নিরপেক্ষ বচনগুলির সাংকেতিক নাম ও তাদের আকার উদাহরণসহ আলােচনা করাে।

নিরপেক্ষ বচনগুলির সাংকেতিক নাম ও তাদের আকার উদাহরণসহ আলােচনা করাে। Class 12 | Philosophy (বচন) 8 Marks

উত্তর:-

উদাহরণ সহ নিরপেক্ষ বচনগুলির সাংকেতিক নাম ও তাদের আকার

প্রখ্যাত গ্রিক তর্কবিদ অ্যারিস্টটল (Aristotle) নিরপেক্ষ বচন চারটিকে চারটি সাংকেতিক নামে উল্লেখ করেছেন। এই চারটি নিরপেক্ষ বচনকে আবার তিনি চারটি বিশেষ আকারে উপস্থাপিত করেছেন। এগুলিকে পর পর পৃথকভাবে উদাহরণ সহ নীচে আলােচনা করা হল। 

[1] সার্বিক সদর্থক বা হ্যাঁ-বাচক বচন বা A বচন: যে নিরপেক্ষ বচনে উদ্দেশ্যপদের দ্বারা নির্ধারিত শ্রেণি বা জাতির অন্তর্গত সমস্ত সদস্য সম্পর্কে বিধেয় পদটি সদর্থকভাবে প্রযুক্ত হয়, সেই নিরপেক্ষ বচনকেই বলা হয় সার্বিক সদর্থক বা সার্বিক হ্যাঁ-বাচক বচন। একেই সাংকেতিকভাবে বলা হয় A বচন।

উদাহরণ:

সাংকেতিক নাম – A
বচন – সকল ছাত্র হয় পড়ুয়া।
বচনাকার – সকল S হয় P

ব্যাখ্যা:

এক্ষেত্রে বিধেয় পদটি তথা পড়ুয়া উদ্দেশ্যপদ তথা ছাত্র শ্রেণীর অন্তর্গত সকল সদস্যের ক্ষেত্রেই প্রযুক্ত বলে তা সামান্য বা সার্বিক রূপে গণ্য। আবার উদ্দেশ্য এবং বিধেয়ের সম্বন্ধ স্বীকৃতিসূচক বলেই তা সদর্থক বা হ্যাঁ-বাচক রূপে গণ্য। সুতরাং সামগ্রিকভাবে এরূপ বচনটি সামান্য সদর্থক বা সার্বিক হ্যাঁ-বাচক রূপে গণ্য। 

[2] সাবিক নঞর্থক বা না-বাচক বচন বা E বচন: যে নিরপেক্ষ বচনে উদ্দেশ্যপদের দ্বারা নির্ধারিত শ্রেণি বা জাতের সকল সদস্য সম্পর্কে বিধেয় পদটি নঞর্থকভাবে প্রযুক্ত, তাকেই বলা হয় সার্বিক নঞর্থক বা নাবাচক বচন। এরূপ বচনের সাংকেতিক নাম হল E বচন।

উদাহরণ:

সাংকেতিক নাম – E
বচন – কোনাে মানুষ নয় পূর্ণ।
বচনাকার – কোনাে S নয় P

ব্যাখ্যা:

এক্ষেত্রে বিধেয় পদ তথা পূর্ণ উদ্দেশ্য পদ তথা মানুষ পদের অন্তর্গত সকল সদস্য সম্পর্কে অস্বীকৃতভাবে প্রযুক্ত বলে এরূপ বচনটি সার্বিক না-বাচক বা সামান্য নঞর্থক বচন রুপে গণ্য। 

[3] বিশেষ সদর্থক বা হ্যাঁ-বাচক বচন বা I বচন: যে নিরপেক্ষ বচনে উদ্দেশ্য পদ দ্বারা নির্দেশিত শ্রেণি বা জাতির সকল সদস্য সম্পর্কে বিধেয়টি প্রযুক্ত না হয়ে, তার অংশ সম্বন্ধে সদর্থকভাবে প্রযুক্ত হয়, তাকেই বলা হয় বিশেষ সদর্থক বা হ্যাঁ-বাচক বচন। এরূপ বচনের সাংকেতিক নাম হল I বচন।

উদাহরণ:

সাংকেতিক নাম – I
বচন – কোনাে কোনাে মানুষ হয় বদমেজাজি।
বচনাকার – কোনাে কোনাে S হয় P

ব্যাখ্যা:

এখানে উদ্দেশ্যপদ তথা মানুষ পদটির অন্তর্গত সমস্ত সদস্য সম্পর্কে বিধেয় পদটি তথা বদমেজাজি পদটি প্রযুক্ত না হয়ে, কিছু মানুষের ক্ষেত্রে তা স্বীকৃত হওয়ায় বচনটি বিশেষ হ্যাঁ-বাচক রুপে গণ্য। 

[4] বিশেষ নঞর্থক বা নাবাচক বচন বা O বচন: যে নিরপেক্ষ বচনের উদ্দেশ্যপদের দ্বারা নির্দেশিত শ্রেণির সকল সদস্যের ক্ষেত্রে বিধেয় পদটি অস্বীকৃত না হয়, বিশেষ বিশেষ অংশের ক্ষেত্রে তা অস্বীকৃত হয়, সেই নিরপেক্ষ বচনকেই বলে বিশেষ নঞর্থক বা না-বাচক বচন। এরূপ বচনের সাংকেতিক নাম হল O বচন।

উদাহরণ:

সাংকেতিক নাম – O
বচন – কোনাে কোনাে মানুষ নয় সৎ।
বচনাকার – কোনাে কোনাে S নয় P

এক্ষেত্রে দেখা যায় যে, বিধেয় পদ তথা সৎ উদ্দেশ্য পদ তথা মানুষ পদটির অন্তর্গত সকল সদস্যের ক্ষেত্রে অস্বীকৃত না হয়ে, শুধুমাত্র বিশেষ বিশেষ কয়েকটি দৃষ্টান্তের ক্ষেত্রে অস্বীকৃত হওয়ায় তা বিশেষ নঞর্থক বা না-বাচক তথা O বচনরুপে গণ্য।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment