Class 10 Class 10 Geography ABTA টেস্ট পেপার ভূগোল পেজ ৪১ সমাধান | Madhyamik ABTA Test Paper 2026 Geography Page 41 Solution

ABTA টেস্ট পেপার ভূগোল পেজ ৪১ সমাধান | Madhyamik ABTA Test Paper 2026 Geography Page 41 Solution

প্রিয় ছাত্রছাত্রীরা, এখানে আমরা মাধ্যমিক ২০২৬ এর জন্য ABTA টেস্ট পেপার ভূগোল পেজ ৪১ সমাধান নিয়ে এসেছি। তোমরা যারা ২০২৬ এ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে তাদের জন্য আজকের এই পোস্টটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই সমাধানটি তোমাদের পরীক্ষার প্রস্তুতিতে অনেকটাই সহায়তা করবে।

🌍GEOGRAPHY🌍

PAGE : 41


বিভাগ-‘ক’

১। বিকল্পগুলির থেকে সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করে লেখো : ১x১৪=১৪

১.১ আরোহণ প্রক্রিয়ার সৃষ্টি একটি ভূমিরূপ হল- (ক) গিরিখাত (খ) রস মোতানে (গ) বালিয়াড়ি (ঘ) গৌর।
উত্তর: (গ) বালিয়াড়ি

১.২ ইনসেলবার্জ আরো ক্ষয় পেয়ে গম্বুজাকার ঢিবিতে পরিণত হলে তাকে বলে— (ক) ক্যাসেল কপিজ (খ) বর্নহার্ড (গ) টর (ঘ) অ্যাকলে
উত্তর: (খ) বর্নহার্ড

১.৩ মকরীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে কুমেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে প্রবাহিত বায়ু— (ক) উত্তর-পশ্চিম পশ্চিমাবায়ু (খ) দক্ষিণ-পশ্চিম পশ্চিমাবায়ু (গ) উত্তর-পূর্ব মেরু বায়ু (ঘ) দক্ষিণ-পূর্ব মেরু বায়ু
উত্তর: (খ) দক্ষিণ-পশ্চিম পশ্চিমাবায়ু

১.৪ 3/4 ভাগ মেঘাচ্ছন্নতা যে প্রতীক চিহ্ন দিয়ে বোঝানো হয় সেটি হল- (ক) (খ) (গ) (ঘ)
উত্তর: (ঘ)

১.৫ ভারত মহাসাগরের একটি উষ্ণ স্রোতের উদাহরণ হল- (ক) কুরেশিয়ো স্রোত (খ) পশ্চিম অস্ট্রেলীয় স্রোত (গ) পেরু স্রোত (ঘ) মৌসুমী স্রোত
উত্তর: (ঘ) মৌসুমী স্রোত

১.৬ একটি জোয়ার ও একটি ভাটার মধ্যে সময় ব্যবধান হল– (ক) ৬ ঘণ্টা ১২ মিনিট ১১.২৫ সেকেন্ড (খ) ২৪ ঘণ্টা (গ) ১২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট (ঘ) ১২ ঘণ্টা ২৬ মিনিট
উত্তর: (ক) ৬ ঘণ্টা ১২ মিনিট ১১.২৫ সেকেন্ড

১.৭ ফ্লাই অ্যাশ— (ক) তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র (খ) জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র (গ) বায়ুশক্তি কেন্দ্র (ঘ) পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে উৎপত্তি হচ্ছে।
উত্তর: (ক) তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র

১.৮ সর্বাধিক আন্তর্জাতিক সীমানাযুক্ত রাজ্য- (ক) জম্মু ও কাশ্মীর (খ) পশ্চিমবঙ্গ (গ) গুজরাট (ঘ) মিজোরাম
উত্তর: (খ) পশ্চিমবঙ্গ

১.৯ গোদাবরী ও কৃষ্ণা নদীর ব-দ্বীপের মাঝে অবস্থিত হ্রদের নাম- (ক) কোলেরু (খ) পুলিকট (গ) চিল্কা (ঘ) ভেম্বানাদ
উত্তর: (ক) কোলেরু

১.১০ ভারতের মৃত্তিকা সংরক্ষণে গৃহীত একটি পদ্ধতি হল- (ক) জলসেচ (খ) ঝুমচাষ (গ) ফালিচাষ (ঘ) পশুচারণ
উত্তর: (গ) ফালিচাষ

১.১১ বলউইভিল পোকার আক্রমণ ঘটে— (ক) পাট (খ) তুলা (গ) গম (ঘ) চা চাষে
উত্তর: (খ) তুলা

১.১২ ভারতে বৃহত্তম সরকারি লৌহ ইস্পাত শিল্পকেন্দ্র- (ক) জামশেদপুর (খ) দুর্গাপুর (গ) ভিলাই (ঘ) সালেম
উত্তর: (গ) ভিলাই

১.১৩ ২০১১ সালের আদমসুমারি অনুসারে সর্বাধিক সাক্ষরতাযুক্ত রাজ্য- (ক) পশ্চিমবঙ্গ (খ) কেরালা (গ) গুজরাট (ঘ) তামিলনাডু
উত্তর: (খ) কেরালা

১.১৪ Radar হল— (ক) প্যাসিভ সেন্সর (খ) অ্যাক্টিভ সেন্সর (গ) কৃত্রিম উপগ্রহ (ঘ) ক্যামেরা
উত্তর: (খ) অ্যাক্টিভ সেন্সর

বিভাগ-‘খ’

২। নিম্নলিখিত বাক্যগুলি শুদ্ধ হলে পাশে ‘শু’ এবং অশুদ্ধ হলে পাশে ‘অ’ লেখো :

২.১ যেকোনো ছয়টি প্রশ্নের উত্তর দাও :১×৬=৬

২.১.১ অবঘর্ষ এবং উৎপাটন হল হিমবাহের ক্ষয়কার্যের পদ্ধতি।
উত্তর: শু (শুদ্ধ)

২.১.২ লা নিনার প্রভাবে প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্ব উপকূলে খরা দেখা যায়।
উত্তর: অ (অশুদ্ধ)

২.১.৩ মাদাগাস্কার ও মোজাম্বিক স্রোতের মিলিত শাখা হল কামচাটকা স্রোত।
উত্তর: অ (অশুদ্ধ)

২.১.৪ Sludge হল একপ্রকার তরল বর্জ্য।
উত্তর: অ (অশুদ্ধ) (দ্রষ্টব্য: Sludge মূলত অর্ধ-কঠিন (semi-solid) বর্জ্য।)

২.১.৫ দক্ষিণ ভারতের তুলনায় উত্তর ভারতে নিয়মিত খালের সংখ্যা বেশি।
উত্তর: শু (শুদ্ধ)

২.১.৬ চণ্ডীগড় একটি পরিকল্পিত শহর।
উত্তর: শু (শুদ্ধ)

২.১.৭ উপগ্রহ চিত্রের স্কেল সর্বদা একই থাকে।
উত্তর: অ (অশুদ্ধ)

২.২ উপযুক্ত শব্দ বসিয়ে শূন্যস্থান পূরণ করো: ১×৬=৬

২.২.১ প্রায়া হ্রদ উত্তর আফ্রিকা নামে ______ পরিচিত।
উত্তর: শট (বা Chott)

২.২.২ গিনি উপকূলে স্থানীয় বায়ু ______ নামে পরিচিত।
উত্তর: ডক্টর উইন্ড (বা হারমাট্টান)

২.২.৩ উত্তপ্ত ভূ-পৃষ্ঠ ______ তরঙ্গরূপে বায়ুমণ্ডলে তাপ বিকিরণ করে।
উত্তর: দীর্ঘ (বা ভূ-পৃষ্ঠ বিকিরণ)

