নিরপেক্ষ বচনে গুণের ভূমিকা কীরূপ? গুণ অনুসারে নিরপেক্ষ বচনের শ্রেণিবিভাগ করাে।

নিরপেক্ষ বচনে গুণের ভূমিকা কীরূপ? গুণ অনুসারে নিরপেক্ষ বচনের শ্রেণিবিভাগ করাে। Class 12 | Philosophy (বচন) 8 Marks

উত্তর:-

নিরপেক্ষ বচনে গুণের ভূমিকা 

নিরপেক্ষ বচনে গুণের যে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে, তা আজ অস্বীকার করা যায় না। কারণ, যে-কোনাে নিরপেক্ষ বচনে উদ্দেশ্য সম্পর্কে বিধেয়তে কিছু স্বীকার বা অস্বীকার করা হয়। এই স্বীকার বা অস্বীকার করাটাই হল নিরপেক্ষবচনের গুণের বিষয়। যখন উদ্দেশ্য সম্পর্কে বিধেয়কে কিছু স্বীকার করে নেওয়া হয়, তখন তাকে স্বীকৃতিসূচক বা হ্যা-সূচক রূপে গণ্য করা হয়। আবার উদ্দেশ্য সম্পর্কে বিধেয়তে যখন কোনাে কিছুকে অস্বীকার করা হয়, তখন তাকে অস্বীকৃতিসূচক বা না-সূচক রূপে গণ্য করা হয়। হ্যা-সুচককে হয় শব্দটির দ্বারা এবং না-সূচককে নয় শব্দটির দ্বারা নির্দেশ করা হয়। 

গুণ অনুসারে বচনের শ্রেণিবিভাগ 

গুণ অনুসারে নিরপেক্ষ বচনসমূহকে দুভাগে ভাগ করা হয়েছে— [1] সদর্থক বা হ্যা-বাচক বচন এবং [2] নঞর্থক বা না-বাচক বচন। গুণের দ্বারা নিরপেক্ষ বচনসমূহকে এই দু-ভাবে ছাড়া আর অন্য কোনােভাবে উল্লেখ করা যায় না। আবার গুণ-নিরপেক্ষভাবেও কোনাে বচনকে উল্লেখ করা যায় না। 

1) সদর্থক বা হ্যা-বাচক বচন 

যে নিরপেক্ষবচনে উদ্দেশ্য সম্পর্কে বিধেয়তে কোনাে কিছুকে সদর্থকভাবে স্বীকার করে নেওয়া হয়, সেই নিরপেক্ষ বচনকেই বলা হয় সদর্থক বা হ্যা-বাচক বচন। হ্যা-বাচক বচনে সংযােজকের রূপটিকে হয়, হন ইত্যাদি হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এই সমস্ত শব্দগুলিই হল নিরপেক্ষ বচনের স্বীকৃতিমূলক তথা হ্যা-বাচক চিহ্ন। সুতরাং কোনাে নিরপেক্ষ বচনে এই ধরনের শব্দ ব্যবহৃত হলে তাকে হ্যা-বাচক বা সদর্থক বচন রূপে গণ্য করা হয়। 

উদাহরণ:

1. সকল দার্শনিক হন চিন্তাশীল।

2. কোনাে কোনাে দার্শনিক হয় সুখী।

ব্যাখ্যা:

এই দুটি দৃষ্টান্তেই উদ্দেশ্য সম্পর্কে বিধেয়তে কিছু বিষয়কে যথাক্রমে হন, হয় শব্দ দুটি দ্বারা স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে। সে কারণেই এই দুটি নিরপেক্ষ বচন হ্যা-বাচক তথা সদর্থকরুপে গণ্য।

2) নঞর্থক বা না-বাচক বচন 

যে নিরপেক্ষ বচনে উদ্দেশ্য সম্পর্কে বিধেয়তে কোনাে কিছুকে অস্বীকার করা হয়, সেই নিরপেক্ষ বচনকেই বলা হয় নঞর্থক বা না-সুচক বচন। এই ধরনের বচনের প্রকাশ ঘটে থাকে নয়, নন প্রভৃতি নঞর্থক শব্দগুলি দ্বারা। এই ধরনের শব্দগুলি তাই না-বাচক বচনের চিহ্নরূপে গণ্য। অর্থাৎ, কোনাে নিরপেক্ষ বচনে নন, নয় প্রভৃতি শব্দ থাকলেই সেগুলিকে না-বাচক বচনরুপে গণ্য করা হয়।

উদাহরণ:

1. কোনাে মানুষ নয় অমর।

2. কোনাে কোনাে মানুষ নয় সুখী। 

ব্যাখ্যা:

এই দুটি দৃষ্টান্তমূলক বচনের ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে, এই ক্ষেত্রগুলিতে উদ্দেশ্য সম্পর্কে বিধেয়তে নয় শব্দটি দ্বারা কোনাে কিছুকে (অমর, সুখী) অস্বীকার করা হয়েছে। সে কারণেই এই দুটি বচন নঞর্থক নিরপেক্ষ বচন রুপে গণ্য।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment