পরিবহণের গুরুত্ব কতখানি? অথবা, ভারতে পরিবহণ ব্যবস্থার গুরুত্ব আলােচনা করাে। Class 10 | Geography | 5 Marks‘
উত্তর:
পরিবহণের গুরুত্বসমূহ
মানবদেহে শিরা-উপশিরা-ধমনির যে গুরুত্ব, ভারতের মতাে বিকাশশীল দেশে পরিবহণের গুরুত্ব তার থেকে কিছু কম নয়। পরিবহণের গুরুত্বগুলি হল –
অর্থনৈতিক গুরুত্ব
1. পণ্য আদানপ্রদান: একদেশের পণ্য অন্যদেশে পৌছে দেওয়ার ক্ষেত্রে পরিবহণের গুরুত্ব অপরিসীম। যেমন—ভারতের চা, পাট উন্নত পরিবহণের মাধ্যমে বিশ্বের বাজারে পৌছে দেওয়া যায় আবার বিদেশ থেকেও নানা পণ্য আমদানি করা যায়।
2. শিল্পের বিকেন্দ্রীকরণ: শিল্পের বিকেন্দ্রীকরণ পরিবহণ ব্যবস্থার উন্নতির কারণেই সম্ভব হয়েছে। উন্নত পরিবহণের কারণেই কাঁচামাল এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে গিয়ে শিল্পস্থাপনা করা গেছে।
৪. বিপর্যয় মােকাবিলা:বন্যা, খরা, ভূমিকম্প প্রভৃতি প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটলে সেখানে দ্রুত উদ্ধারকার্যের জন্য পরিবহণের ভূমিকা খুব বেশি।
4. কৃষির উন্নতি: পরিবহণের মাধ্যমে গ্রামের কৃষিজমি থেকে শহরের বাজারে দ্রব্যসামগ্রী বিক্রয় বা কৃষিতে ব্যবহৃত প্রয়ােজনীয় সার রাসায়নিক বীজ শহর থেকে গ্রামে পাঠানাে যায়।
5. প্রাকৃতিক সম্পদ সংগ্রহ: বনজ, প্রাণীজ, খনিজ দ্রব্য সংগ্রহ। করার জন্য পরিবহণ ব্যবস্থার উন্নতি বানীয়। আমাজন অববাহিকায় অথবা কানাডার উত্তরে পরিবহণ ব্যবস্থা খুব ভালাে হওয়ার জন্য ওই অঞ্চল প্রাকৃতিক সম্পদের অনুসন্ধান ও সংগ্রহ পিছিয়ে রয়েছে।
6. পণ্যমূল্যের স্থিতিশীলতা : সুপরিবহণ থাকার জন্যই বিভিন্ন বাজারে বিভিন্ন দ্রব্যসামগ্রীর দামের মধ্যে স্থিতিশীলতা বজায় থাকে। এমনকি দ্রুত পরিবহণ ব্যবস্থার মাধ্যমেই বিভিন্ন দ্রব্য এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পাঠানাে হয় বলে সারাদেশে পণ্যসামগ্রীর মূল্য একই থাকে।
সামাজিক গুরুত্ব
1. শহর ও নগরের সৃষ্টি:পরিবহণ ব্যবস্থার উন্নতির সাথে সাথে শিল্প ও ব্যাবসাবাণিজ্যের উন্নতি ঘটে। এতে মূল শহর থেকে দূরে ছােটো বড়াে শহর ও নগরের সৃষ্টি হয়।
2 শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক উন্নতি : পরিবহণের মাধ্যমেই মানুষ এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাতায়াত করে। এতে পারস্পরিক শিক্ষা, সংস্কৃতি, শিল্প ও প্রযুক্তিবিদ্যার উন্নতি ঘটে।
রাজনৈতিক গুরুত্ব
1. প্রতিরক্ষা : দুর্গম অঞলে সেনা, তাদের রসদ ও অস্ত্রশস্ত্র পাঠানােতে পরিবহণের ভূমিকা অতুলনীয়। অর্থাৎ, দেশরক্ষার কাজে বা প্রতিরক্ষার কাজে পরিবহণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
2. জাতীয় ঐক্য স্থাপন : পরিবহণ সারাদেশের নানা সংস্কৃতি, ভাষাভাষি, ধর্মের লােকেদের একসূত্রে বেঁধে রাখে। এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে ভ্রমণের মাধ্যমে, এক অঞল থেকে অন্য অঙ্কুলে যাতায়াতের মাধ্যমে বিভিন্ন ধর্ম ও ভাষাভাষি মানুষের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।