নিরপেক্ষ ন্যায়ের গঠনে হেতুপদের ভূমিকা কী? Class 12 | Philosophy ( নিরপেক্ষ ন্যায় ) ৮ Marks
উত্তর:-
নিরপেক্ষ ন্যায়ের গঠনে হেতুপদের ভূমিকা
নিরপেক্ষ ন্যায়ের গঠনে হেতুপদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাগুলি হল—
মাধ্যম অনুমানের মর্যাদাদানকারীরূপে হেতুপদ : নিরপেক্ষ ন্যায় অনুমানে যে তিনটি পদ স্বীকৃত হয়েছে, তাদের মধ্যে হেতুপদ হল অন্যতম। কারণ, হেতুপদের ভূমিকা ছাড়া ন্যায়-অনুমানের বিষয়টিকে কখনােই কল্পনা করা যায় না | আমরা জানি যে, ন্যায়-অনুমান হল একপ্রকার মাধ্যম অনুমান।কারণ, এখানে অপ্রধান যুক্তিবাক্যের মাধ্যমে প্রধান যুক্তিবাক্য থেকে সিদ্ধান্তটিকে প্রতিষ্ঠা করা হয়। আর এখানে মাধ্যম হিসেবে যে পদটি কাজ করে থাকে, তা হল হেতুপদ। এই হেতুপদের জন্যই নিরপেক্ষ ন্যায় অনুমানকে অমাধ্যম অনুমান থেকে পৃথক করা সম্ভব।
প্রধান ও অপ্রধান যুক্তিবাক্যের মর্যাদাদানকারীরূপে হেতুপদ : নিরপেক্ষ ন্যায়ের ক্ষেত্রে আমরা তিনটি নিরপেক্ষ বচন লক্ষ করে থাকি। এই তিনটি নিরপেক্ষ বচনের প্রথম দুটিকে বলা হয় যুক্তিবাক্য (premises) যুক্তিবাক্য দুটির প্রথমটিকে বলা হয় প্রধান যুক্তিবাক্য বা সাধ্যবাক্য এবং দ্বিতীয় যুক্তিবাক্যটিকে বলা হয় অপ্রধান যুক্তিবাক্য বা পক্ষবাক্য| হেতুপদ একবার প্রধান যুক্তিবাক্যে এবং আর-একবার অপ্রধান যুক্তিবাক্যে অবস্থান করে। অথাৎ, হেতুপদ প্রধান ও অপ্রধান যুক্তিবাক্যের মধ্যে সাধারণ পদ (common) রূপে গণ্য। সেকারণেই কোন্ নিরপেক্ষ বচন দুটি যুক্তিবাক্যরূপে গণ্য, তা আমরা সহজেই চিনতে পারি। সুতরাং দাবি করা যায় যে, প্রধান । অপ্রধান যুক্তিবাক্যের মর্যাদাদানকারীরূপে হেতুপদের একটি গুরুত্বপূর্ণ হর্ষি অবশ্যই আছে।
পক্ষপদের ও সাধাপদের মিলনকারীরূপে হেতুপদ : যে-কোনাে নিরপেক্ষ ন্যায়-অনুমানে আমরা তিনটিপদ লক্ষরেথাকি| এই তিনটিপদ আবার দল করে ব্যবহৃত হয়। এই তিনটি পদ হল সাধ্যপদ (P), পক্ষপদ (S) এবং হেতুপদ (M)। নিরপেক্ষ ন্যায়ে সাধ্যপদকে পক্ষে হেতুপদ দ্বারা প্রমাপ করা হয়। প্রত্যেকটি নিরপেক্ষ ন্যায়ের সিদ্ধান্তে পক্ষপদ (S) এবং সাধাপদ (Pra অবস্থান দেখা যায়। অর্থাৎ, সিদ্ধান্তে পক্ষপদ ও সাধ্যপদের মিলন ঘটে। এদের মিলন সম্ভব হয় একমাত্র হেতুপদের জন্যই।কারণ, এই হেতুপদ একবার যুক্তিবাক্যে সাধ্যপদের (P) সঙ্গে মিলিত হয়, এবং আর একবার অপ্রধান যুক্তিবাক্যে পক্ষপদের (S) সঙ্গে মিলিত হয়। এভাবেই সিদ্ধান্তে নিতে অনুপস্থিত থেকে পক্ষ (S) ও সাধ্য (P) পদের মিলন ঘটাতে সমর্থ হয়। অর্থা হেতুপদই মাধ্যম হিসেবেপক্ষপদ (S) ও সাধ্যপদ (P)-কেসিদ্ধান্তে সংযুক্ত করে।
নিরপেক্ষ ন্যায়ের সংস্থান নির্ণয়কারীরূপে হেতুপদ : হেতুপদই হল নিরপেক্ষ ন্যায়ের সংস্থান নির্ণায়ক। কারণ, ন্যায়ের সংস্থানের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে যে, হেতুপদের অবস্থান অনুযায়ী ন্যায় অনুমানের যে বিশেষ বিশেষ রূপ বা আকৃতি হয় তাকেই বলে ন্যায়ের সংস্থান। অর্থাৎ, হেতৃপদের অবস্থান অনুযায়ী ন্যায়ের সংস্থানেরও পরিবর্তন হয়। এই সংস্থান হল চার প্রকার প্রথম সংস্থান, দ্বিতীয় সংস্থান, তৃতীয় সংস্থান ও চতুর্থ সংস্থান। এই চার প্রকার সংস্থানের ক্ষেত্রে হেতুপদের অবস্থানও চার রকমের প্রথম সংস্থানে হেতুপদ প্রধান যুক্তিবাক্যের উদ্দেশ্য এবং অপ্রধান যুক্তিবাক্যের বিধেয় স্থানে অবস্থান করে। দ্বিতীয় সংখ্যানে হেতুপদ প্রধান ও অপ্রধান উভয় যুক্তিবাক্যেরই বিধেয় স্থানে অবস্থান করে। তৃতীয় সংখ্যানে উভয় যুক্তিবাক্যের উদ্দেশ্য স্থানে অবস্থান করে। আর চতুর্থ সংস্থানে প্রধান যুক্তিবাক্যের বিধেয় স্থানে এবং অপ্রধান যুক্তিবাক্যের উদেশ্য স্থানে। অবস্থান করে। সুতরাং দেখা যায় যে, হেতুপদের অবস্থান অনুযায়ী ন্যায়ের সংস্থানও নির্ণীত হয়। ন্যায় অনুমানের এই সংস্থানগুলি যে চারটি ভিন্ন ভিন্ন রূপ বা আকৃতিকে উপস্থাপিত করে তা প্রখ্যাত তকবিদ কার্ভেথ রিড় (Carveth Read) নীচের ছকগুলির সাহায্যে তুলে ধরেছেন
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।