শিক্ষাক্ষেত্রে সমস্যামূলক আচরণ হিসেবে স্কুল পালানাের লক্ষণগুলি কী? এই আচরণের কারণ ও প্রতিকারের উপায় লেখাে।

শিক্ষাক্ষেত্রে সমস্যামূলক আচরণ হিসেবে স্কুল পালানাের লক্ষণগুলি কী? এই আচরণের কারণ ও প্রতিকারের উপায় লেখাে। Class 12 | Education (ভিন্ন ধরনের সক্ষমতার শিশুদের শিক্ষা) 4 Marks

উত্তর :

শিক্ষাক্ষেত্রে সমস্যামূলক আচরণ হিসেবে স্কুল পালানোর লক্ষণ প্রাক-অনুমতি ছাড়া নির্দিষ্ট সময়ের আগে বিদ্যালয় ত্যাগ করাকে স্কুল পালানাে বলে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটি সমস্যামূলক আচরণের পর্যায়ে না পড়লেও, কোনাে কোনাে ক্ষেত্রে এটিকে সমস্যামূলক শিক্ষার্থীর লক্ষণ হিসেবে গণ্য করা হয়। বিদ্যালয়ের পরিবেশ, শিক্ষক, বিদ্যালয়ের নিয়ম-নীতি ইত্যাদির সঙ্গে সংগতির অভাব ঘটলে এই ধরনের আচরণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেখা যায়, যা বিদ্যালয়ের শৃঙ্খলায় সমস্যা সৃষ্টি করে।

স্কুল পালানাের কারণ

সাধারণত যেসব কারণে শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্কুল পালানাের প্রবণতা দেখা যায়। তা নীচে উল্লেখ করা হল—

[1] পাঠদান পদ্ধতিগত ত্রুটি: অবৈজ্ঞানিক ও ত্রুটিপূর্ণ শিক্ষাদান পদ্ধতি শিক্ষার্থীর মধ্যে পাঠ্যবিষয়ের প্রতি অনিচ্ছার উদ্রেক করতে পারে এবং শ্রেণিকক্ষে সে উপস্থিত থাকতে চায় না। 

[2] শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত সামর্থ্যভিত্তিক শিক্ষাদানের অভাব: মেধাবী ও প্রতিভাবান শিক্ষার্থীদের কাছে গতানুগতিক পুথিগত শিক্ষা বিরক্তির কারণ হয় এবং তারা শ্রেণিকক্ষে থাকতে চায় না। অপরদিকে, অল্পবুদ্ধিসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের কাছে শ্রেণিকক্ষের পঠনপাঠন দুরূহ বলে মনে হয় এবং সে ক্লাস থেকে পালিয়ে যেতে চায়। 

[3] অমনস্তাত্ত্বিক শৃঙ্খলা এবং শিক্ষকের নির্মম আচরণ : বিদ্যালয়ের কঠোর শৃঙ্খলা, কোনাে কোনাে শিক্ষকের নির্মম আচরণ ও শাস্তিদানের ব্যবস্থা শিশুর মনে ভীতির সঞ্চার করে, যা তাকে বিদ্যালয় থেকে পালিয়ে যেতে প্ররােচিত করে। 

[4] অন্যান্য কারণ : স্কুল পালানাের উপযুক্ত কারণগুলি ছাড়াও আরও নানারকমের কারণ থাকতে পারে। যেমন—সহপাঠীদের উপহাস, শ্রেণির কাজ না করা, দল বা গ্যাং-এর সঙ্গে সিনেমা যাওয়া বা অবাঞ্ছিত কাজ করা ইত্যাদি। স্কুল পালানাের প্রতিকারের উপায় হয়ে উপায় এই ধরনের আচরণের প্রতি প্রথম থেকেই দৃষ্টি দেওয়া প্রয়ােজন। অন্যথায় শিক্ষার্থী কেবলমাত্র পারদর্শিতার ক্ষেত্রেই পিছিয়ে পড়ে না, পরবর্তী সময়ে ব্যক্তি ও সমাজজীবনেও বিভিন্ন ধরনের সমস্যার কারণ হয়। 

[1] মনােবিজ্ঞানসম্মত শিক্ষাপদ্ধতি : এই ধরনের আচরণের প্রতিকারের জন্য প্রয়ােজন হল মনােবিজ্ঞানসম্মত শিক্ষাপদ্ধতির সাহায্যে পাঠ্য বিষয়কে শিক্ষার্থীর কাছে আকর্ষণীয় করে তােলা। 

[2] আনন্দদায়ক বিদ্যালয় পরিবেশ : বিদ্যালয় যাতে শিক্ষার্থীর কাছে ‘আনন্দ নিকেতন’ হয় সেই দিকে দৃষ্টি দেওয়া প্রয়ােজন। 

[3] শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকরণ : শ্রেণিবিন্যাসের ক্ষেত্রে যথাসম্ভব সমবুদ্ধিসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিভাগ গঠন করতে হবে

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment