প্রশ্ন : চারটি নদীকেন্দ্রিক সভ্যতার নাম লেখ এই সভ্যতা গুলি নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে গড়ে উঠেছিল কেন ?
অথবা,
চারটি নদীকেন্দ্রিক সভ্যতার নাম লেখো। এই সভ্যতাগুলি নদী তীরবর্তী অঞ্চলে গড়ে উঠেছিল কেন?
উত্তর: নদীমাতৃক সভ্যতা – নব্যপ্রস্তর যুগে মানুষ খাদ্য উৎপাদনকারীতে পরিণত হয়ে উঠলে প্রযােজন হয় স্থায়ী বাসস্থানের। বিভিন্ন কারণে মানুষ নদীর তীরে বা নদী উপত্যকাকে বসবাসের আদর্শ স্থান বলে মনে করেছিল, তাই সেখানে বসবাস শুরু করে। ক্রমশ নদী তীরবর্তী অঞ্চলে গড়ে ওঠে সভ্যতা। একেই বলে নদীমাতৃক সভ্যতা। যেমন : সিন্ধু নদীর উপত্যকায় হরপ্পা সভ্যতা, নীলনদের তীরে মিশরীয় সভ্যতা, টাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিস নদীর তীরে মেসােপটেমিয়া ও ব্যাবিলনীয় সভ্যতা, ইয়াংসিকিয়াং ও হােয়াং হাে নদীর তীরে চৈনিক সভ্যতা গড়ে উঠেছিল। আজ থেকে সাত হাজার বছর আগে বিভিন্ন নদীমাতৃক সভ্যতা গুলির বিকাশ ঘটেছিল।
নদীমাতৃক সভ্যতা গড়ে ওঠার কারণ – বিভিন্ন নদীর তীরে প্রাচীন সভ্যতাগুলি গড়ে ওঠার পেছনে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ কারণ ছিল
(১) অনুকূল আবহাওয়া: নদীর তীরবর্তী অঞ্চলের আবহাওয়া নাতিশীতােষ্ণ হয়। এই আরামদায়ক আবহাওয়ার অন্য প্রাচীন মানুষ নদীর তীরে বসতি স্থাপন করে।
(২) পানীয় জলের সুবিধা – প্রাচীনকালে আদিম মানুষের কাছে পানীয় জলের একমাত্র উৎস ছিল নদীনালা বা হ্রদের জল। পানীয় জলের সুবিধার জন্যই মানুষ নদী তীরবর্তী অঞ্চলে বসতি স্থাপন করে।
(৩) উর্বর জমি – নদীর তীরবর্তী অঞ্চলের জমি খুব উর্বর হয়। কারণ বর্ষাকালে বন্যার সময় নদীর দুকূল প্লাবিত হয়। জমিতে প্রচুর পলি পড়ে। এই পলিমাটিতে ভালাে ফসল হয়। শস্যের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য আদিম মানুষ নদীর তীরে বসতি স্থাপন করে।
(৪) জলসেচের সুবিধা – কৃষিকাজের জন্য জলসেচের দরকার হয়। নদীতে বাঁধ দিয়ে নদী থেকে খাল কেটে নদীর জল কৃষি জমিতে জলসেচ করা যায়। এর ফলে কৃষি উৎপাদন যথেষ্ট পরিমাণে বৃদ্ধি পায়।
(৫) পশুপালন – নদীর তীরবর্তী অঞ্চল উর্বর হওয়ার ফলে প্রচুর ঘাস জন্মায়। গৃহপালিত পশুর প্রধান খাদ্য হল ঘাস। তাই নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে গৃহপালিত পশুর খাদ্যের অভাব ছিল লা। তাই পশুচারণের সুবিধার জন্য তারা নদী তীরবর্তী অঞ্চলকে বেছে নিয়েছিল।
(৬) মৎস্য শিকার – মাংসের পর মানুষের অন্যতম প্রধান খাদ্য ছিল মাছ। আবার নদী ও হ্রদে প্রচুর মাছ পাওয়া যেত। মাছ শিকারের সুবিধার জন্যই মানুষ নদী তীরবর্তী অঞ্চলে বসবাস করতে শুরু করে। যা ক্রমশই নগর কেন্দ্রিক সভ্যতায় পরিণত হয়।
(৭) যােগাযােগ ও পরিবহন – আদিম মানুষের কাছে স্থলপথে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাওয়া ও পণ্য পরিবহন খুবই কষ্টকর ছিল। সেই তুলনায় জলপথ ছিল সহজতর মাধ্যম। নৌকা বা ডিঙির সাহায্যে মানুষ একস্থান থেকে অন্যস্থানে যাতায়াত বা পণ্য পরিবহন করত। যাতায়াত ও পণ্য পরিবহনের সুবিধার জন্যই আদিম মানুষ নদী তীরবর্তী অঞ্চলকেই বসবাসের জন্য নির্বাচন করে।
(৮) নিরাপত্তা – কৃষিজমি ও গৃহপালিত পশুর অধিকার নিয়ে আদিম মানুষের মধ্যে গােষ্ঠী সংঘর্ষ লেগেই থাকত। জলভাগহীন বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বসবাস করলে অন্য গােষ্ঠীর দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। কিন্তু নদীর বিস্তীর্ণ জলভাগ অতিক্রম করে হঠাৎ আক্রমণ করা সম্ভবপর নয়। আদিম মানুষ এই বিষয়টি উপলব্ধি করে নদীর তীরে বসতি স্থাপন করে।
মূল্যায়ন – জল ছাড়া যেমন জীবন সম্ভব নয় তেমনি জল ছাড়া সভ্যতাও গড়ে ওঠা সম্ভব নয়। আদিম মানুষ উপরােক্ত সব প্রয়ােজনের কথা মাথায় রেখেই নদীর ধারে বসতি স্থাপন করে। এর ফলে পৃথিবীর প্রাচীন সভ্যতাগুলির বিকাশ ঘটে নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।
বানান ভুল, হচ্ছে মাঝে মাঝে।এত সুন্দর উপস্থাপনার জন্য ধন্যবাদ
আমরা খুবই দুঃখিত ভুল বানানগুলোর জন্য। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ জানাই কমেন্ট করে আমাদেরকে জানিয়ে দেবার জন্য। সমস্ত ভুল বানান এখন ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। ধন্যবাদ
অনেক ধন্যবাদ
খুব সুন্দর
Thank you so much
ai note na thale ajke hoi to fail kora ta hoto na
Thank you so much
Onekkkk upokar hoyeche
ai note ta diye onekkk
Bole bojha te parbo na
Thankyou