পশ্চিম উপকূলের সমভূমির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও। 

মধ্য ভারতের উচ্চভূমির অবস্থান ও ভূপ্রকৃতির বিবরণ দাও।  Class 10 | Geography | 5 Marks

উত্তর:-

পশ্চিম উপকূলের সমভূমি : 

অবস্থান ও পরিচয়: (i) পশ্চিম উপকূল সমভূমি উত্তরে কচ্ছের রান অঞ্চল থেকে দক্ষিণে কন্যাকুমারী পর্যন্ত বিস্তৃত। (ii) এর পূর্ব সীমায় আছে পশ্চিমঘাট পর্বতশ্রেণি এবং পশ্চিম সীমায় আরব সাগর। (iii) পূর্ব উপকূলের সমভূমির তুলনায় এই সমভূমিটি বেশ সংকীর্ণ। (iv) উত্তরে কচ্ছের রান অঞ্চল থেকে দক্ষিণে সমভূমিটি ক্রমশ সংকীর্ণ হয়েছে। (v)  এখানে নদী গঠিত বদ্বীপ নেই বললেই চলে। 

উপ-অঞ্চল ও ভূপ্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য: পশ্চিম উপকূলের সমভূমি অঞ্চলকে চারটি অংশে ভাগ করা যায়— 

(1) গুজরাত উপকূলের সমভূমি : [i] পশ্চিম উপকূলের উত্তরাংশের নাম গুজরাত উপকূলের সমভূমি। [ii] অঞ্চলটি উত্তরে গুজরাত রাজ্যের কচ্ছ ও কাথিয়াবাড় উপদ্বীপ থেকে দক্ষিণে মহারাষ্ট্রের উত্তর সীমা পর্যন্ত বিস্তৃত। [iii] কচ্ছ উপদ্বীপে আছে এক বিস্তীর্ণ অগভীর লবণাক্ত জলাভূমি বা রান। এর উত্তরভাগের নাম বৃহৎ রান এবং দক্ষিণভাগের নাম ক্ষুদ্র রান। [iv] কাথিয়াবাড় উপদ্বীপটি যথেষ্ট প্রশস্ত ও মাঝখানটি উঁচু। ওই অংশে গিরনার ও গির নামে দুটি রেঞ্জ আছে। গিরনার পাহাড়ের গােরক্ষনাথ কাথিয়াড়ের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ।

(2) কোঙ্কন উপকূলের সমভূমি: [i] মহারাষ্ট্রের উত্তর সীমা অর্থাৎ সুরাতের কিছুটা দক্ষিণ থেকে গােয়া পর্যন্ত কোঙ্কন উপকূল সমভূমি বিস্তৃত। [ii] সমভূমিটি খুবই সংকীর্ণ এবং ভগ্ন। অধিকাংশ জায়গায় এই সমভূমি পাথর দ্বারা গঠিত। [iii] স্থানে স্থানে কাদাভরতি জলাভূমি, বালুকাময় তটভূমি, সামুদ্রিক চড়া এবং লাভা গঠিত পাহাড় প্রভৃতি কোঙ্কন উপকূলের সমভূমিকে বৈচিত্র্যপূর্ণ করে তুলেছে। 

(3) কর্ণাটক উপকূলের সমভূমি: [i] উত্তরে গােয়া থেকে দক্ষিণে কর্ণাটকের দক্ষিণ সীমা পর্যন্ত কর্ণাটক বা কারওয়ার উপকলের সমভূমি নামে পরিচিত। [ii] এর দৈর্ঘ্য প্রায় 225 কিমি। [iii] এই উপকূলও বেশ সংকীর্ণ, তবে ম্যাঙ্গালােরের পর থেকে অংশটি কিছুটা চওড়া। [iv] উপকূলের স্থানে স্থানে বালুকাময় তটভূমি আছে। কোনাে কোনাে স্থানে আবার পশ্চিমঘাট পর্বতমালা সমুদ্রের তীর পর্যন্ত নেমে এসেছে। [v] ম্যাঙ্গালােরের কাছে নেত্রবতী নদীর মােহনায় এই উপকূলের একমাত্র বদ্বীপ দেখতে পাওয়া যায়। [vi] সমভূমির পূর্ব প্রান্তে আছে সরাবতী নদীর বিখ্যাত গেরসােপ্পা জলপ্রপাত। [vii] স্থানে স্থানে ছােটো ছােটো বালিয়াড়ি, কাদাগঠিত নিম্নসমভূমি, ছােটো ছােটো উপহ্রদ, সংকীর্ণ নদী উপত্যকা এবং পশ্চিমঘাট পর্বতের পাদদেশবর্তী ল্যাটেরাইট গঠিত নিম্ন মালভূমি হল কর্ণাটক উপকুলের উল্লেখযােগ্য ভূপ্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য।

(4) মালাবার উপকূলের সমভূমি : [i] কেরালা রাজ্যের উপকূলের নাম মালাবার উপকূল। [ii] কোঙ্কন ও কর্ণাটক উপকূলের তুলনায় এই উপকূল বেশ চওড়া, গড়ে 25 কিমি। [iii] এখানকার উপকুলভূমিতে অনেক বালিয়াড়ি, জলাভূমি, হ্রদ ও উপহ্রদ বা লেগুন আছে। উপকূলের নিস্তরঙ্গ লবনাক্ত জলাভূমি ব্যাকওয়াটার্স নামে পরিচিত। স্থানীয় অধিবাসীরা উপহ্রদগুলিকে কয়াল এবং বালিয়াড়িগুলিকে থেরিস বলে। কয়ালগুলির মধ্যে কোচিনের কাছে অবস্থিত ভেমবানাদ কয়াল (বৃহত্তম) ও কোল্লামের কাছে অবস্থিত অষ্টমুদি কয়াল খুব বিখ্যাত।

চিত্র : পশ্চিম উপকূলের সমভূমি

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment