সুযােগের সমতাবিধান বলতে কী বােঝায়? শিক্ষায় সুযােগের সমতাবিধানের জন্য করণীয় বিষয়গুলি উল্লেখ করাে। 2+6 Class 12 | Education (শিক্ষাবিজ্ঞান) | 8 Marks
উত্তর:-
সুযােগের সমতাবিধান : সুযােগের সমতাবিধান বলতে বােঝায় জনগণের সমান অধিকার অর্জন করা | যে সমাজে জনগণের সমান অধিকার আছে এবং ব্যক্তিগত বিকাশে কোনাে ধরনের বাধা নেই, সেই সমাজে ‘সুযােগের সমতাবিধান’ রয়েছে বলে মনে করা হয়।
গণতান্ত্রিক শিক্ষার লক্ষ্য হল প্রতিটি ব্যক্তির ব্যক্তিত্বের পরিপূর্ণ ও সর্বাঙ্গীণ বিকাশসাধন। শিক্ষায় সুযােগের সমতা বিধানের মূল কথা হল— রাষ্ট্রীয় খরচে সকলের প্রয়ােজনমতাে সর্বোত্তম শিক্ষার সুযােগ সৃষ্টি করা। মােট কথা দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে যাতে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, সম্প্রদায় নির্বিশেষে এদেশের প্রতিটি শিশু ও ব্যক্তি শিক্ষাগ্রহণের সমান সুযােগ লাভ করতে পারে।
শিক্ষায় সুযােগের সমতাবিধানের জন্য করণীয় বিষয়সমূহ : শিক্ষায় সুযােগের সমতাবিধানের জন্য অর্থাৎ, শিক্ষায় সমসুযােগ স্থাপনের জন্য যেসব উপায় বা পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে, সেগুলি হল —
[1] শিক্ষার জাতীয়করণ; শিক্ষায় সুযােগের সমতাবিধানের জন্য শিক্ষার জাতীয়করণের ব্যবস্থাগ্রহণে উদ্যোগী হতে হবে।
[2] সাধারণ বিদ্যালয় ব্যবস্থার বাস্তবায়ন: কোঠারি কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী সাধারণ বিদ্যালয় ব্যবস্থাকে যথাযথভাবে বাস্তবায়নের ব্যবস্থা করতে হবে। এর জন্য দেশের প্রতিটি বিদ্যালয়ের দরজা জাতিধর্মবর্ণনির্বিশেষে সবার জন্য উন্মুক্ত রাখতে হবে। মেধার ভিত্তিতে শিক্ষার্থীকে ভরতি করার ব্যবস্থা করতে হবে। দেশের সব প্রতিষ্ঠানের মানকে সমান গুরুত্ব দিতে হবে।
[3] অসাম্য দুরীকরণ: গ্রামাঞ্চলের এবং শহরাঞ্চলের শিক্ষার মধ্যে যে অসাম্য রয়েছে, তা যতদূর সম্ভব কমাতে হবে।
[4] সুযােগসুবিধার তাভাব দুরীকরণ : দেশের সকল রাজ্যের শিক্ষা একপ্রকার নয়। বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে শিক্ষায় সুযােগসুবিধার ক্ষেত্রে যে অভাব রয়েছে, তা দূরীকরণের জন্য প্রয়ােজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
[5] বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের শিক্ষা: দেশের বিভিন্ন অংশে যেসব বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু রয়েছে, তাদের জন্য ব্যাপকভাবে বিশেষ শিক্ষার সুযােগ সৃষ্টি করতে হবে।
[6] অনগ্রসর সম্প্রদায়ের শিক্ষা: বিভিন্ন অনগ্রসর শ্রেণির মানুষদের জন্য যেমন SC, ST এবং OBC-দের জন্য শিক্ষার যাবতীয় সুযােগসুবিধার ব্যবস্থা করতে হবে।
[7] সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শিক্ষা: ধর্মগত এবং ভাষাগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের শিক্ষার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
[8] নারীশিক্ষার বিকাশ : শিক্ষাক্ষেত্রে নারীরা যাতে পর্যাপ্ত সুযােগসুবিধা ভােগ করতে পারে, তারজন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
[9] দৈহিক ও মানসিক প্রতিবন্ধীদের শিক্ষা: দৈহিক ও মানসিক দিক থেকে যারা প্রতিবন্ধী, তাদের জন্যও শিক্ষাক্ষেত্রে উপযুক্ত সুযােগ সৃষ্টি করতে হবে।
[10] বৈষম্য দূরীকরণের ব্যবস্থা : লিঙ্গগত, জাতিগত এবং শ্রেণিগত বৈষম্য দূর করে সমাজের প্রত্যেক সম্প্রদায়ের মানুষ যাতে শিক্ষাক্ষেত্রে সমান সুযোগ পায়, তার ব্যবস্থা করতে হবে।
Note: এই আর্টিকেলের ব্যাপারে তোমার মতামত জানাতে নীচে দেওয়া কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করতে পারো। ধন্যবাদ।