২.২.৪ মরা কোটাল হয় ______ তিথিতে।
উত্তর: অষ্টমী (শুক্ল ও কৃষ্ণ উভয় পক্ষের)

২.২.৫ বৈদ্যুতিন বর্জ্যকে সংক্ষেপে বলা হয় ______ বর্জ্য।
উত্তর: ই- (E-)

২.২.৬ ধান উৎপাদনে ভারতের ______ রাজ্য প্রথম স্থান অধিকার করে।
উত্তর: পশ্চিমবঙ্গ

২.২.৭ উপগ্রহ চিত্র প্রস্তুত করে ______ সংখ্যা।
উত্তর: ISRO

২.৩ একটি বা দুটি শব্দে উত্তর দাও (যে-কোনো ছয়টি প্রশ্নের উত্তর দাও): (১×৬=৬)

২.৩.১ বিশ্বের বৃহত্তম ও গভীরতম সার্ক কোনটি?
উত্তর: কালকা সার্ক (Kalka Cirque), যা আলাস্কা রেঞ্জে অবস্থিত।

২.৩.২ উষ্ণতা হ্রাসের স্বাভাবিক হার কত?
উত্তর: প্রতি ১০০০ মিটার উচ্চতা বৃদ্ধিতে ৬.5° সেলসিয়াস (বা প্রতি ১ কিমি-তে ৬.5°C)।

২.৩.৩ জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে ভূ-পৃষ্ঠস্থ কোনো বস্তুর উপর জলবিন্দুরূপে জমা হলে তাকে কী বলে? উত্তর: শিশির

২.৩.৪ একটি কঠিন সংক্রামক বর্জ্যের উদাহরণ দাও?
উত্তর: ব্যবহৃত ব্যান্ডেজ, তুলা, সিরিঞ্জ, বা ডায়াপার (যে কোনো একটি)।

২.৩.৫ Harvesting Programme কোন রাজ্যে নেওয়া হয়েছে?
উত্তর: তামিলনাডু (Rainwater Harvesting Programme)।

২.৩.৬ যে শস্য জুন-জুলাই মাসে বপন এবং নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে তোলা হয় তাকে কী শস্য বলে?
উত্তর: খারিফ শস্য

২.৩.৭ কুমায়ুন হিমালয়ের হিমবাহ সৃষ্টিকারী হ্রদগুলিকে কী বলে?
উত্তর: তাল

২.৩.৮ সামুদ্রিক মাছের প্রধান খাদ্য কী?
উত্তর: প্লাংটন (Phytoplankton ও Zooplankton)।

২.৪ বামদিকের সঙ্গে ডানদিকেরগুলি মিলিয়ে লেখো: (১×৪=৪)

উত্তর:

বামদিকডানদিক
২.৪.১ বর্ধান(২) বায়ুর সঞ্চয়কাজ
২.৪.২ ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত(১) ইয়াস
২.৪.৩ কেন্দ্রীয় কৃষি গবেষণাগার(৪) পুসা
২.৪.৪ City of Joy(৩) কলকাতা

বিভাগ-‘গ’

৩। নিচের প্রশ্নগুলির সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও (বিকল্প প্রশ্নগুলি লক্ষণীয়) : ২x৬-১২

৩.১ ম্যানিওর পিট কী?
উত্তর: ম্যানিওর পিট: ভারতের গ্রামাঞ্চলে বর্জ্য সংগ্রহ বা বর্জ্য ব্যবস্থাপনার তেমন আধুনিক ব্যবস্থা নেই। তাই যত্রতত্র বর্জ্য নিক্ষেপ করার ফলে পরিবেশদূষণ ঘটে। এই সমস্যা সমাধানের জন্য ম্যানিওর পিট (manure pit) নামক নতুন পদ্ধতি অবলম্বন করা হচ্ছে।
প্রক্রিয়া: এই পদ্ধতিতে বাড়িসংলগ্ন জমিতে একটি গর্ত খনন করা হয়। এরপর প্রতিদিন সেই গর্তের মধ্যে জৈব জঞ্জাল, গোবর প্রভৃতি ফেলে তাকে মাটি দিয়ে ঢেকে দেওয়া | হয়। এভাবে গর্তটি ভরাট হয়ে গেলে তাকে স্থায়ীভাবে মাটি দ্বারা ঢেকে দিতে হয়। এরপর পাঁচ থেকে ছয় মাসের মধ্যে সেই গর্তের বর্জ্য সারে পরিণত হয়। এই বর্জ্য সার কৃষিকাজে ব্যবহৃত হয়।

অথবা, বিপজ্জনক বর্জ্য (Hazardous waste) কী?
উত্তর: সাধারণত যেসকল বর্জ্য মানুষ, প্রাণীজগৎ ও উদ্ভিদজগতের পক্ষে ক্ষতিকর, বিস্ফোরক, ক্ষয়কারী, অগ্নিসঞ্চারক ও পরিবেশের অবক্ষয়ের জন্য দায়ী, তাদেরকে বিপজ্জনক বর্জ্য বলে। এগুলি বিভিন্ন প্রকার হয়ে থাকে, যথা- ভারী ধাতু: সিসা, পারদ, আর্সেনিক, ক্যাডমিয়াম প্রভৃতি। অ্যানোক্লোরিন : ডিডিটি, অর্গ্যানোফসফেট। জৈব পদার্থ: পিসিবি, ডাইঅক্সিন। তেজস্ক্রিয়: প্লুটোনিয়াম-239, ইউরেনিয়াম-235 প্রভৃতি। বিস্ফোরক: মিথাইল আইসোসায়ানেটা ক্ষয়কারী পদার্থ: সালফিউরিক অ্যাসিড, নাইট্রিক অ্যাসিড। অমিসঞ্চারক: মিথানল, বিউটেন প্রভৃতি।
বৈশিষ্ট্য:
1. এই সমস্ত বর্জ্যগুলি পরিবেশে বহুকাল ধরে অবিকৃত বা অপরিবর্তিত অবস্থায় থাকে।
2. এই সমস্ত বর্জ্য জীবজগৎ ও পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি করে থাকে।
3. এই প্রকার বর্জ্য কঠিন, তরল এবং গ্যাসীয় তিন অবস্থায় পাওয়া যায়।

৩.২ দুন বলতে কী বোঝ?
উত্তর:
সংজ্ঞা: শিবালিক এবং হিমাচল হিমালয়ের মাঝে সৃষ্ট নিম্ন উপত্যকাকে দুন বলে।
উৎপত্তি : মূল হিমালয়ের অনেক পরে শিবালিক পর্বতের উত্থান, তাই পর্বতের ঊর্ধ্বাংশ থেকে নেমে আসা নদীগুলি শিবালিক পর্বতে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে হ্রদের সৃষ্টি করে পলি, নুড়ি, বালি দ্বারা ভরাট হতে থাকে। পরবর্তীকালে এখানকার নদীগুলি শিবালিক অংশ কেটে প্রবাহিত হলে হ্রদের জল সরে গিয়ে দুন উপত্যকা গঠিত হয়।
বৈশিষ্ট্য:
1. এই উপত্যকাগুলি সংকীর্ণ, অর্থাৎ দীর্ঘ কিন্তু অল্প প্রশস্ত হয়।
2. এগুলি প্রায় সমতল উপত্যকা।
3. এই উপত্যকা উর্বর হওয়ায় কৃষিকাজ ভালো হয়।
4. পৰ্বত মধ্যস্থ এই উপত্যকাগুলিতে বৈপরীত্য উত্তাপের জন্য উয়তা বেশি হওয়ায় কৃষি, পশুপালন ও পর্যটনের বিকাশের কারণে জনবসতি গড়ে উঠেছে।
উদাহরণ: উত্তরাখণ্ডের দেরাদুন 75 কিমি দীর্ঘ এবং 20 কিমি প্রশস্ত। এটি হল বৃহত্তম দুন উপত্যকা। এ ছাড়া অন্যান্য দুন উপত্যকাগুলি হল পাটিয়া, চৌখাম্বা, কোটা ইত্যাদি।

অথবা, ল্যাটেরাইট মৃত্তিকার দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর:
বৈশিষ্ট্য:
1. এই মাটি গাঢ় লাল বর্ণের যার, স্থানীয় নাম ‘মোরাম’।
2. এই মাটির গঠন বড়ো দানাযুক্ত মৌচাকের মতো।
3. বালির পরিমাণ বেশি হওয়ায় এই মাটির জলধারণ ক্ষমতা কম।
4. ল্যাটেরাইট মাটি অনুর্বর প্রকৃতির হয়।
5. অসধর্মী পেডালফার শ্রেণির এই মাটি অপরিণত স্তরযুক্ত হয়। demodemy
6. এই মৃত্তিকায় চুন, পটাশ, ফসফরাস ও নাইট্রোজেন কম থাকলেও লোহার পরিমাণ অনেক বেশি।

৩.৩ মিলেট বলতে কী বোঝ?
উত্তর: উষ্ণ ও শুষ্ক অঞ্চলের নিকৃষ্ট শ্রেণির ক্ষুদ্রাকার নিরেট দানাশস্যকে একত্রে ইংরেজিতে মিলেট এবং বাংলায় “জনার বলে।
প্রকারভেদ: মিলেট প্রধানত দুপ্রকার। যথা- বৃহৎ দানার মিলেট (জোয়ার, বাজরা), ক্ষুদ্র দানার মিলেট (রাখি)।
বৈশিষ্ট্য:
1. অত্যন্ত শুষ্ক পরিবেশে মিলেট জন্মাতে পারে।
2. ধান ও গমের পর মিলেট জাতীয় শস্য প্রধান খাদ্যশস্য।
3. বিভিন্ন মৃত্তিকায়, যেমন- উর্বর পলিমাটি, রেগুর মাটি, এমনকি অনুর্বর মাটিতেও মিলেট জন্মাতে পারে।
4. আঞ্চলিক গুরুত্ব বেশি হলেও সারা বিশ্বে খাদ্যশস্য হিসেবে মিলেট গুরুত্ব পায়নি। তাই একে ‘Orphan Crops’ বলা হয়।
ব্যবহার:
1. এটি ভারতের বহুসংখ্যক গরিব মানুষের প্রধান খাদ্যদ্রব্য।
2. রাগি ও বাজরার খড় পশুখাদ্যরূপেও ব্যবহৃত হয়।
3. কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ভিটামিন ও খনিজ সমৃদ্ধ হওয়ায় মিলেটের জনপ্রিয়তা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
উদাহরণ: প্রধান মিলেট ফসল হল জোয়ার, বাজরা ও রাগি। জোয়ার, বাজরা, রাগি প্রধান হলেও কোরা, কডন, কুটকি, হরকা, সানওয়া, ভারাও, বৌটি, রাজগিরা এই শস্যগুলিও মিলেট জাতীয় শস্য।

অথবা, E-Mail কী?
উত্তর:
সংজ্ঞা: সাধারণ অর্থে ইমেল হল ইন্টারনেট ব্যবস্থার সুযোগ নিয়ে এক স্থান থেকে আরেক স্থানে পাঠানো একটি বৈদ্যুতিন পর। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে চিঠি আদানপ্রদান করতে | হলে প্রেরক ও প্রাপক উভয়েরই স্বতন্ত্র ইমেল আইডি থাকা আবশ্যিক। পৃথিবীর যে প্রান্ত থেকেই কোনো সংবাদ বা চিঠি বা আদেশ-নির্দেশ পাঠানো হোক তা যে ইমেল আইডির ঠিকানায় পাঠানো হবে মুহূর্তের মধ্যে সেই ঠিকানায় পৌঁছে যাবে। অর্থাৎ, পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে স্বল্প খরচে অল্প সময়ে নানাবিধ খবরাখবর পাঠানোর অন্যতম মাধ্যম হল ইমেল ব্যবস্থা।
অর্থ: ইমেল কথাটির অর্থ হল Electronic Mail।
প্রেরণের মাধ্যম: ইমেল প্রেরণের জন্য Gmail, Outlook, Yahoo mail, Apple Mail, Samsung Mail, Radir Mail ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়।
সুবিধা:
1. এটি বিনামূল্যে তথ্য আদান-প্রদানের মাধ্যম।
2. এর মাধ্যমে ও এর কার্যক্রম দিনে 24 ঘন্টা এবং বছরে 365 দিন থাকে।
3. পৃথিবীর যে-কোনো প্রান্তে বিভিন্ন ব্যবহারকারীদের মধ্যে প্রয়োজনীয় নথি, তথ্য, ফাইল ইত্যাদি বিনিময় করা সম্ভব।
4. ইমেল পাঠানোর জন্য কোনোরকম অর্থ ব্যয় করতে হয় না। জনকে প্রেরণ করা যায়।
অসুবিধা:
1. ইমেল পাঠানোর জন্য অপর ব্যক্তিকেও ইমেল ব্যবহারকারী হওয়া আবশ্যক। উক্ত ব্যক্তি বা সংস্থার ইমেল আইডি না থাকলে কখনোই মেল পাঠানো সম্ভব নয়।
2.ইমেলের মাধ্যমে অনেক সময় হ্যাকিং হওয়ার বা ম্যালওয়্যার দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

৩.৪ জিওস্টেশনারি উপগ্রহ কী?
উত্তর:
সংজ্ঞা: যে সমস্ত কৃত্রিম উপগ্রহগুলি পৃথিবীর ওপর অবস্থিত কোনো একটি স্থানের সাপেক্ষে সামজস্য রেখে পৃথিবীর আবর্তন গতির সঙ্গে সমান গতিতে পৃথিবীর চারদিকে পরিক্রমণ করে, সেগুলিকে ভূসমলয় উপগ্রহ বা জিও-স্টেশনারি স্যাটেলাইট বলে।
বৈশিষ্ট্য:
1. ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় 36,000 কিমি উচ্চতায় এই উপগ্রহগুলি অবস্থান করে।
2. পৃথিবীর নিরক্ষীয় তল বরাবর এগুলি অবস্থান করে। তাই এদের Equatorial Orbit Satellite বলে।
3. পৃথিবীর মতো এই উপগ্রহগুলিও পশ্চিম থেকে পূর্বদিকে আবর্তন করে।
4. অনেক উপরে অবস্থানের জন্য এই উপগ্রহগুলি ভূপৃষ্ঠের একটি গোলার্ধের চিত্র সংগ্রহ করতে পারে।
5. একই জায়গায় অবস্থান করে এইসব উপগ্রহ নির্দিষ্ট সময়ে বহু চিত্র সংগ্রহ করতে পারে।

