সমস্যামূলক আচরণ সংশােধনের জন্য ক্ৰীড়াভিত্তিক চিকিৎসা সম্পর্কে আলােচনা করাে। Class 12 | Education (ভিন্ন ধরনের সক্ষমতার শিশুদের শিক্ষা) 4 Marks
উত্তর:-
সমস্যামূলক আচরণ সংশােধনের জন্য ক্রীড়াভিত্তিক চিকিৎসা
সমস্যামূলক আচরণ পরিবর্তনের জন্য অন্যতম মনােচিকিৎসা পদ্ধতি হল। ক্রীড়াভিত্তিক চিকিৎসা পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে খেলার মধ্য দিয়ে শিশুর অবদমিত ক্রোধ, ঘৃণা এবং আক্রমণাত্মক মানসিকতা দূর হয় এবং সে আবেগ-ভারসাম্য ফিরে পায় | একে খেলার মাধ্যমে বিরেচন (catharsis) বলে| এর পাশাপাশি মনােচিকিৎসক শিশুর খেলাকে বিভিন্ন দিক দিয়ে বিশ্লেষণ করে তার মানসিক দ্বন্দ্বের স্বরূপ। বুঝে নিয়ে শিশুকে সারিয়ে তােলার চেষ্টা করেন।
শিশুর বিকাশ অনুযায়ী চার রকমের খেলা দেখা যায়—[1] অঙ্গসঞ্চালনমূলক খেলা, [2] কল্পনামূলক খেলা, [3] অনু- করণমূলক খেলা ও [4] স্বপ্নচারিতামূলক খেলা। সুস্থ শিশু স্বাভাবিকভাবেই প্রতিটি পর্যায়ের খেলাগুলি খেলে এবং তার মধ্যে সুস্থ ব্যক্তিত্ব গড়ে ওঠে। কিন্তু যেসব শিশু, সুস্থভাবে খেলার সুযােগ পায় না, তাদের আবেগের বিকাশ বাধাপ্রাপ্ত হয় এবং তাদের ব্যক্তিত্বের মধ্যে বৈকল্য দেখা দেয়।
ক্রীড়াভিত্তিক চিকিৎসার কতকগুলি পর্যায় আছে। এগুলি হল নিম্নরুপ—
[1] প্রথম পর্যায় : মনােচিকিৎসক শিশু এবং তার পরিবারের সাথে পরিচিত হয়ে শিশু সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য, যেমন—তার বংশগতি, পরিবেশ, দৈহিক ও মানসিক গঠন ইত্যাদি সম্পর্কে তথ্যসংগ্রহ করবেন।
শিশুর দৈহিক সুস্থতা এবং সেইজন্য খেলাধুলা বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে কি না, বাবা-মা এবং অভিভাবক শিশুকে খেলাধুলায় উৎসাহিত করেছেন, না বাধা দিয়েছেন সেইসব বিষয়ে চিকিৎসক ভালােভাবে জানবার চেষ্টা করবেন।
[2] দ্বিতীয় পর্যায় : বিভিন্ন রকম খেলার উপকরণ দিয়ে দেখতে হবে শিশু কী ধরনের খেলাধুলা পছন্দ করে। তার খেলাধুলা বয়স অনুযায়ী কি না, খেলাধুলার প্রতিটি পর্যায় শিশু অতিক্রম করেছে কি না—এসব বিষয়ে। অনুসন্ধান করতে হবে ।
[3] তৃতীয় পর্যায় : শিশুকে বিভিন্ন ধরনের খেলার সামগ্রী দেওয়া হয় এবং দেখা হয় কী ধরনের সামগ্রী সে পছন্দ করে। তার পছন্দমতাে খেলার সামগ্রী তার বয়সানুযায়ী কি না, সামগ্রীগুলি সঠিকভাবে বিন্যস্ত হয়েছে কি না ইত্যাদির মাধ্যমে শিশুর মানসিক অসুস্থতার কারণ ও প্রকৃতি নির্ণয় করা হয়।
[4] চতুর্থ বা শেষ পর্যায় : শিশুকে তার পছন্দ অনুযায়ী খেলার জন্য উৎসাহিত করা হয়, যাতে তার অবদমিত আবেগ মুক্ত হতে পারে। পাশাপাশি শিশুর আচরণ পর্যবেক্ষণ করে তার মানসিক দ্বন্দ্বের কারণটি ধীরে ধীরে শিশুর কাছে উপস্থাপিত করতে হবে। এইভাবে শিশু একদিকে যেমন তার আবেগ-ভারসাম্য ফিরে পায়, অন্যদিকে তেমনই দ্বন্দ্বের কারণটি উদ্ঘাটিত হওয়ার ফলে মনােচিকিৎসক শিশুকে সুস্থ করে তুলতে পারেন।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।