সমস্যা-সমাধান শিখন কৌশলের প্রকারভেদ উল্লেখ করাে । প্রচেষ্টা ও ভুল তত্ত্ব সম্পর্কিত থর্নডাইকের পরীক্ষাটি লেখাে ।

সমস্যা-সমাধান শিখন কৌশলের প্রকারভেদ উল্লেখ করাে । প্রচেষ্টা ও ভুল তত্ত্ব সম্পর্কিত থর্নডাইকের পরীক্ষাটি লেখাে । Class 12 | Education (শিক্ষার কৌশল) | 8 Marks

উত্তর:-

সমস্যা সমাধান শিখন কৌশলের প্রকারভেদ

কোনাে ব্যক্তি কীভাবে সমস্যা সমাধান করে, সে সম্পর্কে দুটি ব্যাখ্যা আছে— 

[1] প্রচেষ্টা ও ভুল শিখন কৌশল: কেউ কেউ মনে করেন, প্রচেষ্টা ও ভুলের মাধ্যমে ক্রমশ সমস্যার সমাধান হয়। ভুল প্রতিক্রিয়াগুলি বাতিল করে, সঠিক প্রতিক্রিয়াগুলি একত্র করে ব্যক্তি সমস্যার সমাধান করে। 

[2] অন্তর্দৃষ্টি শিখন কৌশল: অনেকের মতে, সমস্যা সমাধান অন্তর্দৃষ্টির মাধ্যমে ঘটে।

প্রচেষ্ট ও ভুলের তত্ব সম্পর্কিত থর্নডাইকের পরীক্ষা

থর্নডাইকের মতে, উদ্দীপক ও প্রতিক্রিয়ার মধ্যে নির্ভুল সংযােগস্থাপনই হল শিখন। তিনি বিভিন্ন ধরনের ইতর প্রাণীর ওপর প্রচেষ্টা ও ভুলের মাধ্যমে শিখনের পরীক্ষা করেন। এখানে বিড়াল ও খাঁচার পরীক্ষাটি বর্ণনা করা হল

[1] পরীক্ষা: একটি বিড়ালকে খাঁচার মধ্যে ঢােকানাে হয়। খাঁচাটিতে একটি দরজা ছিল এবং সেটি ছিটকিনি দিয়ে আটকানাে ছিল। ছিটকিনিতে এমন ব্যবস্থা ছিল যাতে খাঁচার নির্দিষ্ট স্থানে চাপ পড়লেই সেটি খুলে যায়। একটি ক্ষুধার্ত বিড়ালকে ওই খাঁচার ভিতরে প্রবেশ করানাে হয়। খাঁচার বাইরে রাখা হয় এক টুকরাে মাংস। এই অবস্থায় বিড়ালের প্রতিক্রিয়ার ওপর নজর রাখা হয় ক্ষুধার্ত বিড়ালটি প্রথমে খাঁচা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য উদ্দেশ্যহীন ও বিশৃঙ্খলভাবে খাঁচার মধ্যে ছােটোছুটি করতে থাকে। বেশ কিছুক্ষণ ধরে। বিফল চেষ্টার পর হঠাৎ তার পা নির্দিষ্ট স্থানে পড়ামাত্র খাচার দরজা খুলে যায়। এবং সে খাঁচার বাইরে এসে খাবার খায়। দ্বিতীয় দিনেও থর্নডাইক একই পরীক্ষা করেন। তিনি দেখেন যে আগের দিনের মতােই বিড়ালটি লক্ষ্যহীনভাবে ছােটাছুটি করছে। তবে এবার প্রথম দিনের থেকে কম চেষ্টা ও সময়ে বিড়ালটি খাঁচা থেকে বেরােতে সক্ষম হয়। 

[2] পর্যবেক্ষণ: এইভাবে পরপর কিছুদিন পরীক্ষা চালিয়ে থর্নডাইক লক্ষ করেন, যত দিন যাচ্ছে নির্দিষ্ট স্থানে যেখানে চাপ পড়লে ছিটকিনি খুলে যায়, বিড়ালের প্রচেষ্টাগুলির সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ ভুল প্রচেষ্টাগুলি ক্রমশ বাতিল হচ্ছে এবং সঠিক প্রচেষ্টা ক্রমশ নির্বাচিত হচ্ছে। এইভাবে এমন একদিন এল যখন বিড়ালটিকে খাঁচায় ঢুকিয়ে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সে নির্দিষ্ট স্থানে চাপ দিয়ে ছিটকিনি এবং দরজা খুলে বাইরে বেরিয়ে এল এবং খাবার খেল। এর ফলে বলা যায়, এই পদ্ধতির মাধ্যমে বিড়ালটি খাবার নেওয়ার বিষয়টিকে আয়ত্ত করে। 

[3] সিদ্ধান্ত: এই পরীক্ষা থেকে থর্নডাইক সিদ্ধান্তে আসেন যে, বিড়ালটি প্রচেষ্টা ও ভুলের সাহায্যে উদ্দীপক ও প্রতিক্রিয়ার মধ্যে সরাসরি সম্পর্কস্থাপনে সক্ষম হয়েছে এবং তার শিখন সম্পূর্ণ হয়েছে।

Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।

Leave a Comment