Class 11 Class 11 Bengali পাঠ্য বিদ্যাপতির ‘ভাব সম্মিলন’ পদটির রসগ্রাহী আলোচনা করো।

পাঠ্য বিদ্যাপতির ‘ভাব সম্মিলন’ পদটির রসগ্রাহী আলোচনা করো।

পাঠ্য বিদ্যাপতির ‘ভাব সম্মিলন’ পদটির রসগ্রাহী আলোচনা করো। MARK 5 | Class 11 Bengali | ভাব সম্মিলন

উত্তর :

অক্রুরের রথে চড়ে শ্রীকৃষ্ণের বৃন্দাবন ছেড়ে মথুরায় গমন, তাঁর আর ফিরে না-আসা—এসব কারণে বৃন্দাবন আজ তমসাচ্ছন্ন। এই অন্ধকারের মধ্যে বিরহিণী রাধার প্রেম যেন খদ্যোতের আলোর মতো জ্বলে আছে। রাধার কামবেগ বা মিলনেচ্ছা প্রবল হতে শুরু করে। বৈস্নব মহাজনগণ রাধার এই বিরহকাতরতা দেখতে না-পেরে বাস্তবে না-হলেও কৃয়ের সঙ্গে মানসিক মিলনের ব্যবস্থা করেন, যা বৈস্নব শাস্ত্রমতে ভাবোল্লাস বা ভাব সম্মিলন নামে খ্যাত। 

আমাদের পাঠ্য পদটি ভাব সম্মিলনের একটি বিখ্যাত পদ। কৃষ্ণ মিলনে উচ্ছ্বসিত রাধা তাঁর সখিকে বলেছেন যে, তাঁর আনন্দের সীমা নেই। কারণ তিনি আর কোনোদিনই প্রিয়কে হারাবেন না। কৃষ্ণ চিরদিনের জন্য বন্দি হয়েছেন তাঁর ঘরে। বিরহ অবস্থায় রাধাকে বাঁধভাঙা চাঁদের হাসি যে পরিমাণ দুঃখ দিয়েছে, আজ প্রিয়-মুখ দর্শনে ততটাই সুখ লাভ করেছেন। এই পরিস্থিতিতে রাধাকে কেউ যদি আঁচলভরে মহারত্নও দান করেন তবুও তিনি তাঁর প্রিয়তমকে দূরদেশে পাঠাবেন না। তাঁর এই দৃঢ় সংকল্প থেকে পরিষ্কার হয়ে ওঠে—পদটি ভাবোল্লাস বা ভাব সম্মিলনের পদ। কেন-না বাস্তবে কৃষ্ণ কোনোদিনই বৃন্দাবনে ফিরে আসেনি। দীর্ঘ গ্রীষ্মের পর বর্ষার বারিধারায় জীব ও উদ্ভিদ জগৎ যেমন উজ্জীবিত হয়ে ওঠে তেমনি দীর্ঘ অদর্শনের পর প্রিয় সান্নিধ্য রাধাকে আকুল করে তুলেছে। কৃষ্ণের সঙ্গে নিজের সম্পর্ককেও রাধা তাঁর অস্তিত্ব রক্ষার অনিবার্য প্রয়োজনের সঙ্গে তুলনা করে নতুন মাত্ৰা দান করেছেন। কৃষ্ণ তাঁর কাছে শীতের আচ্ছাদন, গ্রীষ্মের বাতাস, বর্ষার ছাতা আর অকূল সমুদ্রের তরণি। এক্ষেত্রেও রাধার একাগ্র তন্ময়তা কৃষ্ণপ্রেমের অপূর্ব ব্যাখ্যা ভাব সম্মিলনের পদকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করেছে।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment

error: Content is protected !!