নীল বিদ্রোহের গুরুত্ব আলােচনা করাে। 

নীল বিদ্রোহের গুরুত্ব আলােচনা করাে।  4 Marks/Class 10

উত্তর:

ভূমিকা : ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের পরবর্তীকালে যেসব বিদ্রোহ জাতীয় জাগরণে সর্বাধিক সাহায্য করেছিল তাদের মধ্যে নীল বিদ্রোহ (১৮৫৯-৬০ খ্রি.) ছিল অন্যতম। 

গুরুত্ব : নীলবিদ্রোহের গুরুত্বগুলি হল— 

১) সফল কৃষক আন্দোলন : ইতিপূর্বের কৃষক আন্দোলনগুলি আঞ্চলিক ভিত্তিতে সীমাবদ্ধ হলেও নীল বিদ্রোহ ছিল ব্যাপক আন্দোলন, কারণ এই বিদ্রোহে যােগদানকারী প্রায় ৬০ লক্ষ কৃষক শেষ পর্যন্ত নীলচাষ উচ্ছেদ করতে সমর্থ হয়। 

২) নীল কমিশন গঠন : নীল বিদ্রোহের ব্যাপকতায় উদবিগ্ন হয়ে সরকার নীলবিদ্রোহের কারণ অনুসন্ধানের জন্য গঠন করে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট নীল কমিশন (৩১ মার্চ, ১৮৬০ খ্রি.)। এই কমিশন নীলকরদের অত্যাচার ও নীলচাষিদের অভিযােগকে সত্য ও যথার্থ বলে মেনে নেয়। 

৩) নীল চাষ বন্ধ : নীলকররা রায়তের ইচ্ছার বিরুদ্ধে নীল চাষ করাতে পারবে না বলে নীল কমিশন যে বিধিবদ্ধ আইন তৈরি করেছিল তা চাষিদেরকে নীলচাষ থেকে অব্যাহতি দেয়।

৪) ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন : নীল বিদ্রোহে নীলচাষিদের পাশে বেশ কিছু জমিদার ও বাংলার শিক্ষিত বুদ্ধিজীবী শ্রেণি যােগদান করে এক ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের নজির স্থাপন করেছিল যা ভারতীয় জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের ক্ষেত্রে ছিল গুরুত্বপূর্ণ দিকচিহ্ন।

অন্যান্য গুরুত্ব : নীল বিদ্রোহের আরও কয়েকটি গুরুত্ব হল—
(১) এই আন্দোলনে হিন্দু ও মুসলিম কৃষকরা একত্রিত হয়ে নজির স্থাপন করেছিল;
(২) “হিন্দু প্যাট্রিয়ট’, ‘সমাচার দর্পণ প্রভৃতি সংবাদপত্র ক্রমশই জাতীয়তাবাদী ভূমিকা পালন করতে শুরু করেছিল এবং
(৩) এই বিদ্রোহ শহরের শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণির সঙ্গে কৃষক সমাজের যােগসূত্র গড়ে তুলেছিল।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment

error: Content is protected !!