মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিভিন্ন রুপ এবং সর্বার্থসাধক উচ্চবিদ্যালয় প্রসঙ্গে মুদালিয়র কমিশনের অভিমত সংক্ষেপে লেখাে। Class 12 | Education (শিক্ষাবিজ্ঞান) | 8 Marks
উত্তর:-
মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিভিন্ন রূপ ও সর্বার্থসাধক উচ্চবিদ্যালয় প্রসঙ্গে মুদালিয়র কমিশনের অভিমত :
মুদালিয়র কমিশনের মতে, মাধ্যমিক স্তরের ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষাদানের হবেথা করতে হবে তাদের প্রবণতা, সামর্থ্য ও রুচির ভিত্তিতে। সেই কারণে কমিশন মূল সাতটি প্রবাহ বা বিভাগের সুপারিশ করে। ওই প্রবাহ (stream) অনুযায়ী শিক্ষাদানের জন্য কমিশন বিভিন্ন ধরনের বিদ্যালয় প্রসঙ্গেও তার অভিমত ব্যক্ত করে। নীচে কয়েকপ্রকার বিদ্যালয় সম্পর্কে আলোচনা করা হল —
[1] নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয় : কমিশনের মতে, এই ধরনের বিদ্যালয়গুলিতে তিনটি শ্রেণি থাকবে | প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে ছাত্রছাত্রীরা এই ধরনের বিদ্যালয়ে ভরতি হতে পারবে। প্রাথমিক শিক্ষার পর এখানে শিক্ষার্থীরা তিন বছর অধ্যয়ন করতে পারবে।
[2] উচ্চবিদ্যালয় : তৎকালীন সময়ে প্রচলিত দশম শ্রেণি বিশিষ্ট বিদ্যালয়গুলি এই বিভাগের অন্তর্গত হবে।
[3] উচ্চতর বিদ্যালয় : এই ধরনের বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি থেকে একাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদানের ব্যবস্থা থাকবে। অর্থাৎ, শিক্ষার্থীরা নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাঠ শেষ করে এখানে চার বছর পড়াশােনা করতে পারবো।
[4] সর্বার্থসাধক বা বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয় : কমিশনের মতে, যে সমস্ত অঞ্চলে সুযােগ পাওয়া যাবে, সেখানে সর্বার্থসাধক বা বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয় স্থাপনের ব্যবস্থা করতে হবে। এখানে শিক্ষার্থীরা তাদের রুচি, সামর্থ্য ও প্রবণতা অনুযায়ী প্রবাহ বা বিভাগ নির্বাচনের সুযােগ পাবে। কমিশনের মতে, পৃথকভাবে অথবা এই বিদ্যালয়গুলির সঙ্গে কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।
[5] কৃষিশিক্ষার বিদ্যালয়: গ্রামাঞ্চলে কৃষি বিষয়ে শিক্ষার জন্য কৃষি বিদ্যালয় স্থাপনের ব্যবস্থা করে ওইসব বিদ্যালয়ে কৃষিবিদ্যা ছাড়াও বাগান তৈরি, পশুপালন এবং বিভিন্ন ধরনের কুটিরশিল্প বিষয়ে পাঠদানের ব্যবস্থা করতে হবে।
[6] কারিগরি শিক্ষার বিদ্যালয় : দেশের শিল্পাঞ্চলগুলির নিকটবর্তী অংশে কারিগরি শিক্ষার জন্য যথেষ্ট সংখ্যক বিদ্যালয় স্থাপনের ব্যবস্থা করতে হবে।।
[7] পাবলিক বিদ্যালয় : ইংরেজ শাসনকালে ভারতবর্ষে বহু পাবলিক স্কুল স্থাপিত হয়। কমিশন ওই পাবলিক স্কুলগুলিকে জাতীয় ভাবধারায় অনুপ্রাণিত হয়ে পঠনপাঠন চালানাের জন্য সুপারিশ করেন। [8] আবাসিক বিদ্যালয় ; যে সমস্ত ব্যক্তিকে চাকুরি সুত্রে বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে হয়, তাদের ছেলেমেয়েদের জন্য অথবা যাদের অভিভাবকঅভিভাবিকা ছেলেমেয়েদের দেখাশােনা করতে পারে না, তাদের জন্য গ্রামাঞ্চলে কমিশন আবাসিক বিদ্যালয় স্থাপনের সুপারিশ করে।
[9] আবাসিক দিবা বিদ্যালয় : কমিশনের মতে, এই ধরনের বিদ্যালয়ে আহার ও জলখাবারের ব্যবস্থা থাকবে। এই জন্য অভিভাবক অভিভাবিকাদের অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হবে।
[10] প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় : কমিশনের মতে, দৈহিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী ছেলেমেয়েদের জন্য বিশেষ ধরনের বিদ্যালয় বা প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় স্থাপনের ব্যবস্থা করতে হবে।
[11] আংশিক সময়ের বিশেষ বিদ্যালয় : কমিশনের মতে, যে সমস্ত শিক্ষার্থী 14 বছর বয়স পর্যন্ত শিক্ষা সম্পূর্ণ না করে মাঝপথে পড়া ছেড়ে দেবে, তাদের জন্য আংশিক সময়ের বিশেষ বিদ্যালয় স্থাপন করতে হবে ৷
[12] বালিকা বিদ্যালয় : কমিশনের মতে, প্রত্যেক রাজ্যে বিভিন্ন অঞ্চলে পৃথক বালিকা বিদ্যালয় স্থাপনের ব্যবস্থা করতে হবে। ওইসব বিদ্যালয়ে গার্হস্থ্য বিজ্ঞান, শিল্পকলা, সংগীত প্রভৃতি বিষয়ে পাঠদানের ব্যবস্থা করতে হবে।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।