পরীক্ষাব্যবস্থা সংস্কারে কোঠারি কমিশনের সুপারিশসমূহ উল্লেখ করাে । Class 12 | Education (শিক্ষার কৌশল) | 8 Marks
উত্তর:-
পরীক্ষাব্যবস্থা সংস্কারে কোঠারি কমিশনের সুপারিশসমূহ
কোঠারি কমিশন পরীক্ষাব্যবস্থার ব্যাপক সংস্কারে একাধিক সুপারিশের কথা ব্যক্ত করে, যা এখানে উল্লেখ করা হল
[1] নিম্নপ্রাথমিক স্তরের মূল্যায়নের উদ্দেশ্য হবে শিশুদের মধ্যে সাধারণ দক্ষতা, সঠিক অভ্যাস এবং আগ্রহ গড়ে উঠেছে কি না তা পরিমাপ করা। নিম্নপ্রাথমিক স্তরের জন্য অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নের ব্যবস্থা থাকবে৷
[2] উচ্চপ্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের লিখিত পরীক্ষার সঙ্গে থাকবে মৌখিক পরীক্ষা। এই পরীক্ষাগুলি হবে অভ্যন্তরীণ। শিক্ষক নিজেই পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরি করবেন।
[3] প্রাথমিক স্তরের শেষে শিক্ষার্থীরা জাতীয় মানে পৌঁছেছে কি না তা জানার জন্য পরীক্ষার প্রয়ােজন। শিক্ষার মান বজায় রাখার জন্য বিদ্যালয়-পরিদর্শকগণ মাঝে মাঝে রাজ্য মূল্যায়ন সংস্থার তৈরি প্রশ্নপত্রের দ্বারা সমীক্ষা করতে পারেন।
[4] প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলির মধ্যে তুলনা করার জন্য প্রাথমিক স্তরের শেষে বিভিন্ন জেলায় আদর্শায়িত পারদর্শিতা অভীক্ষা (Standardised Achievement Test)-এর মাধ্যমে পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে। তবে এই পরীক্ষা বাধ্যতামূলক হবে না।
[5] কমিশন বহিঃপরীক্ষার মানকে উন্নত করার জন্য কয়েকটি ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে। যেমন—প্রশ্ন প্রস্তুতকারীদের দক্ষতা বৃদ্ধি, নম্বর দেওয়ার পদ্ধতিকে বিজ্ঞানভিত্তিক করা ইত্যাদি।
[6] কয়েকটি নির্বাচিত বিদ্যালয়কে তাদের নিজেদের ছাত্রদের মূল্যায়নের দায়িত্ব এবং দশম শ্রেণির পর চূড়ান্ত পরীক্ষা নেওয়ার অধিকার দেওয়া উচিত। এর মান হবে স্টেট বাের্ড অব স্কুল এডুকেশনের সমান।
[7] প্রতিটি শিক্ষাস্তরে অভ্যন্তরীণ পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সর্বাঙ্গীণ বিকাশের পরিমাপের ব্যবস্থা থাকা উচিত।
[8] উচ্চতর মাধ্যমিক পরীক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে কমিশনের সুপারিশ হল, দশম শ্রেণির পাঠ শেষ হওয়ার পর প্রথম বহিঃপরীক্ষা গ্রহণ করতে হবে এবং দ্বাদশ শ্রেণির শেষে দ্বিতীয় বহিঃপরীক্ষা গ্রহণ করতে হবে।
[9] উচ্চশিক্ষার মূল্যায়নের ক্ষেত্রে বহিঃপরীক্ষার পরিবর্তে অভ্যন্তরীণ ও নিরবচ্ছিন্ন মূল্যায়নের ব্যবস্থা করতে হবে।
[10] সর্বস্তরের শিক্ষকদের আধুনিক ও উন্নত মূল্যায়ন ব্যবস্থা সম্বন্ধে ধারণা দেওয়ার জন্য সেমিনার, আলােচনা, ওয়ার্কশপের ব্যবস্থা করতে হবে।
[11] পরীক্ষার খাতা দেখার জন্য কোনাে অর্থ দেওয়া উচিত নয়।
[12] নম্বরের পরিবর্তে গ্রেড প্রথা চালু করা উচিত (যা ইতিমধ্যে চালু হয়েছে)।
[13] মূল্যায়নের জন্য প্রশাসনিক ক্ষেত্রে কয়েকটি সুপারিশ করা হয় যেমন—
i. রাজ্য ও কেন্দ্রীয় স্তরে মূল্যায়নের জন্য সুসংগঠিত সংস্থার প্রয়ােজন৷ রাজ্যস্তরে এই সংস্থাটি হবে ‘স্টেট বাের্ড অব সেকেন্ডারি এডুকেশন’, যা মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক স্তরের বহিঃপরীক্ষা গ্রহণ করবে। জাতীয় স্তরে থাকবে ‘ন্যাশনাল বাের্ড অব সেকেন্ডারি এডুকেশন’ যা জাতীয় স্তরে মূল্যায়নের ব্যবস্থা করে।
ii. ইউ জি সি ‘সেন্ট্রাল এক্সামিনেশন রিফর্ম ইউনিট’ (Central Examination Reform Unit) নামে একটি বিভাগ স্থাপন করবে, যেটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে মূল্যায়নের ব্যাপারে সংযােগ রাখবে এবং কতকগুলি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষার জন্য বিশেষ ইউনিট খুলবে।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।