শিক্ষার্থীর আচরণগত সমস্যার প্রতিকারে পিতা-মাতার ভূমিকা উল্লেখ করাে।

শিক্ষার্থীর আচরণগত সমস্যার প্রতিকারে পিতা-মাতার ভূমিকা উল্লেখ করাে। Class 12 | Education (ভিন্ন ধরনের সক্ষমতার শিশুদের শিক্ষা) 4 Marks

উত্তর:-

শিক্ষার্থীর আচরণগত সমস্যার প্রতিকারে পিতা-মাতার ভুমিকা

শিশু যখন নতুন নতুন অভিযােজনের সম্মুখীন হয়, তখন অনেক সময় তার মধ্যে নানা ধরনের সমস্যমূলক আচরণ লক্ষ করা যায়৷ এইসব আচরণগত সমস্যার প্রতিকারে শিশুর পিতা-মাতা এবং পরামর্শদাতা—উভয়ের ভূমিকাই যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। শিশুর প্রথম আশ্রয়স্থল তার গৃহ-পরিবেশ, যেখানে বাবা-মায়ের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। “প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরােধ ভালাে” (Prevention is better than cure)-এর কথা মাথায় রেখে শিশুর মধ্যে যাতে কোনােভাবে সমস্যামূলক আচরণ দেখা দিতে না পারে, সে ব্যাপারে বাবা-মাকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। এর মধ্যে উল্লেখযােগ্য হল— 

[1] শিশুর মৌলিক চাহিদাপূরণ : শিশুর মৌলিক চাহিদা, যেমন— ভালােবাসার চাহিদা, দৈহিক ও মানসিক নিরাপত্তার চাহিদা, স্বাধীনতার। চাহিদা ইত্যাদি পূরণের প্রতি লক্ষ রাখতে হবে। বাবা-মাকে শিশুর ন্যূনতম বস্তুগত চাহিদা মেটাতে হবে।

[2] বাবা-মায়ের মধ্যে হার্দ্য সম্পর্ক: বাবা-মায়ের মধ্যে হার্দ্য সম্পর্ক শিশুর সুস্থ মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। মা বাবার মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক যদি বিদ্বেষমূলক হয়, সেক্ষেত্রে শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

[3] নৈতিক আদর্শ: বাবা-মায়ের আচরণে নৈতিকতা শিশুর নৈতিক বিকাশে বিশেষ প্রভাব বিস্তার করে। তাই সন্তানের কাছ থেকে মাবাবা যে ধরনের নৈতিক আচরণ প্রত্যাশা করবেন, তাঁদের মধ্যেও যেন ওই ধরনের। নৈতিক আচরণ প্রকাশ পায়।

[4] শৃঙ্খলা রক্ষা : শৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে যেমন স্বেচ্ছাচারিতাকে প্রশ্রয় দেওয়া ঠিক নয়, তেমনি কঠোর শৃঙ্খলাও শিশুর সুস্থ মানসিক স্বাস্থ্যের পক্ষে

ক্ষতিকারক উভয়ের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। শিশুকে শাসন। র ব্যাপারে বাবা-মায়ের কতকগুলি নিয়ম মেনে চলা উচিত যেমন –

i) রাগের বশবর্তী হয়ে শিশুকে শাসন করা উচিত নয়। 

ii) শিশুকে তার সামর্থ্য এবং বয়স অনুযায়ী বােঝাতে হবে। 

iii) বাবা-মায়ের একজন যখন শিশুকে শাসন করছেন, তখন অন্যজন যেন শিশুর পক্ষ অবলম্বন না করেন। 

[5] শিক্ষার্থীর বয়ঃসন্ধিক্ষণে বাবা-মায়ের বিশেষ ভূমিকা : বয়ঃসন্ধিক্ষণে সক্ষার্থীর জীবনে শারীরিক, মানসিক, সামাজিক এবং প্রাক্ষোভিকপরিবর্তন দখা দেয়। অধিকাংশ শিক্ষার্থী এই হঠাৎ পরিবর্তনের সঙ্গে অভিযােজনে সক্ষম হয় না, যার ফলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। মা বাবার দায়িত্ব সল বয়ঃসন্ধিক্ষণের পরিবর্তনগুলির সম্পর্কে সন্তানদের অবহিত করা, এই এক্ষেত্রে সন্তানদের করণীয় সম্পর্কে পরামর্শ দান।

উপরােক্ত প্রতিরােধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া সত্ত্বেও শিশু বা শিক্ষার্থীর মধ্যে যদি কোনাে সমস্যামূলক আচরণ দেখা যায়, সেক্ষেত্রে বাবা-মা কোনােরকম অবহেলা না করে মনােচিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করবেন।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment