মুদালিয়র কমিশন বর্ণিত সাধারণ শিক্ষার কাঠামাে সংক্রান্ত সুপারিশগুলি আলােচনা করাে। 

মুদালিয়র কমিশন বর্ণিত সাধারণ শিক্ষার কাঠামাে সংক্রান্ত সুপারিশগুলি আলােচনা করাে।     Class 12 | Education (শিক্ষাবিজ্ঞান) | 8 Marks

উত্তর:-

সাধারণ শিক্ষার কাঠামাে সংক্রান্ত সুপারিশসমূহু : মুদালিয়র কমিশন বর্ণিত সাধারণ শিক্ষার কাঠামাে-সংক্রান্ত সুপারিশগুলি। হল— 

[1] শিক্ষার সময়কাল: মুদালিয়র কমিশন মাধ্যমিক শিক্ষার কাঠামাে সম্পর্কে সুপারিশ করতে গিয়ে সম্পূর্ণ বিদ্যালয় শিক্ষার সময়কালকে 12 বছর করার পক্ষে অভিমত ব্যক্ত করেছে |

[2] প্রাথমিক বা নিম্নবুনিয়াদি শিক্ষাস্তর: কমিশনের মতে, মানবজীবনের প্রস্তুতির জন্য মাধ্যমিক শিক্ষাস্তরটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হলেও, সুপরিকল্পিতভাবে শিক্ষার পূর্ববর্তী ও পরবর্তী পর্যায়ের সঙ্গে সংগতি রেখে তার পুনর্গঠনের কাজ করতে হবে। তাই কমিশনের সুপারিশ হল, 4 বা 5 বছরের প্রাথমিক বা নিম্নবুনিয়াদি স্তরের পর মাধ্যমিক শিক্ষার স্তর শুরু হবে। 

[3] মাধ্যমিক শিক্ষাস্থর: কমিশনের মতে, মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষায় দুটি পর্যায় থাকবে পর্যায় দুটি হল—i. নিম্ন-মাধ্যমিক এবং ii. উচ্চতর মাধ্যমিক। 

[4] বিকল্প শিক্ষা-কাঠামাে : বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও অভিভাবকঅভিভাবিকাদের অসুবিধার কথা বিবেচনা করে কমিশন একটি বিকল্প মাধ্যমিক শিক্ষা কাঠামাের প্রস্তাব করে। নতুন প্রস্তাবে বলা হয়, প্রচলিত ব্যবস্থা অনুযায়ী 10 বছরের বিদ্যালয় শিক্ষা হবে 11 বছরের | মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষায় যে ইনটারমিডিয়েট স্তরটি ছিল, সেটিকে দুটি পর্যায়ে ভাগ করে তা, 1 বছর মাধ্যমিক স্তরের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে এবং বাকি 1 বছরকে স্নাতক স্তরের সঙ্গে যােগ করে 3বছরের ডিগ্রি কোর্স পড়ানাের ব্যবস্থা করতে হবে l

তবে যতদিন পর্যন্ত না উপযুক্ত ব্যবস্থা সম্পূর্ণ হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত , নিম্নমাধ্যমিক ও প্রস্তাবিত উচ্চতর মাধ্যমিক—উভয় ব্যবস্থাই পাশাপাশি চালানাের ব্যবস্থা করতে হবে। 

[5] মাধ্যমিক শিক্ষাস্তর সম্পর্কিত অন্যান্য সুপারিশ: 

i. দশম শ্রেণির (SF বা স্কুল ফাইনাল) বিদ্যালয়গুলিকে একাদশ শ্রেণির (HS বা হায়ার সেকেন্ডারি) বিদ্যালয়ে উন্নীত করার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে ৷ 

ii. যে সকল শিক্ষার্থী স্কুল ফাইনাল (দশম শ্রেণির) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে তাদেরকে এক বছরের প্রাকৃ-বিশ্ববিদ্যালয় কোর্স (PU) অধ্যয়ন করে স্নাতক স্তরে পড়ার যােগ্যতা অর্জন করতে হবে। 

iii. যে সকল শিক্ষার্থী একাদশ শ্রেণির পাঠ তথা HS অথবা PU (প্রাক-বিশ্ববিদ্যালয়) কোর্স শেষ করবে, তারাই শুধু পেশাগত শিক্ষার কলেজে ভরতি হবার জন্য যােগ্য বলে বিবেচিত হবে।

iv. বৃত্তি বা পেশাগত শিক্ষার কলেজগুলিতে এক বছরের প্রাকৃ-বৃত্তিমূলক কোর্স চালু করার প্রস্তাবও করা হয়। 

v. শিক্ষার্থীরা যাতে নিজেদের রুচি, প্রবণতা ও সামর্থ্য অনুযায়ী শিক্ষালাভের সুযােগ পায়, তার জন্য মাধ্যমিক স্তরে বহুমুখী বিদ্যালয় (Multipurpose School) স্থাপনের কথাও বলা হয়। 

vi. বহুমুখী বিদ্যালয়ের পাঠ শেষ করে ছাত্রছাত্রীরা যাতে উচ্চতর কারিগরি শিক্ষার পাঠগ্রহণের সুযােগ পায়, তার জন্য কমিশন পলিটেকনিক অথবা প্রযুক্তি শিক্ষার প্রতিষ্ঠান স্থাপনের প্রস্তাব করে। 

vii. কমিশন প্রতিটি রাজ্য সরকারকে গ্রামীণ বিদ্যালয় স্থাপনের পরামর্শ দেয় এবং মহাবিদ্যালয়গুলিতে কৃষিবিদ্যা, উদ্যানপালন, পশুপালন, কুটিরশিল্প প্রভৃতি বিষয়ে শিক্ষার সুযােগ সৃষ্টি করার জন্য সুপারিশ করে।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment