শিক্ষাদানের মানােন্নয়ন সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশনের সুপারিশগুলি আলােচনা করাে। Class 12 | Education | 8 Marks
উত্তর:
শিক্ষাদানের মানােন্নয়ন সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশনের সুপারিশ
কমিশন উপলদ্ধি করেছিল কেবল প্রতিভাবান শিক্ষক নিয়ােগ করলেই চলবে না, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার সঠিক সংস্কারের জন্য আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মানােন্নয়ন করতে হবে। এর জন্য কমিশন কতকগুলি সুপারিশ লিপিবদ্ধ করে সেগুলি হল—
[1] বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইনটারমিডিয়েট স্তর বিলােপ: বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইনটারমিডিয়েট স্তরটির বিলােপ ঘটিয়ে, সেটিকে উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষাক্রমের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। শিক্ষার্থীরা উচ্চবিদ্যালয়ে 12 বড় শিক্ষাক্রম শেষ করলে তবেই বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে প্রবেশের ছাড়পত্র পায়।
[2] ইনটারমিডিয়েট মহাবিদ্যালয় স্থাপন; প্রতিটি রাজ্যে সংখ্যক উন্নতমানের ইনটারমিডিয়েট মহাবিদ্যালয় স্থাপনের জন্য কs অভিমত ব্যক্ত করে। কমিশনের মতে, নবনির্মিত ইনটারমিডি মহাবিদ্যালয়গুলিতে নবম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত অথবা ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদানের ব্যবস্থা থাকবে।
[3] বৃত্তিশিক্ষার ব্যবস্থা : সাধারণধর্মী শিক্ষার পাশাপাশি কমিশন দেশে বহু সংখ্যক বৃত্তিশিক্ষার প্রতিষ্ঠান স্থাপনের সুপারিশ করে। শিক্ষার্থীদের দশম শ্রেণি বা দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ শেষ করে ওইসব বৃত্তিশিক্ষার প্রতিষ্ঠান যাতে শিক্ষাগ্রহণের সুযােগ পায়, তার জন্য পরিকাঠামাে উন্নয়নের সুপারিশ করা হয়।
[4] রিফ্রেশার কোর্স প্রবর্তন: যেসব শিক্ষক-শিক্ষিকা উচ্চবিদ্যালয়ে ইনটারমিডিয়েট মহাবিদ্যালয়ে পাঠদানে নিযুক্ত থাকবেন, তাদের শিক্ষাগত যােগ্যতা সময়ােপযােগী করে তােলার জন্য কমিশন বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে রিফ্রেশার কোর্স (refresher course) প্রবর্তনের জন্য মূল্যবান সুপারিশ করে।
[5] শিক্ষার্থীসংখ্যা নির্ধারণ: কমিশন মহাবিদ্যালয়ে সর্বোচ্চ 1500 জন। এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বোচ্চ 3000 জন শিক্ষার্থী ভরতির সুপারিশ করে।
[6] কর্মদিবস নির্ধারণ : কমিশনের মতে, মহাবিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে শিখন-শিক্ষণ দিবস হবে বছরে কমপক্ষে 180 দিন পরীক্ষা ও অন্যান্য কর্মসূচির দিনগুলি এই সংখ্যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হবেনা | প্রতিটি শিক্ষাবর্ষকে তিনটি পর্যায়ে। (term) ভাগ করা হবে। প্রত্যেক পর্যায়ের স্থিতিকাল হবে 11 সপ্তাহ।
[7] মনােগ্রাহী পাঠদান: মহাবিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠদান। কৌশলকে শিক্ষার্থীদের কাছে মনােগ্রাহী করে তুলবার জন্য কমিশন। টিউটোরিয়াল ক্লাস, লিখন অনুশীলন, গ্রন্থাগারের কাজ প্রভৃতির সহায়তা গ্রহণের সুপারিশ করে৷ পাস ও অনার্স কোর্সের শিক্ষার্থীদের জন্য পৃথক টিউটোরিয়াল ক্লাসের ব্যবস্থা করতে হবে।
[8] গ্রন্থাগারগুলির উন্নতি বিধান করা; মহাবিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক-শিক্ষিকারা যাতে অবাধে প্রবেশ করতে পারে তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে। উপযুক্ত যােগ্যতাসম্পন্ন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত গ্রন্থাগার কর্মী নিয়ােগ করতে হবে!
[9] বীক্ষণাগারের উন্নয়ন: যেসব বিষয়ে তত্ত্বগত জ্ঞানের পাশাপাশি ব্যাবহারিক জ্ঞানের প্রয়ােজন হয়, সেই সমস্ত বিষয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণের কাজ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য বীক্ষণাগারের উন্নয়ন ঘটাতে হবে। এর জন্য কর্তৃপক্ষকে উপযুক্ত অর্থবরাদ্দের ব্যবস্থা করতে হবে।
[10] অন্যান্য সুপারিশ:
i. কমিশনের মতে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক নির্ধারিত কোনাে কোর্সের জন্য নির্দিষ্ট পাঠ্যপুস্তক থাকবে না শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন পুস্তক অধ্যয়নের মাধ্যমে জ্ঞান অর্জন করবে।
ii. শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে শ্রেণিকক্ষে নিয়মিত হাজির থাকা বাধ্যতামূলক হবে।
iii. কেবল প্রাইভেট শিক্ষার্থীরা মহাবিদ্যালয়ে বা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ পরীক্ষা (public examination) দানের সুযােগ লাভ করবে।
IV. যারা কোনাে সংস্থায় চাকুরিরত, তাদের জন্য পরীক্ষা- মূলকভজার সান্ধ্যকালীন মহাবিদ্যালয় খােলা যেতে পারে।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।