অথবা, মিলিয়ন শীট বলতে কী বোঝ?
উত্তর:
মিলিয়ন শিট: 1767 সালে সার্ভে অফ ইন্ডিয়া স্থাপিত হয়। এর সদর দপ্তর উত্তরাখণ্ডের দেরাদুনে অবস্থিত। জরিপের সুবিধার জন্য এই সংস্থা ভারতীয় উপমহাদেশের 44° পূর্ব থেকে 104° পূর্ব এবং 4° উত্তর থেকে 40° উত্তর পর্যন্ত বিস্তৃত অংশকে 4° x 4° ব্যবধানে মোট 135টি গ্রিডে ভাগ করেছে। এর মধ্যে জরিপ করা হয় 106টি গ্রিডের। ভারতের গ্রিডগুলি 40 থেকে 92 সূচকসংখ্যার অন্তর্গত। এক্ষেত্রে স্কেল1 ইঞ্চিতে 16 মাইল বা । সেমিতে 10 কিমি ধরা হয়। এই মানচিত্রের RF 1 10,00,000 অর্থাৎ 1 মিলিয়ন হওয়ায় একে মিলিয়ন শিট বলে। উদাহরণ- 72, 73, 83 ইত্যাদি।

৩.৫ পেডিমেন্ট বলতে কী বোঝ?
উত্তর:
গেডিমেন্ট (Pediment): মরু ও মরুপ্রায় অঞ্চলে পর্বতের পাদদেশের প্রস্তরময় ঈষৎ ঢালু, বিস্তীর্ণ সমতলভূমিকে পেডিমেন্ট বলে।
অর্থ: ভূবিজ্ঞানী জি কে গিলবার্ট (GK Gilbert) 1882 সালে প্রথম পেডিমেন্ট শব্দটি ব্যবহার করেন। এর অর্থ ‘পাহাড়ের পাদদেশ (পেডি পাদদেশ, মেন্ট পাহাড়)।
উৎপত্তি: বায়ু ও সাময়িক জলধারার মিলিত কার্যের ফলে পর্বতের পাদদেশ অঞ্চল ক্ষয়ীভূত হয়ে মরুভূমিতে পেডিমেন্টের উৎপত্তি হয়। ভূবিজ্ঞানী সি এ লসনের মতে, পর্বতের ঢালের পশ্চাদপসরণের ফলে পেডিমেন্টের সৃষ্টি হয়।
বৈশিষ্ট্য: (i) পেডিমেন্ট ছোটো বড়ো প্রস্তরখণ্ড, নুড়ি, কাঁকর দ্বারা গঠিত হয়। (i) এর গড় ঢাল 1° -7° পর্যন্ত হয়। (iii) এর আকৃতি আবৃত অবতল প্রকৃতির হয়।
উদাহরণ: সাহারা মরুভূমিতে অ্যাটলাস পর্বতের দক্ষিণ দিকের পাদদেশীয় অঞ্চলে পেডিমেন্ট দেখা যায়।

অথবা, হিমশৈল কী?
উত্তর:
সংজ্ঞা: সমুদ্রে ভাসমান বরফের স্তূপ বা পাহাড়কে হিমশৈল বলে। ‘hot’ মানে বরফ ও জার্মান শব্দ “bang’-এর অর্থ পাহাড় বা শৈল, অর্থাৎ Booberg শব্দের অর্থ হিমশৈল।
সৃষ্টির কারণ: জল জমে বরফে পরিণত হলে তার ঘনত্ব কমে যায় এবং আয়তনে প্রায় এক-দশমাংশ বৃদ্ধি পায়। এর ফলে বরফ জলে ভাসতে থাকে। মহাদেশীয় হিমবাহগুলি যখন সমুদ্র উপকূল পর্যন্ত বিস্তারলাভ করে তখন নিজের ভারে বা সমুদ্রস্রোতের আঘাতে হিমবাহের কিছু অংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে সমুদ্রে ভাসতে থাকে। এইভাবে হিমশৈলের সৃষ্টি হয়।
বৈশিষ্ট্য:
1. হিমশৈলগুলির 10 ভাগের। ভাগ জলের ওপরে থাকে এবং বাকি 9 ভাগ জলের নীচে নিমজ্জিত থাকে।
2. সমুদ্রের কাছেমহাদেশীয় হিমবাহ ভেঙে হিমশৈলের উৎপত্তি ঘটে।
3. হিমশৈল ভাসতে ভাসতে উষ্ণ স্রোতের সম্মুখীন হলে সমুদ্রে মেঘ-কুয়াশার সৃষ্টি হয়।

৩.৬ ITCZ কাকে বলে?
উত্তর:
সংজ্ঞা: কর্কটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে যথাক্রমে উত্তর-পূর্ব আয়ন বায়ু ও দক্ষিণ-পূর্ব আয়ন বায়ু সারাবছর নিয়মিতভাবে নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে প্রবাহিত হয়ে পরস্পর মিলিত হয়। এই দুই বায়ুর মিলন অঞ্চলকে আন্তঃক্রান্তীয় অভিসরণ অঞ্চল বা ITCZ বলা হয়।
অর্থ: ITCZ. (Inter Tropical Convergence Zone)-এর অর্থ হল আন্তঃক্রান্তীয় অভিসরণ অঞ্চল।
অবস্থান: 5° উত্তর থেকে 5° দক্ষিণ অক্ষরেখার মধ্যে এই অঞ্চল অবস্থিত।
বৈশিষ্ট্য:
1. এই অঞ্চলে বায়ু উয় ও ঊর্ধ্বগামী হয়। ফলে, শান্তভাব বিরাজ করে।
2. পৃথিবীর তিনটি অংশ জুড়ে এই অঞ্চল অবস্থান করছে। সবচেয়ে বড়ো অংশটি ভারত মহাসাগর থেকে প্রশান্ত মহাসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। দ্বিতীয় অংশটি রয়েছে আফ্রিকার পশ্চিমে আটলান্টিক মহাসাগরে এবং তৃতীয় অংশটি রয়েছে দক্ষিণ আমেরিকার পশ্চিমে প্রশান্ত মহাসাগরে।

অথবা, শৈবাল সাগর কী?
উত্তর:
সংজ্ঞা: সমুদ্রের মাঝের স্রোতহীন শান্ত শৈবাল বা আগাছাপূর্ণ অংশকে শৈবাল সাগর বা সারগাসো সমুদ্র বলে।
অর্থ: সারগাসো’ (Sargasso) শব্দটি পোর্তুগিজ শব্দ ‘সারগাসন (Sargassum) থেকে এসেছে, যার অর্থ ‘সামুদ্রিক আগাছা।
নামকরণ: বিখ্যাত নাবিক ও নৌ পরিব্রাজক ক্রিস্টোফার কলম্বাস শৈবাল সাগরের নামকরণ করেন।
সৃষ্টির কারণ:
1. কয়েকটি সমুদ্রস্রোতের পরস্পর মিলনের ফলে সৃষ্ট চক্রাকার জলাবর্ত,
2 আয়ন বায়ু ও পশ্চিমা বায়ুর সন্ধিস্থলে অবস্থানের কারণে মৃদু বায়ুর প্রাদুর্ভাব। এই দুই কারণে জলাবর্তের মাঝের অংশ স্রোতহীন ও শান্ত হয়, যা শৈবাল, আগাছা ও জলজ উদ্ভিদ প্রভৃতি জন্মানোর অনুকূল। উদাহরণ- আটলান্টিক মহাসাগরের শৈবাল সাগর।

বিভাগ-‘ঘ’

৪। সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যামূলক উত্তর দাও (বিকল্প প্রশ্নগুলি লক্ষণীয়): ৩x৪=১২

8. জিউগেন ও ইয়ারদা মধ্যে পার্থক্য করো।
উত্তর:

