রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও শান্তিনিকেতন ভাবনার বিভিন্ন দিক চিহ্নিত করাে।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও শান্তিনিকেতন ভাবনার বিভিন্ন দিক চিহ্নিত করাে। 4 Marks/Class 10

উত্তর:

ভূমিকা : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ঔপনিবেশিক শিক্ষাধারার সমালােচনা করে শান্তিনিকেতনে ব্ৰত্মচর্যাশ্রম’ নামক এক বিদ্যালয় আপন (১৯০১ খ্রি.) করে এক বিকল্প শিক্ষাব্যবস্থার সূচনা করেন।

উদ্দেশ্য : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কর্তৃক শান্তিনিকেতনে ব্ৰত্মচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য ছিল—
প্রথমত, তিনি ঔপনিবেশিক শিক্ষা ব্যবস্থাকে ‘শিক্ষা দিবার কল’ ও মাস্টারকে এই কলের অংশ’ বলে অভিহিত করেন, কারণ এই শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে বিশ্ব প্রকৃতি বা মনুষ্যত্ব বা বিশ্ব মানবাত্মার সম্পর্ক ছিল না।
দ্বিতীয়ত, এরূপ আবাসিক ব্ৰত্মচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে প্রাচীন ভারতের ব্ৰত্মচর্যাশ্রমের গুরু-শিষ্য সম্পর্ককে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা।
তৃতীয়ত, প্রকৃতি, মানুষ ও শিক্ষার মধ্যে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করে এক নতুন ধরনের শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা।

শিক্ষাব্যবস্থা : রবীন্দ্রনাথ তাঁর এই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের শিখন বা শিক্ষণ সম্পর্কে যে বিষয়ের উপর গুরুত্ব দেন তা হল —

১) তিন নীতি : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার এই নতুন ধরনের শিক্ষাব্যবস্থায় অবাধ স্বাধীনতা, অবাধ চলাফেরা ও খেলাধুলা —এই তিনটি নীতি প্রয়ােগের পাশাপাশি প্রকৃতির সঙ্গে যােগ রেখে মনের চর্চার ওপরও গুরুত্ব দেন। 

২) সাংস্কৃতিক বিষয় : প্রকৃতি থেকে আনন্দের মাধ্যমে শিক্ষার পাশাপাশি কলা, নৃত্য, নাটক, সংগীত-অঙ্কন প্রভৃতি উন্নত সাংস্কৃতিক বিষয়গুলিকে পাঠক্রমে রাখা হয়।

৩) কারিগরি শিক্ষা : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার এই বিদ্যালয়ে একইসঙ্গে ব্যক্তি ও সমষ্টির শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করেন। এ ছাড়া কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থাও করা হয়। 

উপসংহার : উপরােক্ত আলােচনা থেকে দেখা যায় যে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রচলিত শ্রেণিকক্ষের চার দেয়ালের পরিবর্তে প্রকৃতি, মানুষ ও শিক্ষার মধ্যে সমন্বয়সাধন করেন।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment