“সেই জেলখানার দেয়াল চোখে দেখা যায় না।”—সেই জেলখানার বিস্তৃত বিবরণ দাও। সেই জেলখানার কয়েদিদের ঘানি ঘােরানাের কথা আলােচনা করাে। Mark 5 | Class 11
উত্তর:- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘কর্তার ভূত’ রচনায় একটি ভূতুড়ে জেলখানার কথা বলা হয়েছে। ভূতশাসিত সেই জেলখানার দারােগা হল ভূতের নায়েব। এই ভূতুড়ে জেলখানার পাঁচিল খালি চোখে দেখা যায় না। তাই সেই জেলে বন্দি দেশবাসীরা কিছুতেই বুঝে উঠতে পারে না যে, কীভাবে সে পাঁচিল ফুটো করে বাইরে বেরিয়ে আসা সম্ভব।
রূপকের আড়ালে অন্তর্নিহিত যে অর্থটি এখানে প্রকাশ পাচ্ছে তা হল, ধর্মতন্ত্রের ঘেরাটোপই হল ধর্মবন্দি অর্থাৎ ধর্মভীরু মানুষদের জেল-প্রাচীর। পুরােহিত বা যাজক শ্রেণি হল সে জেলখানার পাহারাদার। ধর্মতন্ত্রের বাঁধনটা সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষ খালি চোখে দেখতে পায় না বলেই তাকে অস্বীকার করে মুক্ত হবার উপায়টাও তাদের অজানা থাকে।
অন্যান্য জেলখানার মতাে ভূত-নিয়ন্ত্রিত কারাগারেও অপরাধীদের ঘানি ঘােরাতে হয়। তবে, অবিরাম ঘুরিয়েও সেখানকার ঘানি থেকে এক ছটাক তেলও বের হয় না। বের হয় কেবল ঘানি-ঘােরানাে মানুষের তেজ ও শক্তি।
ভুতুড়ে জেলখানার কয়েদিদের ঘানি ঘােরানাের রুপকের মধ্য দিয়ে লেখক ধর্মতন্ত্র-নির্দেশিত শ্রমের কথাই বলতে চেয়েছেন। ধর্মতন্ত্র-নির্দেশিত শ্রম অর্থাৎ ঈশ্বর-আরাধনা এবং ধর্মীয় ক্রিয়াকর্মের তেমন কোনাে আর্থিক মূল্য নেই যা সমাজের উন্নতিতে সাহায্য করবে।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।