স্ত্রীশিক্ষা প্রসারে কোঠারি কমিশনের অভিমত কী? সামাজিক, নৈতিক ও আধ্যাত্মিক মূল্যবােধ গঠনে কোঠারি কমিশনের সুপারিশ ব্যক্ত করাে।

স্ত্রীশিক্ষা প্রসারে কোঠারি কমিশনের অভিমত কী? সামাজিক, নৈতিক ও আধ্যাত্মিক মূল্যবােধ গঠনে কোঠারি কমিশনের সুপারিশ ব্যক্ত করাে। Class 12 | Education (কোঠারি কমিশন) | 8 Marks

উত্তর:-

স্ত্রীশিক্ষা প্রসারে কোঠারি কমিশনের অভিমত 

কোঠারি কমিশন লক্ষ করেছে যে, মেয়েদের শিক্ষাগ্রহণের হার ছেলেদের তুলনায় খুবই কম। তাই নিম্নমাধ্যমিক স্তরে মেয়েদের শিক্ষার প্রতি কমিশন বিশেষ গুরুত্ব দেয়। স্ত্রীশিক্ষা প্রসারে কমিশনের অভিমত উল্লেখ করা হল

[1] পৃথক বিদ্যালয় গঠন: কমিশন মেয়েদের জন্য পৃথক বিদ্যালয় পড়ার সুপারিশ করে। কমিশন আরও সুপারিশ করে যে, যদি আর্থিক কারণে বা নানাভাবে মেয়েদের জন্য পৃথক বিদ্যালয় নির্মাণ করা না যায়, তাহলে বিদ্যালয়ে কিছু শিক্ষিকা ও মহিলা শিক্ষাকর্মীর ব্যবস্থা করতে হবে।

[2] ছাত্রীনিবাস গঠন: মেয়েদের শিক্ষার উন্নতি করার জন্য ছাত্রীনিবাসের ব্যবস্থা করতে হবে। যেসব ছাত্রীর বাড়ি বিদ্যালয় থেকে অনেক দূরে, তারা ছাত্রীনিবাসে থেকে পড়াশােনা করবে। 

[3] বৃত্তির ব্যবস্থা: অধিক সংখ্যক ছাত্রীকে শিক্ষায় আগ্রহী করার জন্য বৃত্তি বা স্কলারশিপের ব্যবস্থা করতে হবে।

[4] আংশিক সময়ের শিক্ষা: কমিশন মেয়েদের জন্য আংশিক সময়ের শিক্ষারও সুপারিশ করেছে। পুরাে সময়ের শিক্ষাগ্রহণ করতে না পারা মহিলাদের জন্য আংশিক সময়ের শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। 

[5] বৃত্তিমুখী শিক্ষা: যেসব মেয়েরা আর্থিক দুরবস্থার কারণে মাধ্যমিক শিক্ষা শেষের আগেই বৃত্তিমুখী শিক্ষা গ্রহণে আগ্রহী হয়, তাদের জন্য বৃত্তিমুখী শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। 

সামাজিক, নৈতিক ও আধ্যাত্মিক মূল্যবোধ গঠনে কমিশনের সুপারিশ 

সামাজিক, নৈতিক ও আধ্যাত্মিক মূল্যবােধের বিকাশে শিক্ষাব্যবস্থাকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। এজন্য প্রয়ােজন হল— 

[1] রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা: রাধাকৃষ্ণণ কমিশন ও ধর্মীয় ও নৈতিক উপদেষ্টা কমিশনের সুপারিশ মতাে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারকে সমস্ত সরকারি ও সাহায্যপ্রাপ্ত বিদ্যালয়ে সামাজিক, নৈতিক ও আধ্যাত্মিক মূল্যবােধ সম্পর্কিত বিষয়ে শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। বেসরকারি বিদ্যালয়গুলি এই ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আশা করা যায়। 

[2] নির্দিষ্ট সময়তালিকা: এই বিষয়ে শিক্ষাদানের জন্য বিদ্যালয়ের সময়তালিকায় প্রতি সপ্তাহে কয়েকটি পিরিয়ড বরাদ্দ থাকবে, তবে এর জন্য পৃথক শিক্ষক নিয়ােগের প্রয়ােজন নেই। সহ শিক্ষকগণই এই দায়িত্ব পালন করবেন। এর জন্য বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী শিক্ষকগণকে অগ্রাধিকার দেওয়া প্রয়ােজন।

[3] ধর্ম সম্পর্কে শিক্ষা: বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক ধর্ম বিভাগ বিভিন্ন ধর্মের মূল নীতিসমূহের ওপর ভিত্তি করে কীভাবে কার্যকরী শিক্ষা দেওয়া যায়, সেই উদ্দেশ্যে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য পুস্তক রচনার ব্যবস্থা করবেন। বহু ধর্মাবলম্বী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য প্রয়ােজন এমন শিক্ষা, যার সাহায্যে অন্য ধর্মের প্রতি সহিষুতা এবং সমস্ত ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধার মনােভাব তৈরি করা যায়। এর ফলে সমস্ত নাগরিকগণ পারস্পরিক প্রীতির সম্পর্ক নিয়ে বসবাস করতে পারে। এর জন্য সমস্ত প্রধান ধর্মের মূলনীতি ও প্রয়ােজনীয় তথ্য নিয়ে গ্রন্থ রচনা করতে হবে। সমগ্র দেশে বিদ্যালয় এবং কলেজে এই বিষয়ে একই শিক্ষা দিলে সব ধর্মের মৌলিক আদর্শ সম্পর্কে শিক্ষার্থীরা শ্রদ্ধাবান হবে।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment