Class 12 Class 12 Education পরীক্ষাব্যবস্থা, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ও শিক্ষার মাধ্যম সম্পর্কে রাধাকৃষ্ণণ কমিশনের সুপারিশগুলি উল্লেখ করাে

পরীক্ষাব্যবস্থা, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ও শিক্ষার মাধ্যম সম্পর্কে রাধাকৃষ্ণণ কমিশনের সুপারিশগুলি উল্লেখ করাে

পরীক্ষাব্যবস্থা, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ও শিক্ষার মাধ্যম সম্পর্কে রাধাকৃষ্ণণ কমিশনের সুপারিশগুলি উল্লেখ করাে Class 12 | Education (শিক্ষাবিজ্ঞান) | 8 Marks

উত্তর:

পরীক্ষাব্যবস্থা, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ও শিক্ষার মাধ্যম সম্পর্কিত রাধাকৃষণ কমিশন প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থার জুটিবিচ্যুতি বিশদভাবে বিশ্লেষণ করার পর, বিভিন্ন বিষয়ে মূল্যবান সুপারিশ করে। পরীক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কিত সুপারিশ প্রচলিত পরীক্ষাব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করে কমিশন পরীক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে বেশ কিছু সুপারিশ করেন।

[1] সরকারি চাকুরির জন্য পৃথক পরীক্ষা : 

 i. কমিশন সরকারি চাকুরির ক্ষেত্রে পৃথক পরীক্ষার ব্যবস্থা প্রণয়নের সুপারিশ করেন। 

ii. কমিশনের মতে সরকারি চাকুরির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রির দরকার নেই। 

iii. সরকারি চাকুরির জন্য পৃথক পরীক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থা হলে বিশ্ববিদ্যালয় স্তরের পরীক্ষাব্যবস্থার বহু ত্রুটিই দূরীভূত হবে ৷ 

[2] সর্বাঙ্গীণ বিকাশের মূল্যায়ন :

i. শিক্ষার্থীদের সর্বাঙ্গীণ বিকাশের মূল্যায়নের জন্য অন্তিম পরীক্ষার পাশাপাশি শ্রেণিকক্ষের কার্যাবলির মূল্যায়নের ব্যবস্থা করতে হবে

ii. মােট নম্বরের   অংশ নম্বর শ্রেণির অবশিষ্ট 1⁄2 অংশ নম্বর অন্তিম মূল্যায়নের জন্য ধার্য করতে হয়।

[3] অন্তিম পরীক্ষার আগে কয়েকটি পরীক্ষার ব্যবস্থা 

i. তিন বছরের স্নাতক পরীক্ষা একেবারে তিন বছরের শেষে গ্রহণ না করে, নির্দিষ্ট সময় অন্তর পরীক্ষাগ্রহণের ব্যবস্থা করতে হবে।

ii. ডিগ্রি প্রদানের সময় অন্তর্বর্তী পরীক্ষাগুলির ফলাফলও বিচার করতে হবে।

[4] পাস নম্বর: বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের ক্ষেত্রে তিনটি বিভাগে পাসের ব্যবস্থা থাকবে। প্রথম বিভাগে পাস করতে গেলে কমপয়ে 70 শতাংশ, দ্বিতীয় বিভাগে পাস করতে গেলে কমপক্ষে 55 শতাংশ এবং তৃতীয় বিভাগে পাস করতে গেলে কমপক্ষে 40 শতাংশ নম্বর পেতে হবে।

[5] পরীক্ষক নির্বাচন :

i. কোনাে বিষয়ে পরীক্ষক হতে গেলে শিক্ষককে কমপক্ষে পাঁচ বছর ওই

বিষয়ে পাঠদান করতে হবে। 

ii. ডিগ্রি পরীক্ষায় বহিঃপরীক্ষক (external examiner) একাধিক ক্রমে তিন বছরের বেশি সময় কোনাে বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হতে পারবেন না।

[6] মৌখিক পরীক্ষার ব্যবস্থা :

 i. পেশাগত ডিগ্রি এবং স্নাতকোত্তর স্তরের পরীক্ষায় মৌখিক পরীক্ষাগ্রহণের ব্যবস্থা করতে হবে। 

ii. অনুগ্রহ নম্বর (grace marks) দেওয়ার রীতি ত্যাগ করতে হবে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন সম্পর্কিত সুপারিশ :

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন সম্পর্কিত সুপারিশগুলি হল— 

i. বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাকে যুগ্ম তালিকায় অর্থাৎ, কেন্দ্রীয় ও রাজ্য উভয় তালিকার অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। 

ii. জাতীয় শিক্ষানীতির রূপায়ণ, সঠিক পরিচালনা, অর্থসংস্থান প্রভৃতি বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যাবলির ওপর কেন্দ্রীয় সরকারের নজর থাকবো।

iii. বিশ্ববিদ্যালয়গুলির কাজ কেবলমাত্র অনুমােদন প্রদান করার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। 

iv. সরকারি মহাবিদ্যালয়গুলিকে ধীরে ধীরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্গীভূত মহাবিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করতে হবে। 

v. বেসরকারি মহাবিদ্যালয়গুলিকে স্বীকৃতি দানের সময় লক্ষ রাখতে হবে, সেগুলি গ্রান্ট-ইন-এইড পাওয়ার যােগ্য কি না এবং সেগুলি শিক্ষার্থীদের অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নে সক্ষম কি না। 

vi. মহাবিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতি সঠিকভাবে গঠন করতে হবে। 

vii. নিম্নলিখিত ব্যক্তি ও কমিটি নিয়ে যাতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গড়ে ওঠে, সেদিকে নজর দিতে হবে— 1) পরিদর্শক (গভর্নর-জেনারেল),2) আচার্য (প্রাদেশিক গভর্নর), 3) উপাচার্য, 4) সেনেট (কোর্ট), 5) সিন্ডিকেট বা এক্সিকিউটিভ

কাউন্সিল, 6) অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল, 7) ফ্যাকাল্টিজ, 8) বাের্ডস অব স্টাডিজ, 9) ফিন্যান্স কমিটি এবং 10 নির্বাচন কমিটি। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হবেন বেতনভুক

শিক্ষার মাধ্যম সম্পর্কিত সুপারিশ

কমিশন মাধ্যমিক শিক্ষাস্তর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাস্তর পর্যন্ত ভাষা শিক্ষাদানের জন্য একটি ত্রিভাষাসুত্রের কথা বলেছেন| ত্রিভাষা হল — i. মাতৃভাষা বা আঞ্চলিক ভাষা, ii. সর্বভারতীয় ভাষা এবং iii. ইংরেজি।

            কমিশনের মতে, উচ্চশিক্ষার মাধ্যম হবে আঞ্চলিক ভাষা| তবে কোনাে কোনাে বিষয়ের ক্ষেত্রে সর্বভারতীয় ভাষাকে (হিন্দি) মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ। করা যেতে পারে। তবে আন্তর্জাতিক স্তরে গৃহীত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিদ্যা ও কারিগরি বিষয়ের শব্দগুলির ভারতীয় পরিভাষা নির্ণয় করতে হবে এবং সেগুলির উচ্চারণ যাতে ভারতীয় শব্দতত্ত্ব অনুযায়ী নির্দিষ্ট করা হয়, সেদিকে সজাগ দৃষ্টি দিতে হবে। ক্রমবর্ধমান জ্ঞানের সঙ্গে সংগতিবিধানের উদ্দেশ্যে মাধ্যমিক, স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ইংরেজি ভাষার চর্চা চালিয়ে যেতে হবে।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment

error: Content is protected !!