাদের সেই সর্বাঙ্গসম্পন্ন প্রাচীন সভ্যতা বহুদিন হল পঞত্বপ্রাপ্ত হয়েছে, আমাদের বর্তমান সমাজ তারই প্রেতযােনি মাত্র। এই পঞত্বপ্রাপ্ত, সর্বাঙ্গসম্পন্ন প্রাচীন সভ্যতাই ‘কর্তার ভূত’ গল্পের কর্তা এবং সে-সভ্যতার ‘ধর্মতন্ত্র’-ই হল তার ভূত। রবীন্দ্রনাথ এ রচনায় দেখিয়েছেন যে, প্রাচীন সভ্যতার অবসান হলেও সে সভ্যতার ধর্মতন্ত্র আধুনিক ভারতবর্ষকে কেমনভাবে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে রেখেছে। ফলে যুক্তিবুদ্ধি-বিচার-বিবেচনাহীন হয়ে পরাধীন দেশবাসী সেই ধর্মতন্ত্রকে আঁকড়ে ধরে ঘুমের ঘােরে দিন কাটিয়ে চলেছে।
এ গল্পে ত্রৈলােক্যনাথ মুখােপাধ্যায়ের ‘কঙ্কাবতী’ রচনার মতাে উদ্ভট কল্পনাও আমরা লক্ষ করি, যখন দেখি যে অনবরত ঘুরে-চলা ভুতুড়ে জেলখানার ঘানি থেকে তেলের বদলে দেশবাসীর তেজ বেরিয়ে যাচ্ছে। তবুও একে ‘প্যারাবল’ (Parable) বলা যায় না। ‘কর্তার ভূত’ রচনাকে কোনাে একটি নির্দিষ্ট অভিধায় তাই বেঁধে ফেলা কঠিন। তবে একে ‘রূপকধর্মী ছােটোগল্প’ হিসেবে উল্লেখ করা যেতেই পারে।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।