বিষয়ইয়ারদাং (Yardang)জিওগেন (Zeugen)
শিলার অবস্থানমরু অঞ্চলে বায়ুর গতিপথে কঠিন ও কোমল শিলা উলম্বভাবে (লম্বালম্বি) অবস্থান করলে বায়ুর ক্ষয়কার্যের দ্বারা ইয়ারদাং সৃষ্টি হয়।মরু অঞ্চলে বায়ুর গতিপথে কঠিন ও কোমল শিলা অনুভূমিকভাবে (অনুভূমিকভাবে/সমান্তরালভাবে) অবস্থান করলে বায়ুর ক্ষয়কার্যের দ্বারা জিওগেন সৃষ্টি হয়।
উচ্চতাএর উচ্চতা সাধারণত ৬ মিটার পর্যন্ত হতে পারে।এর উচ্চতা ৩ – ৩০ মিটার পর্যন্ত হতে পারে।
আকৃতিইয়ারদাং নৌকোর খুঁটির মতো দেখতে হয়।জিওগেন ছোটো ছোটো ছাতার মতো দেখতে হয়।
মস্তকদেশএদের মাথাগুলি ক্ষয়ের ফলে তীক্ষ্ণ বা ছুঁঁচালো হয়।এদের মাথাগুলি ক্ষয়ের ফলে চ্যাপ্টা ও সমতল টেবিলের মতো হয়।
সৃষ্টির প্রক্রিয়াবায়ুর অবঘর্ষ প্রক্রিয়ায় ইয়ারদাং সৃষ্টি হয়।মূলত অবঘর্ষ প্রক্রিয়ায় জিওগেন গড়ে ওঠে।
ঢালদু’টি পাশের ঢাল তীক্ষ্ণ প্রকৃতির হয়।দু’টি পার্শ্ব সমান ঢালযুক্ত হয়।
বায়ুপ্রবাহের দিকশিলার সমান্তরালভাবে বায়ু প্রবাহিত হয়।কোনো নির্দিষ্ট দিক থেকে বায়ু প্রবাহিত হয় না।
উদাহরণতুর্কিমেনের মরুভূমি ও চিলির আটাকামা মরুভূমিতে ইয়ারদাং দেখা যায়।আমেরিকার সোনোরণ মরুভূমি ও আর্জেন্তিনাতে জিওগেন দেখা যায়।

অথবা, মৌসুমী বায়ুর ওপর জেট বায়ুর প্রভাব ব্যাখ্যা করো।
উত্তর:
জেট বায়ুর প্রভাব: মৌসুমি বায়ুর আগমনে ও প্রত্যাবর্তনে জেট বায়ুর প্রভাব অপরিসীম। ভূপৃষ্ঠ থেকে 9-12 কিমি উচ্চতায় সর্পিল গতিপথে এক শক্তিশালী বায়ু প্রবাহিত হয় | যা জেট বায়ু নামে পরিচিত। এই জেট বায়ুপ্রবাহ ভারতের জলবায়ুকে প্রভাবিত করে। গ্রীষ্মকালে তিব্বত মালভূমির উন্ন বাতাস ক্রান্তীয় পুবালি জেট বায়ুকে শক্তিশালী করে তোলে। এই পুবালি জেটের প্রভাবে ভারতের মাঝবরাবর যে নিম্নচাপের সৃষ্টি করে তার প্রভাবে প্রবল বৃষ্টিপাত ঘটে। আবার, অনেকসময় উপক্রান্তীয় জেট বায়ুর উত্তরে সরে যাওয়ার ফলে মৌসুমি বিস্ফোরণ প্রবল আকার ধারণ করে। কিন্তু তিব্বত মালভূমির উয়তা কম হলে ক্রান্তীয় জেট শক্তিশালী হতে পারে না, ফলে অনিয়মিত বৃষ্টিপাত হতে দেখা যায়। এইভাবে জেট বায়ু ভারতের জলবায়ুকে প্রভাবিত করে। এ ছাড়া পশ্চিমি জেট বায়ু শীতকালে ভূমধ্যসাগর থেকে পশ্চিমি ঝঞ্ঝাকে ভারতে নিয়ে আসে এবং উত্তর- | পশ্চিম ভারতে বৃষ্টিপাত ও পার্বত্য অঞ্চলে তুষারপাত ঘটাতে সাহায্য করে।

৪.২ বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় 3R এর ভূমিকা লেখো।
উত্তর: ব্যবহারের পর একটি বস্তু বা দ্রব্যকে অব্যবহৃত অবস্থায় ফেলে না রেখে তার ক্ষতিকারক দিকগুলি অপসারণের মাধ্যমে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য করে তোলার পদ্ধতিকে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা (Waste Management) বলে। এডউইন চ্যাডউইক ইংল্যান্ডে প্রথম 1842 সালে আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থা চালু করেন। হারম হুইজেনগা 1893 সালে শিকাগোতে গাড়ি প্রতি 1.25 ডলারের বিনিময়ে বর্জ্য পরিবহণ শুরু করেন। পরে 1968 সালে আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার প্রতিষ্ঠাতা বলা হয় ওয়েন হুইজেনগা, ডিন বানট্রোক এবং ল্যারিকে-কে। টেক্সাস শহরে এই সংস্থার কার্যালয় অবস্থিত। মূলত চারটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বর্জ্যের ব্যবস্থাপনা সম্পাদন করা হয়। এটি একরে ‘Reduce, Reuse, Recycle and Refuse’ বা ‘R’ নামে পরিচিত।

বর্জ্যের পরিমাণগত হ্রাস (Reduce): বর্জ্য পদার্থ ব্যবস্থাপনার সর্বপ্রথম পদক্ষেপ হল বর্জ্য পদার্থের পরিমাণ হ্রাস করা। সাধারণত উৎপাদনের পরিমাণ কম করলে বা প্রাকৃতিক সম্পদ কম ব্যবহার করলে অথবা, ভোগের পরিমাণ কম করলে বর্জ্য উৎপাদনের পরিমাণও কম হবে। এই উদ্দেশ্যে | যে-সমস্ত উপায়গুলি অবলম্বন করা যেতে পারে সেগুলি হল- (i) পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে উৎপাদন ও ভোগের বিষয়ে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা। (ii) বাড়িতে, অফিসে, শিল্পকারখানায়, চিকিৎসাকেন্দ্রে যাতে বেশি বর্জ্য তৈরি না হয় সেদিকে নজর রাখা। (iii) উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে উৎপাদন পদ্ধতির পরিবর্তন ঘটিয়ে বর্জ্যের পরিমাণ হ্রাস করা। যেমন- দত্তা ইলেকট্রোপ্লেটিং-এর সময় পদ্ধতির পরিবর্তন ঘটিয়ে সালফেট লবণের পরিবর্তে ক্লোরাইড লবণ ব্যবহার করলে সায়ানাইড উৎপাদিত হয় না। (iv) বর্জ্য উৎপাদনের পরিমাণ হ্রাস করার পাশাপাশি উৎপন্ন বর্জ্যের পরিমাণ হ্রাসের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা। যেমন- যান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ইনসিনেরেটর মেশিনের সাহায্যে একরাশ কঠিন বর্জ্যকে সামান্য আয়তনের বর্জ্য পদার্থে পরিণত করা যায়। বর্জ্য পদার্থ থেকে বিপজ্জনক বর্জ্য পদার্থগুলিকে পৃথকীকরণের মাধ্যমে বর্জ্য পদার্থের পরিমাণ হ্রাস করা হয়।

পুনর্ব্যবহার (Reuse): একটি দ্রব্য একবার ব্যবহারের পর সেটিকে বর্জ্য হিসেবে পরিত্যাগ না করে তার পুনর্ব্যবহার করা সম্ভব। এক্ষেত্রে দুটি উপায় অবলম্বন করা যেতে পারে, যথা- প্রশ্নটির প্রথাগত পুনর্ব্যবহার এবং সৃষ্টিশীল পুনর্ব্যবহার। দ্রব্যটিকে পুনরায় একই কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে এবং দ্রব্যটিকে অন্য কাজে পরিবর্তিত রূপে ব্যবহার করা যেতে পারে। এভাবে ব্যবহারের ফলে একটি নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে বর্জ্য পদার্থের পরিমাণ বহুল পরিমাণে কমানো সম্ভব। ক্রেতাদের ক্রয়মূল্যের উপযুক্ত ব্যবহার এবং ব্যবসার কাঁচামালের সহজলভ্য জোগানের বিষয়গুলি এই প্রকার বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে নিশ্চিত করা যায়। যেমন- (i) খবরের কাগজের বহুবিধ ব্যবহার, (ii) গৃহস্থলির শাকসবজির খোসা বা অন্যান্য জৈব বর্জ্য পদার্থকে বাগানে সার হিসেবে ব্যবহার করা। (ii) ফেলে দেওয়া জিনিস দিয়ে খেলনা, ঘর সাজানোর সামগ্রী প্রভৃতি তৈরি করা ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়কে উল্লেখ করা যেতে পারে। পুনর্ব্যবহারের মাধ্যমে একদিকে যেমন বর্জ্যের পরিমাণ কমে, অন্যদিকে তেমনি সম্পদের অপচয় হ্রাস করা সম্ভব হয়। এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, কোনোরকম বর্জ্য যাতে সৃষ্টি না হয় তার জন্য শূন্য বর্জ্য প্রক্রিয়ার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। ব্রাজিল, কানাডা, ইটালি, জাপান, সুইডেন শূন্য বর্জ্যের দেশের অন্তর্গত। প্রতিবছর 30 মার্চ আন্তর্জাতিক শূন্য বর্জ্য দিবস পালন করা হয়।

পুনরাবর্তন বা পুনর্নবীকরণ (Recycle): বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বর্জ্য পদার্থকে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য অবস্থায় রূপান্তরীকরণকে পুনর্নবীকরণ বা Recycling বলা হয়। বর্তমানে বিশ্বজুড়ে কাগজ, প্লাস্টিক, কাজ, কার্ডবোর্ড প্রভৃতির দ্বারা তৈরি দ্রব্যগুলির বহুল পরিমাণে পুনর্নবীকরণ করা হয় যা আমরা দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার করে থাকি। প্রকৃতপক্ষে, প্রাকৃতিকভাবে প্রাপ্ত পদার্থগুলির বেশিরভাগই পুর্নবীকরণ করা সম্ভব। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র এক্ষেত্রে অন্যতম পথপ্রদর্শক। 1999 সালে 680 লক্ষ টন বর্জ্য পদার্থের পুনর্নবীকরণের মাধ্যমে আমেরিকা যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, তা আজও অক্ষুরা রয়েছে। বর্তমান সময়ে আমেরিকায় বার্ষিক 42% কাগজ, 12% প্লাস্টিকজাত দ্রব্য, 55% অ্যালুমিনিয়ামজাত দ্রব%, 5% স্টিজাত দ্রব্য এবং 52% প্রযুক্তি পুনর্নবীকরণযোগ্য। জার্মানি পুনর্নবীকরণযোগ্য পদার্থ উৎপাদনে বিশ্বে প্রথম স্থান অধিকার করেছে (56.19%)। এশিয়া মহাদেশের মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ায় (53.79%) পুনর্নবীকরণের পরিমান সর্বাধিক। পুনর্নবীকরণযোগ্য দ্রব্যের ব্যবহারের সুবিধা (i) 1 টন কাগজ পুনর্নবীকরণের মাধ্যমে 7,000 গ্যালন জল সাশ্রয় করা যায়। (ii) 1 টন প্লাস্টিক বোতলের পুনাবর্তনের মাধ্যমে এক বছরের জন্য দুইজন ব্যক্তির পরিবারের সমান শক্তি ব্যবহারের সতর হয়। (iii) 1 টন পুনর্নবীকরণযোগ্য কার্ডবোর্ড প্রায় 46 গ্যালন তেল সাশ্রয় করে।

প্রত্যাখ্যান করা (Refuse): পরিবেশকে দূষণমুক্ত রাখতে যে সব দ্রব্য পরিবেশের পক্ষে ক্ষতিকারক, মটিতে সহজে মেশে না, সেই সকল দ্রব্যকে প্রত্যাখ্যান করতে হবে। যেমন- (i) 120 মাইক্রনের নীচে উৎপাদিত প্লাস্টিক বিষয় এবং ব্যবহার বন্ধ করতে হবে, প্রসঙ্গত 20023 সালের জানুয়ারি থেকে ভারতে 120 মাইক্রনের নীচে প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। (ii) প্যাকেজিং দ্রব্যের অত্যধিক ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। (ii) নিম্নমানের প্লাস্টিকজাত দ্রব্য, যেমন- বোতল, বাক্স প্রভৃতির ব্যবহার প্রত্যাখ্যান করতে হবে। এক্ষেত্রে জনগণকে অনেক সচেতন হতে হবে। বিষাক্ত ও বিপজ্জনক বর্জ্য পদার্থের উৎপাদন বন্ধ করতে সরকারের পক্ষ থেকে কঠোর আইন প্রণয়ন করতে হবে।

বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় 4R-এ গুরুত্বগুলি নিরূপ: (1) সম্পদের তাপচর হ্ৰাস: বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে অনেক সময় দ্রব্যগুলিকে একবার ব্যবহার করার পর তাকে পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তোলা হয়। ফলস্বরূপ সম্পদের অপচয় হ্রাস পায়। যেমন- কাগজকে একবার ব্যবহার করার পরে পুনরায় তাকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। (ii) পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা: বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বর্জ্যের পরিমাণগত হ্রাস, পুনর্ব্যাবহার, পুনর্নবীকরণ ও প্রত্যাখ্যান ইত্যাদির মাধ্যমে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা হয়। (iii) পরিবেশ দূষণের মাত্রা হ্রাস: পরিবেশের ভারসাম্যের কথা মাথায় রেখে বর্জ্যের পরিমাণ হ্রাস করা, গৃহস্থালির জৈব বর্জ্যকে সারে পরিণত করে তার পুনর্ব্যবহার ঘটানো, কাজ, কাচ, প্লাস্টিকের মতো দ্রব্যের পুনর্নবীকরণ ইত্যাদির মাধ্যমে। ধ্যমে পরিবেশে দূষণের মাত্রা হ্রাস করা হয়ে থাকে। (iv) জীব বিশ্লেষ্য পদার্থের ব্যবহার বৃদ্ধি: ভোগ্যপণ্যরূপে জীব বিশ্লেষ্য পদার্থের ব্যবহার বৃদ্ধি করা উচিত। যেমন-প্লাস্টিক ব্যাগের পরিবর্তে যদি কাপড়ের কাগজের বা চটের ব্যাগ ব্যবহার করা হয় তাহলে পরিবেশ দূষণের মাত্রা অনেকখানি হ্রাস পাবো মন্দির সংলগ্ন এলাকা থেকে বাসি ফুল সংগ্রহ করে তাকে প্রথমে রোদে শুকিয়ে জীবানুমুক্ত করা হয় এরপর সেটিকে পাউডারের মতো গুঁড়ো করে মণ্ড বানিয়ে অপরিহার্য সুগন্ধি তেলে ডুবিয়ে ধাপকাঠি তৈরি করা হচ্ছে। এভাবে, পচা বাসি ফুলকে Recycle-র মাধ্যমে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য করে তোলা হয়।

অথবা, জৈবতসুর ও জৈব অভঙ্গুর বর্জ্যের পার্থক্য লেখো।
উত্তর:

বিষয়জৈব ভঙ্গুর বর্জ্য (Bio-degradable Waste)জৈব অভঙ্গুর বর্জ্য (Non-biodegradable Waste)
সংজ্ঞাযে সব বর্জ্য বিয়োজক দ্বারা সরল উপাদানে বিয়োজিত হয়, তাদের জৈব বিয়োজ্য বা জৈব ভঙ্গুর বর্জ্য বলে।যে সব বর্জ্য বিয়োজক দ্বারা সরল উপাদানে বিয়োজিত হয় না, তাদের জৈব অবিয়োজ্য বা জৈব অভঙ্গুর বর্জ্য বলে।
উৎপত্তিউদ্ভিদ ও প্রাণিজাত বর্জ্য সাধারণত জীব বিয়োজ্য বা জৈব ভঙ্গুর প্রকৃতির বর্জ্য হয়ে থাকে।উদ্ভিদ ও প্রাণিজাত বর্জ্য ছাড়া সকল প্রকার জৈব অবিয়োজ্য বা জৈব অভঙ্গুর প্রকৃতির বর্জ্য।
প্রকৃতিএই বর্জ্য পদার্থগুলি অল্প কিছুদিনের মধ্যেই মাটিতে মিশে যায়।এইগুলি দীর্ঘকাল ধরে মাটিতে অপরিবর্তিত অবস্থায় থাকে।
উপাদানএই বর্জ্যগুলি মূলত প্রাকৃতিক উপাদান দ্বারা গঠিত হয়।জৈব অভঙ্গুর বর্জ্যগুলি কৃত্রিম উপাদান দ্বারা গঠিত হয়।
বিয়োজকের সঙ্গে সম্পর্কমাটিতে থাকা বিভিন্ন আণুবীক্ষণিক জীব এদের উপর ক্রিয়া করে। যথা— ছত্রাক, ব্যাকটেরিয়া।মাটিতে উপস্থিত আণুবীক্ষণিক জীবেরা এদের উপর ক্রিয়া করতে পারে না।
বিয়োজন ক্ষমতাএই বর্জ্যগুলি জটিল থেকে ধীরে ধীরে সরল উপাদানে পরিণত হয়।এইগুলি অবিয়োজ্য হওয়ায় অপরিবর্তিত থাকে।
দূষণএগুলির দ্বারা জল, বায়ু, মাটি তেমনভাবে দূষিত হয় না।এগুলির দ্বারা জল, বায়ু, মাটি অধিক পরিমাণে দূষিত হয়।
ব্যবস্থাপনাজীব বিয়োজ্য বা জৈব ভঙ্গুর বর্জ্যগুলি কম্পোস্টিং, ভরাটকরণ, শক্তি উৎপাদন ইত্যাদির সাহায্যে ব্যবস্থা করা হয়।জৈব অবিয়োজ্য বা জৈব অভঙ্গুর বর্জ্যগুলি ইনসিনারেশন, পাইরোলাইসিস ইত্যাদির সাহায্যে ব্যবস্থাপনা করা হয়।
প্রভাবপরিবেশের উপর ক্ষতিকারক প্রভাব তুলনামূলকভাবে কম।পরিবেশের চরম ক্ষতিসাধন করে।
উদাহরণফল ও সবজির খোসা, পচা শাকসবজি, খাদ্য, ঘাস ইত্যাদি।প্লাস্টিক, ইলেকট্রনিক বর্জ্য (ই-বর্জ্য), কাঁচ, কংক্রিট ইত্যাদি।

৪.৩ ভারতে পূর্ববাহিনী নদীগুলির মোহনায় ব-দ্বীপ সৃষ্টি হয়েছে কেন?
উত্তর: ভারতের অধিকাংশ নদী পূর্ববাহিনী। যেমন- মহানদী, গোদাবরী, কৃষ্ণা, কাবেরী প্রভৃতি পূর্ববাহিনী নদীগুলির মোহানায় বদ্বীপ গড়ে ওঠার কারণগুলি হল-

1. দীর্ঘ নদীপথ: নদীগুলির দৈর্ঘ্য দৈর্ঘ্য বেশি হওয়ায় নদীতে পলি-বালির পরিমাণ বেশি হয়। যার ফলে নদী তীরবর্তী অঞ্চলে পলির সঞ্চয় ঘটে বদ্বীপ সৃষ্টি হয়।

2. অধিক সংখ্যক উপনদী: পূর্ববাহিনী নদীগুলির উপনদীর সংখ্যা অধিক হওয়ায় মূল নদী ও উপনদীর মিলিত ক্ষয়জাত পদার্থের পরিমাণ অনেক বেশি হয়।

3. নিম্নপ্রবাহে মৃদু চাল: নদীগুলির নিম্নপ্রবাহের ঢাল মৃদু হওয়ায় জলের গতি কম হয়। ফলে, মোহানায় সহজেই পলি সঞ্চয় হতে পারে।

4. অগভীর মহীসোপান: নদীগুলি পূর্ববাহিনী হয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে। এই সাগরের মহীসোপান অগভীর হওয়ায় নদীগুলির মোহানায় পলি সঞ্চয়ের আদর্শ পরিবেশ রয়েছে।

5. সমুদ্রস্রোত ও সমুদ্রতরসের প্রভাব: নদীগুলির মোহানায় সমুদ্রস্রোতের প্রভাব অনেক কম হওয়ায় পলিরাশি সঞ্চিত হওয়ার সুযোগ পায়। পূর্ববাহিনী নদীগুলির মোহানা অঞ্চলের উপকূলের সমুদ্রতরঙ্গগুলির মধ্যে সঞ্চয়ধর্মী প্রবণতা লক্ষ করা গেছে। যে কারণে ভারতের পূর্ববাহিনী নদীগুলির মোহানায় বদ্বীপ গড়ে উঠেছে।

6. পলিগঠিত নদীখাত: পূর্বাহিনী নদীগুলির নিম্নপ্রবাহের নদীখাত নরম পলি দ্বারা গঠিত বলে নদীতে পলি সঞ্চয়ের পরিমাণ অনেক বেশি।

7. ক্ষয়কার্যজনিত পদার্থ: নদীগুলিতে ক্ষয়জাত পদার্থের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি, ফলে নদীগুলির মোহানায় বদ্বীপ গঠনের জন্য নুড়ি, কাঁকর, পলি, বালি, কাদার অভাব হয় না।

অথবা, ভারতে রেলপথ ও সড়কপথের গুরুত্বের তুলনামূলক আলোচনা করো।
উত্তর:

বিষয়সড়কপথ (Roadway)রেলপথ (Railway)
যানবাহনট্রাক, লরি, বাস, মোটরগাড়ি প্রভৃতি।রেলগাড়ির একমালার যান।
গতিপথদ্রুত গতিসম্পন্ন।অতি দ্রুত গতিসম্পন্ন।
প্রাথমিক ব্যয়রেলপথ অপেক্ষা প্রাথমিক ব্যয় কম।সড়কপথ অপেক্ষা প্রাথমিক ব্যয় বেশি।
পরিবহন ব্যয়পরিবহন ব্যয় ঘটে বেশি।পরিবহন ব্যয় বেশি, তবে সড়কপথের তুলনায় কম।
দ্রব্যের ওজনহালকা ও মাঝারি ওজনের দ্রব্য পরিবহন করা হয়।মাঝারি ও ভারী দ্রব্য বহন করা হয়।
বাণিজ্যসড়কপথ প্রধানত আন্তঃরাজ্য বাণিজ্যে ব্যবহৃত হয়।আন্তঃআঞ্চলিক বাণিজ্যে এবং আন্তঃআঞ্চলিক বাণিজ্যে কম ব্যবহৃত হয়।
যাত্রী ও পণ্য পরিবহনদ্রব্যের তুলনায় যাত্রী বেশি।দ্রব্য ও যাত্রী উভয়েই বেশি।
নিরাপত্তাঅপেক্ষাকৃত কম বিপদসংকুল।নিরাপদ পরিবহন মাধ্যম।
যাত্রী ওঠানো-নামানোর স্থানযেকোনো স্থানে ও সময়ে ওঠানো-নামানো করা যায়।নির্দিষ্ট প্ল্যাটফর্মে ওঠানো-নামানো করতে হয়।
প্রসারদুর্গম অঞ্চলে পরিবহনের উপযোগী।কয়েকটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে পরিবহনের উপযোগী।

