মুদালিয়র কমিশনের মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষণ পদ্ধতি বিষয়ক সুপারিশ |  নির্দেশনা ও পরামর্শদান সম্পর্কে কমিশনের সুপারিশগুলি কি কি।

মুদালিয়র কমিশন মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষণ পদ্ধতি বিষয়ে যে সকল মূল্যবান সপারিশ লিপিবদ্ধ করে, তা লেখাে। নির্দেশনা ও পরামর্শদান সম্পর্কে কমিশনের সুপারিশগুলি কী কী? 5+3      Class 12 | Education (শিক্ষাবিজ্ঞান) | 8 Marks

উত্তর:-

মুদালিয়র কমিশনের মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষণ পদ্ধতি বিষয়ক সুপারিশ :
মুদালিয়র কমিশন মাধ্যমিক স্তরের ছাত্রছাত্রীদের জন্য গতিশীল শিক্ষা পদ্ধতির সুপারিশ করে। ওই সুপারিশে যা বলা হয়, তা নীচে উল্লেখ করা হল— 

[1] তথ্য পরিবেশনের পরিবর্তে মূল্যবােধ ও কর্মপ্রবণতার বিকাশসাধন: কমিশনের মতে, বিদ্যালয় স্তরের শিক্ষা পদ্ধতির লক্ষ্য হল ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে মূল্যবােধ ও সঠিক ধারণা গড়ে তােলা এবং তাদের মধ্যে কর্মের প্রতি আসক্তি সৃষ্টি করা। 

[2] মুখথের পরিবর্তে কর্মমুখী প্রকল্প পদ্ধতি গ্রহণ : পঠনপাঠনের ক্ষেত্রে মুখস্থের পরিবর্তে ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন কর্মমুখী প্রকল্পে যুক্ত করার সুপারিশ করা হয়। যে-কোনাে বিষয়ে ছাত্রছাত্রীদের নিজস্ব প্রকাশভঙ্গি ও চিন্তাশক্তির বিকাশের ওপর গুরুত্ব আরােপ করা হয়। 

[3] ব্যক্তিগত ও দলগত কর্মপ্রচেষ্টার ওপর গুরুত্ব প্রদান: বিদ্যালয় স্তরে শিক্ষার্থীরা যাতে ব্যক্তিগত ও দলগত কর্মপ্রচেষ্টায় শিক্ষালাভের চেষ্টা করে, সে বিষয়ে তাদের উদ্বুদ্ধ করার সুপারিশ করা হয়। 

[4] বাড়ির কাজের ওপর গুরুত্ব: কমিশন ছাত্রছাত্রীদের দৈনিক বাড়ির কাজ (home task) দেওয়ার পক্ষে অভিমত ব্যক্ত করে।

[5] গ্রন্থাগারের ব্যবস্থা : প্রতিটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যাতে গ্রন্থাগার গড়ে ওঠে, তার জন্য কমিশন সুপারিশ করে। ওইসব গ্রন্থাগারে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত গ্রন্থাগারিক নিয়ােগ করার পরামর্শও দান করা হয়। 

[6] শিক্ষা-সহায়ক উপকরণের ব্যবহার: শিক্ষাদানের সময় ছাত্রছাত্রীদের মনােযােগ আকর্ষণ এবং কঠিন বিষয়গুলি সহজ করে বােঝানাের জন্য শ্রেণিকক্ষে প্রয়ােজনীয় শিক্ষা সহায়ক উপকরণ ব্যবহার প্রসঙ্গেও মাধ্যমিক শিক্ষা কমিশন অভিমত ব্যক্ত করে।

মুদালিয়র কমিশনের নির্দেশনা ও পরামর্শদান বিষয়ক সুপারিশ : 
কমিশন মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষামূলক এবং বৃত্তিমূলক নির্দেশনা ব্যবস্থা চালু করার সুপারিশ করে। কমিশনের সুপারিশগুলি নীচে উল্লেখ করা হল— 

[1] নির্দেশনা ও পরামর্শদানের ওপর গুরুত্ব: মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাকর্তৃপক্ষকে শিক্ষামূলক নির্দেশনা ও পরামর্শদানের বিষয়ে সঠিক গুরুত্ব আরােপ করতে হবে।

[2] শিক্ষাক্রম সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি : বহুমুখী শিক্ষাক্রম সম্পর্কে ছাত্রছাত্রীরা যাতে বিভিন্ন তথ্য জানতে পারে, তার জন্য চলচ্চিত্রের মাধ্যমে প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে। ছাত্রছাত্রীরা নিজ নিজ সামর্থ্য এবং পছন্দের বিষয়গুলি চলচ্চিত্রের তথ্যের সঙ্গে যাচাই করার সুযােগ পাবে | 

[3] গাইডেন্স অফিসার ও কেরিয়ার মাস্টার নিয়ােগ : প্রত্যেকটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত গাইডেন্স অফিসার ও কেরিয়ার মাস্টার নিয়ােগের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়ােজনে কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থানুকূল্যে বিদ্যালয়ে নিযুক্ত শিক্ষকদের এই বিষয়ে প্রশিক্ষণ দান করতে হবে।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment