মৃত্তিকা ক্ষয়ের কয়েকটি মনুষ্যসৃষ্ট কারণ লেখাে। Class 10 | Geography | 5 Marks‘
উত্তর: মৃত্তিকা ক্ষয়ের মনুষ্যসৃষ্ট কারণসমূহ মৃত্তিকা ক্ষয় প্রাকৃতিক এবং মনুষ্যসৃষ্ট উভয় কারণেই হয়ে থাকে। এর মধ্যে মনুষ্যসৃষ্ট কারণগুলি হল—

1. জনসংখ্যার চাপ : যেখানে মানুষের বসবাস বেশি সেখানে বাড়িঘর নির্মাণ, রাস্তাঘাট তৈরি, জল সরবরাহ, জলনিকাশি ব্যবস্থা, কৃষিকাজ প্রভৃতি বেশিমাত্রায় করার জন্য মৃত্তিকার ব্যাপক ক্ষয় হয়। সুতরাং জনসংখ্যার চাপ যত বাড়বে , মৃত্তিকা ক্ষয় ততই বাড়বে।
2. অনিয়ন্ত্রিত পশুচারণ : পাহাড়ি অঞ্চলে বা ঢালু ভূমিভাগে অনিয়ন্ত্রিতভাবে পশুচারণ করলে গবাদিপশু তৃণ বা ছােটো ছােটো গাছ উপড়ে খেয়ে ফেলে। এতে ভূমির আবরণ আলগা হয়ে যায়। এছাড়া, পশুর পায়ের খুরের আঘাতে উপরিস্তরের নরম মাটি ক্ষয়ে যায়। বৃষ্টি হলে ওইসব মাটি ধুয়ে অন্যত্র অপসারিত হয়।
3. অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে খনন : খনিজ কাঁচামালের জোগান অব্যাহত রাখতে অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে খনন কার্য করা হয়। ফলে ওইসব স্থানের ভূমি উন্মুক্ত ও শিথিল হয়ে মৃত্তিকার ক্ষয়কে ত্বরান্বিত করে। আবার অনেক সময় খনিজদ্রব্য সংগ্রহ করার পর ওই খনিটি ঠিকমতাে ভরাট করা না হলেও ভূমিক্ষয় বাড়ে।
4. বৃক্ষচ্ছেদন : গাছ শিকড় দিয়ে মাটিকে ধরে রাখে, পাতা দিয়ে। বৃষ্টির ফোঁটার আঘাত থেকে মাটিকে সুরক্ষিত রাখে এবং ছায়া দিয়ে অতিরিক্ত উষ্ণতা থেকে রক্ষা করে। ফলে মাটি ফেটে সহজে ক্ষয় হয়। না। এ ছাড়াও, বায়ুর গতিবেগকে কমিয়ে মাটির ক্ষয় রােধ করে। এজন্য নির্বিচারে গাছ কাটলে মৃত্তিকা ক্ষয় বৃদ্ধি পায়।
5. অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কৃষিকাজ : প্রথাগতভাবে যখন আগের ছদ ও আগাছা নির্মূল করে চাষের জমি তৈরি করা হয়, তখন সেই সুমি রােদ বৃষ্টি বাতাসের কাছে উন্মুক্ত হয়ে মৃত্তিকার ক্ষয়ে সাহায্য করে। এ ছাড়া, ঝুম চাষ বা স্থানান্তর কৃষিপদ্ধতির জন্যও বিপুল পরিমাণে মৃত্তিকা ক্ষয় হয়। আবার জমির প্রকৃতি বা মাটির উপাদান বিচার না করে ট্রাক্টর, হারভেস্টর ইত্যাদির অত্যধিক ব্যবহার টিকে সহজে আলগা করে দেয় যা মৃত্তিকা ক্ষয়কে ত্বরান্বিত করে।
6. ভূমিধস: পার্বত্য অঞলে বৃক্ষচ্ছেদন, সড়ক ও রেলপথ নির্মাণ, জলাধার নির্মাণ, পর্বতের গায়ে অবৈজ্ঞানিকভাবে কৃষিকাজ করলে পার্বত্যঢালের ভূমিভাগে ধস নামে। এই ভূমিধস মৃত্তিকা ক্ষয়ের অন্যতম কারণ। অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত, ভূমিকম্প, অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে নির্মাণকার্য এই ভূমিধসকে আরও ত্বরান্বিত করে। এর ফলে পাহাড়ের ঢাল বেয়ে নুড়ি, পাথর, মাটি, বালি প্রভৃতি নীচের দিকে নেমে আসে।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।