৪.৪ উপগ্রহ চিত্রের সুবিধা ও অসুবিধাগুলি উল্লেখ করো।
উত্তর:

• উপগ্রহ চিত্র ব্যবহারের সুবিধাগুলি হল –

1. তথ্য সংগ্রহ: কৃত্রিম উপগ্রহের সাহায্যে পৃথিবীর যে কোনো প্রান্ত থেকেই তথ্য সংগ্রহ করা সহজসাধ্য হয়েছে। কোনো স্থান অতি দুর্গম হলেও উপগ্রহকে কাজে লাগিয়ে সেই অঞ্চলের পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য সংগ্রহ করায় বর্তমানে এই ধরনের চিত্রের ব্যবহার ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

2. নির্ভুল তথ্য : উপগ্রহ চিত্র সংগ্রহের জন্য উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন

3. প্রযুক্তি ব্যবহৃত হওয়ায় প্রেরিত তথ্য নির্ভুল হয়। ফলে তথ্যের ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্তগ্রহণে অনেক সুবিধা হয়। এইজন্য প্রতিরক্ষা দপ্তরে উপগ্রহ চিত্রের ব্যবহার বেশি।

4. সাশ্রয়কর : শ্রমশক্তি ব্যবহার করে জমি জরিপ ও সমীক্ষা যথেষ্ট সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুলও বটে। উপগ্রহের মাধ্যমে খুব দ্রুত তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব।

5. রিমোট সেন্সিং-এর অসুবিধা দূরীকরণ: অনেক সময় আকাশ মেঘে ঢাকা থাকলে উপগ্রহ চিত্র পাওয়া যায় না, কিন্তু বর্তমানে মাইক্রোওয়েভসেন্সরের সাহায্যে চিত্র গ্রহণ করার ফলে রিমোট সেন্সিং-এর এই অসুবিধা দূর হয়েছে। বর্তমানে দিন ও রাত উভয় সময়ই তথ্য সংগ্রহ করা যায়।

• উপগ্রহ চিত্রের বিভিন্ন সুযোগসুবিধা থাকলেও এই চিত্র ব্যবহারের কিছু সীমাবদ্ধতা আছে –

1. উচ্চতা ও ব্যাপ্তি নির্ণয়ে অসুবিধা: উপগ্রহ চিত্রের দ্বারা কোনো বস্তুর সঠিক উচ্চতা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায় না।

2. সমীক্ষাগত অসুবিধা: উপগ্রহ চিত্রের সাহায্যে বৃহৎ অঞ্চলের তথ্য পাওয়া সম্ভব হলেও ভূমির অংশবিশেষে বা ক্ষুদ্র পরিসরের কোনো নির্দিষ্ট স্থানের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পর্যায়ে (Micro level) নিখুঁত তথ্য পাওয়া যায় না।

3. ব্যয়বহুল : উপগ্রহ চিত্র প্রস্তুতির জন্য কয়েকটি পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়ে থাকে। কৃত্রিম উপগ্রহ প্রস্তুতি, মহাকাশে প্রেরণ, তথ্য আহরণ, চিত্র প্রক্রিয়াকরণ ইত্যাদি প্রাথমিক পর্যায় অত্যন্ত ব্যয়বহুল হওয়ায় সব দেশের পক্ষে এই ব্যবস্থায় স্বনির্ভর হওয়া সম্ভব নয়।

4. ব্যবহারের জটিলতা: উপগ্রহ চিত্র সংগ্রহ ও উপলব্ধি করতে প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত হওয়া প্রয়োজন। সঠিক জ্ঞানের অভাবে এই চিত্রের ভুল ব্যাখ্যা ও ব্যবহারের জটিলতার কারণে সকলে এই চিত্র বুঝতে ব্যর্থ হতে পারে। ফলে এই চিত্র বিশ্লেষণে উপযুক্ত প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হয়। তাই উন্নয়নশীল দেশ অপেক্ষা উন্নত দেশে এর ব্যবহার বেশি।

অথবা, TCC ও FCC এর মধ্যে পার্থক্য লেখো।
উত্তর:

বিষয়প্রকৃত রং-এর উপগ্রহ চিত্র (True Color Composite – TCC)ছদ্ম রং-এর উপগ্রহ চিত্র (False Color Composite – FCC)
রং-এর ব্যবহারএই চিত্রে ভূপৃষ্ঠের উপাদানগুলিকে খালি চোখে যে রং-এর দেখায়, সেই প্রকৃত রং-ই উপগ্রহ চিত্রে ব্যবহৃত হয়। যেমন— সবুজ উদ্ভিদ সবুজ রং দিয়ে দেখানো হয়।এই চিত্রে ভূপৃষ্ঠের উপাদানগুলিকে তাদের প্রকৃত রং-এর পরিবর্তে অন্য রং দিয়ে দেখানো হয়। যেমন— সবুজ উদ্ভিদ লাল রং দিয়ে দেখানো হয়।
চিত্রের প্রস্তুতিএক্ষেত্রে সাধারণত সবুজ, লাল ও নীল রশ্মির তরঙ্গদৈর্ঘ্যকে যথাক্রমে নীল, সবুজ ও লাল রং-এর ফিল্টার দিয়ে পাঠিয়ে তথ্য সংগ্রহ করে চিত্র প্রস্তুত করা হয়।এক্ষেত্রে সাধারণত সবুজ, লাল ও নীল রশ্মির তরঙ্গদৈর্ঘ্যকে যথাক্রমে লাল, অবলোহিত (NIR) ও সবুজ ফিল্টারের মধ্যে দিয়ে পাঠিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হয় এবং তা দিয়ে চিত্র প্রস্তুত করা হয়।
অসুবিধানীল ও সবুজ রং-এর তরঙ্গদৈর্ঘ্য কাছাকাছি হওয়ায় পাশাপাশি অবস্থিত জলাশয় ও বনভূমিকে আলাদা করতে অসুবিধা হয়।উপযুক্ত জ্ঞান ও দক্ষতা ছাড়া এই চিত্র পাঠ করা সম্ভব নয়। তবে এই চিত্রে প্রকৃত রং-এর পরিবর্তে অন্য রং দিয়ে দেখানো হয় বলে উপাদানগুলিকে আলাদা করতে অসুবিধা হয় না।
গোপনীয়তাএই চিত্রের মাধ্যমে কোনো দেশের ভূপৃষ্ঠের বিভিন্ন বিষয়ের গোপনীয়তা বজায় থাকে।এই চিত্রের মাধ্যমে প্রত্যেক দেশের নিজের নিজের ভূপৃষ্ঠের প্রতিচ্ছবিতে গোপনীয়তা বজায় থাকে।
ব্যবহারিক গুরুত্বব্যবহারিক গুরুত্ব তুলনামূলকভাবে কম।ব্যবহারিক গুরুত্ব তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি।

আরো পড়ুন

Madhyamik ABTA Test Paper 2026 Life Science Page 31 Solution | মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান ABTA টেস্ট পেপার সমাধান পেজ ৩১

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment